চট্টগ্রাম ব্যুরো

  ০২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯

জানুয়ারিতে চসিকের গৃহ খাতে রাজস্ব আদায় বেড়েছে

রাজস্ব আদায়ে মাঠে নেমেছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) রাজস্ব বিভাগ। গত অর্থবছরের (২০১৭-১৮) প্রথম ছয় মাসে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী রাজস্ব আদায় পূরণ না হলেও গত অর্থ বছরের তুলনায় চলতি অর্থবছরের (২০১৮-১৯) জানুয়ারিতে গৃহ খাতে রাজস্ব আদায় প্রায় দেড় কোটি টাকা বেড়েছে। যদিও চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে পৌরকর ও ভূমি হস্তান্তর খাতে গত অর্থবছরের তুলনায় প্রথম ছয় মাসে রাজস্ব আদায় কমছিল। আটটি রাজস্ব সার্কেলের মাধ্যমে চলতি অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ে জোর কর্মতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে চসিক।

রাজস্ব আদায়ের ব্যাপারে চসিকের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা আবু সাহেদ চৌধুরী প্রতিদিনের সংবাদকে বলেন, নগরবাসী যাতে স্বতঃস্ফূর্তভাবে রাজস্ব দেন তার জন্য আমরা উদ্বুদ্ধ কার্যক্রম হাতে নিয়েছি। নোটিশের মাধ্যমে, কথা বলে, মতবিনিময়সহ বিভিন্ন উপায়ে আমরা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। আমরা আমাদের নির্দিষ্ট লক্ষ্যপূরণে সর্বোচ্চ চেষ্টায় আছি। তবে আশার কথা হচ্ছে, গত অর্থ বছরের জানুয়ারি তুলনায় এবার চলতি র্অ বছরের জানুয়ারিতে প্রায় দেড় কোটি টাকা বেশি আদায় হয়েছে। রাজস্ব আদায়ে নগরবাসী থেকে আশানুরূপ সাড়া পাচ্ছি।

রাজস্ব কর্মকর্তা বলেন, চলতি অর্থবছরের বাকি সময়ে যদি রাজস্ব আদায়ে গাফিলতি বা অনীহা থাকে তাহলে সরকারের আইন অনুযায়ী সব ধরনের ব্যবস্থা নিব। তবুও রাজস্ব আদায়ে পিছপা হব না বলে জানান তিনি।

সিটি করপোরেশনের তথ্য মতে, চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে (জুলাই থেকে ডিসেম্বর) ১৬৪ কোটি ৫ লাখ ১৬ হাজার ১৭ টাকা (ছয় মাসের মোট দাবি) গৃহকর আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল চসিকের। বিপরীতে প্রথম ছয় মাসে আদায় হয়েছে মাত্র ৭৮ কোটি ৩১ লাখ ৪৫ হাজার ৯১৯ টাকা। যা গত অর্থ বছরের (২০১৭-১৮) প্রথম ছয় মাসের চেয়ে ২ কোটি ৬৯ লাখ ৬৫ হাজার ৪৯০ টাকা কম। চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেটে উল্লিখিত ৪৬৮ কোটি ৪৫ লাখ ৩২ গৃহকর আদায়ের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে প্রথম ছয় মাসে অর্জিত হয়েছে মাত্র ১৬ দশমিক ৭২ শতাংশ।

রাজস্ব বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ২৫ কোটি ৯৬ লাখ ৪৩ হাজার ৫১৫ টাকার লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে গৃহকর আদায় হয়েছে মাত্র ৫ কোটি ৬ লাখ ৮১ হাজার ৭২৬ টাকা। জুলাই মাসে একই পরিমাণ লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আদায় হয়েছে ২২ কোটি ৬৫ লাখ ৮৯ হাজার ৮৪৯ টাকা। সেপ্টেম্বরে ২৮ কোটি ৭ লাখ ৩৩ হাজার ৮৭৬ টাকার লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আদায় হয়েছে ১২ কোটি ৩৫ লাখ ৯ হাজার ৬৯৭ টাকা। অক্টোবরে ২৮ কোটি ১ লাখ ৬৫ হাজার ৩৭ টাকার লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আদায় হয়েছে ২৪ কোটি ৫৫ লাখ ৭২ হাজার ৩৪৮ টাকা। একই লক্ষ্য মাত্রার বিপরীতে নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসে গৃহকর আদায় হয়েছে যথাক্রমে ৪ কোটি ৬৭ লাখ ৫৯ হাজার ৩৭৯ টাকা ও ৯ কোটি ৩২ হাজার ৯১৬ টাকা।

তবে প্রতিদিনের সংবাদকে রাজস্ব আদায়ে কোনো রকম ছাড় না দেওয়ার কথা জানালেন, চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সামসুদ্দোহা। তিনি বলেন, ‘অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে কর আদায় একটু কম হয়। অর্থবছরের শেষদিকে কর আদায় বৃদ্ধি পায়। রাজস্ব আদায়ে প্রয়োজনে ম্যাজিস্ট্রেট কাজ করবেন। এরই মধ্যে দুই বড় কর খেলাপির ক্ষেত্রে আমরা তা করেছি। দীর্ঘদিন থেকে যারা রাজস্ব প্রদানে অনিচ্ছুক, তাদের তালিকা তৈরি করছি। আগে নোটিশ দেব, তাতেও না হলে পত্রিকায় তালিকা প্রকাশ করব। সর্বোপরি, আমরা রাজস্ব আদায়ে কোনো ধরনের ছাড় দেব না। আশা করছি, ২০১৮-১৯ অর্থবছর শেষে ৬০ থেকে ৬৫ শতাংশ গৃহকর আদায় হবে বলে প্রতিদিনের সংবাদকে জানান তিনি।

সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন জানুয়ারিতে গৃহ খাতে উল্লেখযোগ্য রাজস্ব আদায়ে প্রতিদিনের সংবাদের মাধ্যমে নগরবাসীকে ধন্যবাদ দিয়ে বলেন, আমাদের একমাত্র লক্ষ্য নগরবাসীর সেবা করা। চলতি অর্থবছরের জানুয়ারিতে যেভাবে গৃহকর প্রদান করেছেন, এ ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকলে নগরবাসীর প্রত্যাশা অনুযায়ী সেবা দিতে আমাদের সমস্যা হবে না। আশা করি, আগামীতে নগরবাসী সিটি করপোরেশনের নিয়ম অনুযায়ী রাজস্ব প্রদান করে নগর উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে বলে জানান তিনি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close