হাসানুজ্জামান তুহিন, শাহজাদপুর (সিরাজগঞ্জ)

  ১০ সেপ্টেম্বর, ২০১৮

যাতায়াতে লাখো মানুষের দুর্ভোগ

শাহজাদপুরে হুমকির মুখে বাঘাবাড়ী-বেড়া মুজিব বাঁধ

প্রতিনিধি সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার বাঘাবাড়ী রামখারুয়া গ্রাম থেকে পাবনার বেড়া উপজেলার আমাইকোলা বাজার এলাকা পর্যন্ত বাঘাবাড়ী-বেড়া মুজিব বাঁধটি হুমকির মুখে পড়েছে। বাঁধটির দুপাশের মাটি ও সিসি ব্লক ধসে বহু স্থানে বড় বড় খানা খন্দ ও গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে দীর্ঘদিন ধরে বাঁধ পাড়ের প্রায় ৫ কিলোমিটার এলাকার সংস্কার কাজ না করায় যাতায়াতে দূর্ভোগে পোহাতে হচ্ছে উপজেলার লাখো মানুষকে।

বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, ২০০০ সালে বাঁধটিতে শেষ বারের মতো কিছু সংস্কার কাজ এবং এর ওপর পাকা সড়ক নির্মাণ করা হয়। এতে বাঁধটির স্থায়িত্ব বৃদ্ধির পাশাপাশি এ এলাকার মানুষের যাতায়াত ব্যবস্থা সহজ ও উন্নততর হয়। এরপর দীর্ঘ ১৭ বছর পার হায়ে গেলেও এ সড়কটিও সংস্কার করা হয়নি। ফলে সড়কটির অধিকাংশ স্থানে খালখন্দে ভরা। কোথায়ও কার্পেটিংকের চিহৃ মাত্র নেই। যানবাহন ও মানুষ চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে রাস্তাটি। এতে সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুর এবং পাবনা জেলার বেড়া ও সাথিয়া উপজেলার ১৪টি গ্রামের কমপক্ষে ৫ থেকে ৬ লাখ মানুষের যাতায়াতে চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

এ ব্যাপারে আমাইকোলা গ্রামের ৭৫ উর্ধ্ব বয়সের আজমত আলী খাঁ জানান, পাবনা সেচ ও পল্লী উন্নয়ন প্রকল্পের (আইআরডি) আওতায় স্বাধীনতার পরে তৎকালানীন সরকার বাঁধের জন্য জমি অধিগ্রহন করে এবং আনুমানিক ১৯৮০ সালে দিকে বাঁধ নির্মাণের কাজ শেষ হয়। প্রকল্প গ্রহনের সময় এই বাঁধটির নামকরণ করা হয় মুজিব বাঁধ হিসেবে। এর আগে এ অঞ্চলের মানুষ বর্ষাকালে নৌকা ও শুস্ক মৌসুমে জমির আল পথে বেড়া বা বাঘাবাড়িতে যাতায়াত করত। বাঁধটি নির্মাণের ফলে যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হয়ে পড়ে।

এরপর অতি বন্যা ও বৃষ্টিপাতের ফলে বাঁধটি চরম ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে পড়লে ২০০০ সালে কিছু স্থানে সংস্কার করে তার উপরে পাকা সড়ক নির্মাণ করা হয়। এরপর আর এ বাঁধটি সংস্কার করা হয়নি।

রূপবাটি স্বাস্থ্য কেন্দ্রের একজন চিকিৎসক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, সড়কটির বেহাল অবস্থার কারণে হাসপাতালে রোগীরা যেতে পারে না। ফলে তারা সু-চিকিৎসা থেকে প্রায়ই বঞ্চিত হচ্ছে। চয়ড়া গ্রামের মুদি দোকানদার নান্নু মিয়া জানান, এ বাঁধটি সংষ্কার কাজ না হওয়ায় প্রতিদিন এ সড়কে যানবাহন চলাচলে দূর্ঘটনা ঘটছে। এতে অনেক ব্যাক্তির প্রাণ হারিয়েছে। বহু সংখ্যক মানুষ পঙ্গুত্ব বরণ করেছে।

এ ব্যাপারে রূপবাটি ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম সিকদার বলেন, দুগ্ধ ও শিল্প প্রধান এ এলাকার মানুষের চলাচল ও পণ্য পরিবহনের একমাত্র ভরসা এই বাঁধ ও সড়ক। এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন মিল্কভিটাসহ দুগ্ধ শিল্পের জন্য কয়েক লক্ষ্য লিটার দুধ ও অন্যান্য মালামাল পরিবহন করা হয়। সড়কটি এ এলাকার মানুষের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন হওয়ায় দ্রুত সময়ের মধ্যে এ বাঁধ ও সড়কটির সংস্কার প্রয়োজন।

এ ব্যাপারে বেড়া পানি উন্নয়ন নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আব্দুল হামিদ জানান, পাবনা, সিরাজগঞ্জ ও নাটোর জেলার উপজেলাগুলো নিয়ে পাবনা সেচ ও পল্লী উন্নয়ন প্রকল্প গঠিত। এ প্রকল্পের আওতাভুক্ত আবাদি ও কৃষি জমির ফসল রক্ষার্থে ১৯৮০ সালে এ বাঁধটি নির্মাণ করা হয়। দীর্ঘদিন ধরে অর্থ বরাদ্দ না পাওয়ায় বাঁধটি সংস্কার করা সম্ভব হয়নি। এ বছর মাটির কাজ করার জন্য ৫০ লাখ টাকার একটি বরাদ্দ পাওয়া গেছে। অচিরেই এ মাটির কাজ শুরু করা হবে। অন্যদিকে শাহজাদপুর এলজিইডিকে রাস্তা পাকাকরণের জন্য বলা হয়েছে। মাটির কাজ শেষ হলে তারা রাস্তাটি পাকা করে দিবে বলে জানিয়েছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close