আশরাফুজ্জামান বাবু, বদরগঞ্জ (রংপুর) প্রতিনিধি
পাতাপচন রোগে আক্রান্ত আলুক্ষেত ফলন নিয়ে শঙ্কায় চাষিরা
রংপুরের বদরগঞ্জে ঘন কুয়াশায় আলুক্ষেতে পচন রোগ (লেট ব্লাইট) দেখা দেওয়ায় বিপাকে পড়েছেন চাষিরা। কৃষি অফিসের পরামর্শে বারবার বালাই ও ছত্রাকনাশক প্রয়োগ করেও আশানুরূপ ফল পাচ্ছেন না তারা। এ নিয়ে চাষীরা ফলন বিপর্যয়ের আশঙ্কা করলেও কৃষি অফিস বলছেন, আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। ক্ষেতে সময় মতো সঠিকভাবে ছত্রাকনাশক প্রয়োগ করলে পচন বন্ধ হয়ে যাবে।
উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এবার ২ হাজার ৭২০ হেক্টর জমিতে আলুচাষ করা হয়েছে। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৪৫ হেক্টর বেশি। এবারে আলুচাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ হাজার ৬৭৫ হেক্টর। উপজেলার গোপালপুর, শীবপুর, গোপীনাথপুর হেলার চক, বিষ্ণুপুরের ওসমানপুর, লোহানীপাড়া, কালুপাড়া, দামোদুরপুরসহ পৌর এলাকার ব্যাপক জমিতে আলু চাষ হয়েছে। কৃষি অফিসের দেয়া তথ্য মতে-চাষীরা উচ্চ ফলনশীল (উফশী) ও স্থানীয় দু’জাতেরই আলুচাষ করেছেন কৃষকরা। উফশী জাতের মধ্যে রয়েছে কার্ডিনাল, গ্র্যানুলা, স্ট্যারিকস, ফেনসিলা, কারেজ, ডায়মন্ড ইত্যাদি। স্থানীয় জাতের আলুর মধ্যে রয়েছে শীল বিলাতী, সাদাগুটি, ঝাউ বিলাতী, ইন্দুরকানি, ষাইটা, লাল পাকড়ী প্রভৃতি। এছাড়া অন্যান্য জাতের আলুক্ষেতে মাটিকাটার কাজটিও তাঁরা শেষ করেছেন।
এখন আলুক্ষেতে চলছে শেষ পর্যায়ের পরিচর্যা। কিন্তু এরই মধ্যে আলুক্ষেতে ব্যাপক আকারে দেখা দিয়েছে পাতা পচন বা লেট ব্লাইট রোগের আক্রমণ। এতে কৃষকের শত শত হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। সরেজমিন উপজেলার বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শনকালে কথা হয়, উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের ওসমানপুর এলাকার আলুচাষী মোকছেদ আলীর সঙ্গে। তিনি বলেন, ৫২ শতক জমিতে আলু চাষ করেছি। এক সপ্তাহ ধরে ক্ষেতে ব্যাপকহারে পচন দেখা যাচ্ছে। কৃষি অফিসের লোকজনের পরামর্শে বার বার কীটনাশক দিয়েও কোন ফল পাচ্ছি না।
পৌর শহরের জামুবাড়ি ডাক্তার পাড়া এলাকার আলু চাষী আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘মুই ১০ কাটা মাটিত আলু আবাদ করচু। আলুবাড়ি ভালই আচিল। কিন্তু ১৫দিন থাকি পচন ধরচে। কোম্পানি আর কৃষি স্যারের কথায় বিষ দেওচো, কোন কাম হওচেনা।’ এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমানের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, দুই একটি এলাকায় পচন রোগ দেখা দিয়েছে। আমরা মাঠ পর্যায়ে গিয়ে কৃষকদেরকে কীটনাশক প্রয়োগের পরামর্শ দিচ্ছি।
"