নিজস্ব প্রতিবেদক
আলোচনা সভায় মেয়র খোকন
চিকুনগুনিয়ার ব্যথা সারাতে প্রয়োজনে ফিজিওথেরাপি
চিকুনগুনিয়া জ্বরে আক্রান্তদের ব্যথা প্রশমনে প্রয়োজনে বাড়ি বাড়ি ফিজিওথেরাপিস্ট পাঠানোর কথা ভাবছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। গতকাল মঙ্গলবার স্কলারস ইন ক্যাম্পাসে ‘চিকুনগুনিয়া: সচেতনতা’ শীর্ষক এক আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্ত?ব্যে মেয়র সাঈদ খোকন এ কথা বলেন। তিনি বলেন, আমরা হোম ওয়ার্ক করছি, ঘোষণা দেইনি। চিকুনগুনিয়া আক্রান্ত রোগীদের ব্যথা নিরাময়ে আমরা অন কলে ফিজিওথেরাপিস্ট পাঠানোর চিন্তা করছি।
ল্যাবএইড ও স্টেট ইউনির্ভাসিটি অব বাংলাদেশ আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন স্টেট ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টির চেয়ারম্যান এম এম শামীম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য এস এম এ ফয়েজ, অধ্যাপক খাজা নাজিম উদ্দিন, সমীরণ কুমার সাহা প্রমুখ।
চিকুনগুনিয়া আক্রান্তের হার উল্লেখযোগ্য হারে কমে এসেছে দাবি করে মেয়র বলেন, এই মুহূর্তে চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্তের হার শূন্য দশমিক শূন্যতে চলে আসছে। গত সাত দিনে নতুন রোগী নেই। আমরা নগরবাসীর মন থেকে ভীতি ও আতঙ্ক দূর করতে চাই। চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্তের হার উল্লেখযোগ্য হারে কমে আসছে।
তিনি বলেন, চিকুনগুনিয়া নামে যে কিছু আছে, এটাই জানা ছিল না। মে মাসের প্রথম দিকে গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়টি আমার নজরে আসে। এরপরই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সঙ্গে আমার কথা হয় এবং ২১ মে বিষয়টি বোঝার জন্য একটি সেমিনারের আয়োজন করি। এর আগে চিকুনগুনিয়া নামে যে কোনো শব্দ আছে, তাই জানতাম না। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সঙ্গেও সেদিনই কথা হয় এবং তখন থেকে এ রোগ সম্পর্কে বিস্তারিত জানি ও তখন থেকেই আমাদের কাজ শুরু হয়।
মেয়র বলেন, আমাদের বুঝতে হবে, চিকুনগুনিয়ার জীবাণু বহনকারী এডিস মশা স্বচ্ছ পানিতে জন্মায়, অন্যদিকে কিউলেক্স মশা জন্মায় জলাবদ্ধ জায়গায়। এক্ষেত্রে জলাবদ্ধতা অবশ্যই বড় এক সমস্যা। আমাদের পক্ষে বাড়ির ভেতরে গিয়ে ফগিং করা সম্ভব হয় না। তবে কোনো নাগরিক যদি আমাদের অ্যালাউ করেন, সিটি করপোরেশন বাসায় বাসায় গিয়ে মশা নিধনের কাজ করবে।
চিকুনগুনিয়া মহামারি রূপ নিয়েছে কি না, আলোচকদের এ প্রশ্নে ল্যাবএইড হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. এ এম শামীম বলেন, যদি এক লাখ মানুষের মধ্যে ১৫ জন আক্রান্ত হয় এবং সে অবস্থা টানা দুই সপ্তাহ চলে, তবে তাকে মহামারি বলা যায়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রোবায়েত ফেরদৌস মেয়রের কাছে জানতে চান, ঢাকায় চিকুনগুনিয়ার বর্তমান পরিস্থিতিকে মহামারি বলা যায় কি না।
জবাবে মেয়র বলেন, ঢাকার প্রতি ঘরেই দুই-একজন ডায়াবেটিস রোগী আছে, প্রেসারের রোগী আছে। সেটা যদি মহামারি হয়, তাহলে চিকুনগুনিয়াও মহামারি। আমরা যদি শতকরা হিসাব করি, তাহলে চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা শূন্য দিয়ে করতে হবে। শতকরা একভাগও হবে না। ঢাকায় চিকুনগুনিয়ায় মহামারির ধারেকাছেও নেই।
এ এম শামীম বলেন, এক লাখ লোকের মধ্যে ১৫ জন আক্রান্ত হলে এবং সেই অবস্থা টানা দুই সপ্তাহ চললে তাকে মহামারি বলা যায়। এটা প্রতিষ্ঠিত নয় তবে সাধারণভাবে মহামারি বলতে আমরা এটাই বুঝি। চিকুনগুনিয়া নিয়ে সঠিক পরিসংখ্যান না থাকায় কোনো সংখ্যা দাঁড় করানো যাবে না বলে জানান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের অধ্যাপক আসিফ নজরুল।
নিজের ছেলে এবং গাড়িচালকের চিকুনগুনিয়া হওয়ার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা কাউকে জানাইনি। এমন অনেক মানুষ আছে যারা চিকুনগুনিয়া হওয়ার পরও সিটি করপোরেশন বা স্বাস্থ্য বিভাগে জানায়নি। ফলে ঢাকার কত পার্সেন্ট মানুষ এ রোগে আক্রান্ত হয়েছে তার সঠিক পরিসংখ্যান পাওয়া সম্ভব নয়। যেহেতু কোনো জরিপ নেই, তাই কোনো সংখ্যাও দাঁড় করানো যাবে না।
"