হামিদুর রহমান, মাধবপুর (হবিগঞ্জ)

  ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২২

মাধবপুরের অবৈধভাবে বালু উত্তোলন ও বিক্রি

সরকার হারাচ্ছে রাজস্ব * ধ্বংস হচ্ছে ফসলি জমি

হবিগঞ্জের মাধবপুরে ১০ টিরও বেশি স্থান থেকে চলছে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন ও বিক্রি। কোন ধরনের অনুমোদন ছাড়াই শক্তিশালী ড্রেজার মেশিন দিয়ে উত্তোলন হচ্ছে মাটি বালু। প্রতিদিন ট্রাক-ট্রাক্টর যোগে প্রকাশ্যে বিক্রি করা হচ্ছে এসব বালু। অবৈধ এ কার্যক্রমে একদিকে সরকার হারাচ্ছে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব, অন্যদিকে ধ্বংস হচ্ছে শত শত বিঘা উর্বর ফসলি জমি ও পাহাড়। চোরাই পথে বালু মাটি উত্তোলন ও বিক্রয়কারী সিন্ডিকেটদের খপ্পরে পড়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে বৈধ বালু মহাল ইজারাদাররা।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মঈনুল ইসলাম মঈন ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আলাউদ্দিন চৌমুহনী ইউনিয়নের রাবার ড্যাম, বহরা ইউনিয়নের ঘিলাতলী আখড়াসহ গত ২৫ জুলাই অভিযান চালিয়ে অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ করে দিলেও উপজেলার উত্তরাঞ্চলের নয়াপাড়া ও বাঘাসুরা অবৈধ বালু মাটি উত্তোলন কারীরা এখনো বহাল তবিয়তে।

১১ নং বাঘাসুরা ইউনিয়নের বাখরনগর, কালিকাপুর, সুন্দরপুর, শাহজিবাজার রাবার বাগান, রঘুনন্দন ফরেস্ট এলাকায় চলছে অনুমোদনহীন বালু উত্তোলন ও বিক্রির মহোৎসব। গত ৮ জুন বুধবার রাতে মাধবপুর থানার এস আই আব্দুল ওয়াহেদ গাজী সুন্দরপুর এলাকা থেকে চোরাই বালুভর্তি ঢাকা মেট্রো ট-১৮-৩৬৭৮ ট্রাক আটক করে। এ সময় শিপন মিয়া পুলিশের হাতে ধরা পড়লেও পলাতক রয়ে যায় সুন্দরপুর গ্রামের মৃত আছকির মিয়ার পুত্র হেলাল মিয়া (৩৮)। বালু চুরি করে উত্তোলন বিপননের অপরাধে মাধবপুর থানায় মামলা রুজু হলেও বালু চোরদের দমানো সম্ভব হচ্ছে না। আরো বেপরোয়াভাবে দরগা গেইট কাজল এবং সুন্দরপুর এলাকায় হেলাল বালু উত্তোলন ও বিপনন কার্যক্রম চালাচ্ছে।

জানা গেছে, মাধবপুর উপজেলায় তিনটি সিলিকা বালু মহাল রয়েছে। এগুলো হচ্ছে মনতলা, মনতলা চৌমুহনী ও রসুলপুর শাহজাহানপুর। গত বছরের ২৮ এপ্রিল মনতলা চৌমুহনী রসুলপুর সিলিকা বালু দুটি ছয় কোটি ৭৬ লাখ ৭৩ হাজার ৭৩৩ টাকা রাজস্ব দিয়ে ইজারা নেন স্থানীয় খান কনস্ট্রাকশন ও আলফাজ এন্টারপ্রাইজ নামে দুটি প্রতিষ্ঠান। তাদের ইজারার মেয়াদ আগামী ২০২৩ সালের ১৫ মে পর্যন্ত।

যোগাযোগ করা হলে হবিগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) বিজেন ব্যানার্জি বলেন, চোরাই মাটি বালুর বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারি কমিশনার (ভূমি) জন্য বলেছি। যদি কোন অবৈধ বালু, মাটি ব্যাবসায়ী বা সরবরাহকারি পাওয়া যায় অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এদিকে খাঁন কনস্ট্রকশনের স্বত্তাধিকারী ও জগদীশপুর ইউপি চেয়ারম্যান মাসুদ খাঁন বলেন, সরকারী কোষাগারে চার কোটি তিন লক্ষ ৩১ হাজার ৩৪৩ টাকা রাজস্ব দিয়ে তিনি দুবছরের জন্য রসুলপুর বালু মহালটি ইজারা নেন। এখন পর্যন্ত ইজারা মূল্যের ২০ শতাংশ টাকাও পাননি। এ কারনে বিপুল পরিমান অর্থ লোকসানের মুখোমুখি হয়ে পড়েছেন। রাজস্ব না দিয়ে যে যার মতো করে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে বিক্রি করায় বৈধ ব্যবসায়ীক বিরাট ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close