নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২৪ নভেম্বর, ২০২১

মশক নিয়ন্ত্রণে রূপরেখা দিলেন মেয়র তাপস

মশক নিয়ন্ত্রণে আধুনিক যন্ত্রপাতি ও প্রশিক্ষিত জনবল নিয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) সজ্জিত হচ্ছে। ডিএসসিসি মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস নগর ভবনে তার কার্যালয়ে বাসসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা জানান। মেয়র বলেন, মশক নিয়ন্ত্রণে সমন্বিত লড়াইয়ের অংশ হিসেবে ডিএসসিসি মোবাইল কোর্ট পরিচালনার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় আধুনিক সরঞ্জাম, মানসম্মত কীটনাশক ও প্রশিক্ষিত জনবল নিয়োগ দিচ্ছে।

ডিএসসিসি মেয়র বলেন, গত বছরের ১৬ মে করোনা ও ডেঙ্গু পরিস্থিতির মধ্যে দায়িত্ব গ্রহণের পর তিনি প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী মশার উপদ্রব নিয়ন্ত্রণে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছেন। এ জন্য সামগ্রিক কর্মপরিকল্পনায় রদবদল এনেছেন তিনি। রদবদল করা কর্মপরিকল্পনা অনুসারে ডিএসসিসি তার আওতাধীন ৭৫টি ওয়ার্ডে সারা বছর দৈনিক ভিত্তিতে সুসমন্বিত কার্যক্রম শুরু করেছে।

তাপস জানান, কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী ডিএসসিসিতে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষিত জনবল, আধুনিক যন্ত্রপাতি ও পর্যাপ্ত ভালোমানের কীটনাশক সংগ্রহের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। সময়োপযোগী ও তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণের ফলে তারা সফলতা পাচ্ছেন। নগরবাসী ২০১৯ সালের শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা থেকে বেরিয়ে এসে এখন স্বস্তির নিশ্বাস নিতে পারছেন।

ডিএসসিসি মেয়র বলেন, তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পর বছরব্যাপী সমন্বিত মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমকে গতিশীল করার উদ্যোগ নেওয়া হয়। এ লক্ষ্যে অ্যাডাল্টিসাইডিংয়ে ৩৭৫টি নতুন ফগার মেশিন, লার্ভিসাইডিংয়ে ৪০০টি নতুন হ্যান্ড স্প্রে মেশিন, কিউলেক্স মশা নিয়ন্ত্রণে ২৫টি নতুন হুইলব্যারো মেশিন কেনা হয়েছে। ডিএসসিসি তার ইতিহাসে প্রথমবারের মতো স্থায়ীভাবে কীটনাশক নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা নিয়োগ দিয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে শূন্য থাকা কয়েকটি পদের বিপরীতে চার সহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ৭৫টি ওয়ার্ডে মশকনিধন কার্যক্রম পরিচালনার জন্য সুনির্দিষ্ট জনবল নিয়োগের কার্যক্রম চলছে। ডিএসসিসি মেয়র জানান, বর্তমানে প্রতি ওয়ার্ডে সাতজন মশককর্মী সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত লার্ভিসাইডিং কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। বেলা আড়াইটা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত প্রতি ওয়ার্ডে ৬ মশককর্মী ১২টি ফগার মেশিন দিয়ে অ্যাডাল্টিসাইডিং কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। পাশাপাশি প্রতিটি ওয়ার্ডে মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম তদারকি ও সমন্বয়ের জন্য একজন করে মশক সুপারভাইজার নিয়োগ করা হয়েছে। বর্তমানে প্রতি ওয়ার্ডে ১৪ জন করে ৭৫টি ওয়ার্ডে মোট ১ হাজার ৫০ জন কর্মী লার্ভিসাইডিং, অ্যাডাল্টিসাইডিং, তদারকি ও সমন্বয় কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছেন।

তাপস বলেন, ‘কিউলেক্স মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে শুরুর আগে মশককর্মী ও সুপারভাইজারদের জন্য আমরা প্রথমবারের মতো মৌলিক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছি। কারণ, এডিস মশকের প্রজননস্থল আর কিউলেক্স মশকের উৎসস্থল সম্পূর্ণ আলাদা।’ ডিএসসিসি মেয়র বলেন, বছরের নির্দিষ্ট একটা সময় এক ধরনের কাজ করার পর আরেক ধরনের কার্যক্রম শুরু করলে কিছুটা মনস্তাত্ত্বিক বাধা অনুভব হয়। সে বাধা দূরীকরণে আমরা এই মৌলিক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করছি। এ ছাড়া জনগণকে এই সেবা প্রদানে তাদের মনজাগতিক পরিবর্তনে এ ধরনের প্রশিক্ষণ ভালো ফল দেবে বলেই আমরা বিশ্বাস করি। আগামী দিনে আমরা এ প্রশিক্ষণ নিয়মিতভাবে চালু রাখব। তাপস বলেন, মশক নিয়ন্ত্রণে ব্যবহৃত কীটনাশকের গুণগতমান নিয়ে জনমনে নানা ধরনের প্রশ্ন ছিল। তারা কীটনাশকের গুণগতমান নিশ্চিতে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। মাঠপর্যায়ে ব্যবহৃত হওয়ার আগে কীটনাশক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার যে মানদণ্ড রয়েছে, তারা তা পুরোপুরি নিশ্চিত করছেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close