আমিনুল ইসলাম রানা, গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী)

  ২২ জানুয়ারি, ২০২৩

হাত বাড়ালেই মিলছে মাদক

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়ার বিভিন্ন এলাকায় প্রকাশ্যে চলে মাদকের কেনাবেচা। এতে সহজেই মাদকাসক্ত হয়ে পড়ছে যুবসমাজ। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা নিয়মিত অভিযান চালালেও কমছে না মাদক কারবার।

দৌলতদিয়া যৌনপল্লী ও এর সংলগ্ন পোড়াভিটা পল্লী এলাকা মাদকের বাজার হিসেবে পরিচিত। এখানে প্রকাশ্যেই বিক্রি হয় মাদকদ্রব্য। এসব এলাকায় প্রতিনিয়ত চলে মাদকবিরোধী অভিযানও। অভিযানে কিছু মাদক বিক্রেতা গ্রেপ্তার হলেও রহস্যজনক কারণে ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকেন মূলহোতারা। এ কারণে এই এলাকায় মাদকের দৌরাত্ম্য কমছে না। তবে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের দাবি, দৌলতদিয়ায় যৌনপল্লী ও ফেরিঘাট থাকার কারণে এ এলাকায় মাদকের প্রসার ঘটছে বেশি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গোয়ালন্দ পৌর শহর থেকে শুরু করে প্রত্যন্ত চরাঞ্চলেও পৌঁছে গেছে মাদক। দৌলতদিয়া যৌনপল্লী ও ফেরিঘাট ছাড়াও চলছে মাদকের রমরমা কারবার। সেখানে হাত বাড়ালেই সহজে মিলছে হেরোইন, ইয়াবা, মদ, গাঁজা, ফেনসিডিলসহ বিভিন্ন মাদকদ্রব্য। অভিযোগ রয়েছে, গোয়ালন্দে মাদকের বিশাল সাম্রাজ্য গড়ে তোলার অন্তরালে রয়েছে রাজনৈতিক দলের কিছু নেতা ও জনপ্রতিনিধি। এর মধ্যে স্থানীয় দৌলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান ও সাবেক কয়েকজন সদস্যও রয়েছেন। তাদের অনেকে দৌলতদিয়া যৌনপল্লীর বাড়িওয়ালা। এলাকার প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছে না।

উপজেলার উজানচরের বাসিন্দা এক মাদকসেবী যুবক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আগে ইয়াবা কিনতে প্রতিদিন আমি দৌলতদিয়া পল্লীতে যেতাম। এখন আর আমাদের সেখানে যেতে হয় না। এলাকার যে প্রান্তেই থাকি, ফোন করলেই বিক্রেতারা মোটরসাইকেলে করে চাহিদা মতো মাদকদ্রব্য পৌঁছে দিয়ে যায়।

গোয়ালন্দ উপজেলা মাদক প্রতিরোধ কমিটির আহ্বায়ক ও গোয়ালন্দ রাবেয়া ইদ্রিস মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল কাদের শেখ বলেন, গোয়ালন্দে ব্যাপকহারে মাদকদ্রব্য ছড়িয়ে পড়ায় মাদকাসক্তের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। এতে সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তায় অভিভাবকসহ এলাকার সচেতন মহল। বিভিন্ন সময়ে মাদকবিরোধী মানববন্ধনসহ নানা কর্মসূচি আমরা পালন করছি; কিন্তু তাতে কোনো কাজ হচ্ছে না।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর রাজবাড়ী জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিদর্শক মোহাম্মদ শের আলম বলেন, নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছি। বিভিন্ন মাদকদ্রব্য বিক্রি ও সেবনের দায়ে হাতেনাতে আটক করা হয়। পরে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়ে তাদের রাজবাড়ী জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।

গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি স্বপন কুমার মজুমদার বলেন, এলাকায় মাদকের বিরুদ্ধে থানা পুলিশের নিয়মিত অভিযান অব্যাহত রয়েছে। প্রতিনিয়ত গোয়ালন্দ ঘাট থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে আটক করে জেলহাজতে প্রের করা হচ্ছে। তারা সবাই পেশাদার মাদক কারবারি।

গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন বলেন, দৌলতদিয়া যৌনপল্লীতে নারী পাচার ও মাদক কারবারের সঙ্গে স্থানীয় কিছু জনপ্রতিনিধির যুক্ত থাকার বিষয়টি লজ্জাজনক। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে খতিয়ে দেখা হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close