চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি

  ২১ নভেম্বর, ২০১৯

চাঁপাইয়ে ১০ টাকা কেজির চাল বিতরণে অনিয়ম

খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল বিক্রিতে দুর্নীতি পাওয়ায় ডিলারশিপ বাতিল

চাঁপাইনবাবগঞ্জে হতদরিদ্র পরিবারের মাঝে সরকারের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ১০ কেজি দরে চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। জেলার সদর উপজেলায় উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা ইউনিয়নে এই অনিয়মের প্রমাণ পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক।

এদিকে খাদ্যবান্ধব কমিটির ইউনিয়ন সভাপতি ইউপি চেয়ারম্যান তরিকুল ইসলাম ও ইউনিয়ন সচিবের বিরুদ্ধে কার্ড বিতরণে স্বজনপ্রীতি, ইউপি সদস্য কর্তৃক স্বচ্ছল ব্যক্তিদের নামে কার্ড প্রদান ও কালোবাজারে চাল বিক্রিসহ নানা অভিযোগ রয়েছে।

খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল বিক্রিতে অনিয়ম-দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়ায় আবদুল্লাহ আল মামুন নামে এক ডিলারের ডিলারশিপ বাতিল করে অন্য একজনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্ত ডিলারের আওতায় ১ হাজার ৩০ কার্ডধারির মধ্যে মাত্র ৪৪৮ জন চাল সংগ্রহ করেছেন। ৫৮২ বস্তা চাল বিতরণ হয়নি। এদের মধ্যে ২৩৬ জন হতদরিদ্র চাল না পাওয়ার অভিযোগ করেছেন। এতে স্বচ্ছতা ফিরিয়ে আনতে হতদরিদ্রদের তালিকা সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে জেলা প্রশাসন।

খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় ৫০ লাখ দরিদ্র পরিবারের মধ্যে ১০ টাকা কেজির চাল বিতরণ কর্মসূচি চালু করে সরকার। প্রায় ৩৬ টাকা কেজি দরে চাল ক্রয় করে ১০ টাকা কেজি দরে চাল বিতরণ করে আসছে।

প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, হতদরিদ্রদের জন্য এই উদ্যোগকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে বালিয়াডাঙ্গা ইউনিয়নের খাদ্যবান্ধব কমিটি। এসব চালের বড় একটি অংশই চলে যাচ্ছে বিত্তবানদের কাছে। রাজনৈতিক প্রভাবশালী নেতাকর্মী, চাকরিজীবিসহ আর্থিকভাবে স্বচ্ছলদের নামে চাল উঠিয়ে কালোবাজারে বিক্রি করেছেন। সম্প্রতি স্থানীয় প্রশাসনের তদারকির কারণে প্রভাবশালী নেতাকর্মী, চাকরিজীবীসহ আর্থিকভাবে সচ্ছলরা চাল সংগ্রহ করেনি। ফলে চলতি সময়ে ৫৮২ বস্তা চাল অবিক্রীত রয়েছে। এছাড়া অভিযুক্ত ডিলার ও খাদ্যবান্ধব কমিটির বিরুদ্ধে গরিবের চাল বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে। বঞ্চিত হয়েছে অতিদরিদ্রদের বড় অংশ।

স্থানীয় প্রশাসন অভিযান চালিয়ে অনিয়মের অভিযোগে চালসহ ইউপি চেয়ারম্যান মো. তরিকুল ইসলাম ও ডিলার আবদুল্লাহ আল মামুন জর্জকে আটকের পর জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. ওবায়দুল ইসলাম বাদী হয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলাটি তদন্ত করছেন সদর মডেল থানার এসআই মো. আব্দুস সালাম।

জানতে চাইলে চাঁপাইয়ের জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. রিয়াজুর রহমান রাজু জানান, বালিয়াডাঙ্গা ইউনিয়নে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল বিতরণের অনিয়মে তিনি বিস্মিত। ওই ইনিয়নের ২৩৬ জন হতদরিদ্র তালিকায় নাম থাকার পরেও চাল পাননি এমন অভিযোগ করেছেন। ইউপি চেয়ারম্যান ও ডিলারের বিরুদ্ধে যে মামলা রয়েছে সেই অভিযোগপত্রে প্রমাণিত অভিযোগগুলো অন্তর্ভুক্ত করা হবে।

তিনি আরোও বলেন, জনবল সংকটের কারণে একসঙ্গে সবগুলো ইউনিয়ন মনিটরিং করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে প্রতিটি ইউনিয়নের ডিলারদের চাল বিতরণ মনিটরিংয়ে ট্যাগ অফিসার রয়েছেন। কোথাও কোনো অনিয়ম, অসঙ্গতি পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে শাস্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close