মো. রাজু খান, ঝালকাঠি
ঝালকাঠিতে স্কুল ফাঁকি দিয়ে ভাটায় কাজ
ইট তৈরিতে শিশুশ্রম
পারিবারিক অভাবের কারণে সংসার চালাতে সহায়তা করতে আবার কেউ খেলার সামগ্রী কিনতে অথবা অনুষ্ঠানে পিতার কাছে টাকা না চেয়ে নিজের উপার্জন দিয়েই খরচ করতে ইট তৈরির কারখানায় শিশু শ্রমের কাজ করছে। এই কাজ করতে গিয়ে তাদের প্রায়ই স্কুল ফাঁকি দিয়ে কাজ করতে হয়। প্রতিদিন ২৫০ টাকা করে তাদের বেতন দিচ্ছে মালিক। তবে অভিযোগ আছে, প্রতিদিনের বেতন প্রতিদিন সন্ধ্যায় না নিয়ে একত্রে জমিয়ে নিতে মালিকপক্ষ সব টাকা পরিশোধ না করে বিভিন্ন অজুহাতে কমিয়ে দেয়।
রাজাপুর উপজেলার গালুয়া ইউনিয়নের পশ্চিম পুটিয়াখালী গ্রামের মোঃ রুস্তম আলী হাওলাদার’র ইট তৈরির কারখানা (অনুমোদনহীন পাঁজা) মেসার্স গ-ঞ-ঐ ব্রিকসে গিয়ে দেখা যায় শিশু শ্রমিকের কাজ করছে লোকমান (১২) আঃ শুক্কুর (১৩), সাব্বির হোসেন (১২), হৃদয় হোসেন (১৬), সবুজ (১৬), শাহীন (১৬), তারেক (১৭)। তারা সবাই পড়ালেখার সঙ্গে জড়িত। এর সবাই শুকনো কাঁচা ইট পাঁজায় সাজানোর কাজে নিয়োজিত। তাদের তদারকির জন্য রয়েছে আব্দুল বারেক নামের আরেক শ্রমিক।
লোকমান জানায়, সে কওমী মাদ্রাসা থেকে পড়াশুনা করে পুটিয়াখালী আলিয়া মাদ্রাসায় ৫ম শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছে। বাড়ি থেকে মাদ্রাসায় যেতে অনেক দূর। তাই এখানে কাজ করে সেই টাকা দিয়ে একটি বাই সাইকেল কিনবে। এরপর যে টাকা থাকবে তা দিয়ে কিছু খেলাধুলার সামগ্রী কিনবে আর মাহফিল বা অন্য কোন অনুষ্ঠানে গেলে নিজের ইচ্ছে মতো খরচ করবে। তবে বাবা হারান ৯ম শ্রেণির ছাত্র হৃদয় হোসেন জানান, মা ও ৩ ভাই-১ বোনের সংসারে একমাত্র উপার্জনকারী সে।
একই ভাটায় ভিন্ন রকম কাজ করা মাধ্যমিকের ছাত্র সবুজ ও শাহিন এবং উচ্চ মাধ্যমিকের ছাত্র তারেক জানায়, মাটি দিয়ে ইটর তৈরি, তা রোদে শুকানো ও পরে সাজিয়ে রাখার জন্য প্রতিহাজারে ১ হাজার টাকা ধার্য করা হয়েছে। প্রতিদিন আমাদের দেড় থেকে ২ হাজার ইট প্রস্তুত করা হয়।
আমাদের তদারকিতে আছেন বয়স্ক আঃ বারেক। তার বেতনও আমাদের মধ্যে। তাতে আমাদের প্রতিদিন ৩ শত টাকা বেতন আসে।
শিশুশ্রমের বিষয়ে ইট তৈরির কারখানার মালিক মোঃ রুস্তম আলী হাওলাদারের বাড়িতে গিয়ে না পেয়ে তার সাথে যোগাযোগের জন্য ব্যবহৃত নম্বরে একাধিকবার কল করলেও তিনি রিসিভ করেন নি।
"