ক্রীড়া ডেস্ক

  ০৬ এপ্রিল, ২০২৪

নিজেদের হাতে লিভারপুলের ভাগ্য

প্রতিপক্ষের ভুলে লিভারপুল এগিয়ে যাওয়ার পর কিছুটা সৌভাগ্যের ছোঁয়ায় সমতা টানল শেফিল্ড ইউনাইটেড। সম্ভাবনা জাগল নাটকীয়তার। কিন্তু কোথায় কী! শেষ আধা ঘণ্টায় প্রতিপক্ষকে কোনো সুযোগই দিল না ইয়ুর্গেন ক্লপের দল। দারুণ জয়ে লিগ টেবিলের শীর্ষে ফিরল ‘অল রেড’ খ্যাত দলটি। অ্যানফিল্ডে বৃহস্পতিবার রাতে প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচটি ৩-১ গোলে জিতেছে স্বাগতিকরা। দারউইন নুনেসের গোলে লিভারপুল এগিয়ে যাওয়ার পর তাদের আত্মঘাতী গোলে ম্যাচে সমতা ফেরে। এরপর আলেক্সিস মাক আলিস্তের নৈপুণ্যে শিরোপাপ্রত্যাশীরা এগিয়ে যাওয়ার পর ব্যবধান বাড়ান কোডি হাকপো।

এই জয়ে আর্সেনালের চেয়ে পরিষ্কার দুই পয়েন্ট এবং গতবারের চ্যাম্পিয়ন ম্যানচেস্টার সিটির চেয়ে তিন পয়েন্ট এগিয়ে রয়েছে লিভারপুল। সবচেয়ে বড় কথা এই জয়ে ভাগ্য নিজেদের হাতেই রেখেছে দলটি। শেষ আট রাউন্ডে লড়াই চালিয়ে রাখতে পারলে ২০তম ইংলিশ শিরোপা ঘরে তুলতে পারে তারা। তবে আগের রাতের জয়ের মূল কারিগরই ছিলেন ম্যাক অ্যালিস্তার। ম্যাচ শেষে এই আর্জেন্টাইনের প্রশংসা করে ক্লপ বলেছেন, ‘ম্যাচ ঘুরিয়ে দেওয়ার জন্য আমাদের মক্কার বিস্ময়কর গোলের প্রয়োজন ছিল। ও আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একজন দুর্দান্ত খেলোয়াড় এবং একটি দুর্দান্ত ছেলে- আমি সত্যিই খুশি যে, লিভারপুলে আমরা তাকে পেয়েছি।’

গত গ্রীষ্মে ব্রাইটন থেকে ৩৫ মিলিয়ন পাউন্ডের বিনিময়ে ম্যাক অ্যালিস্তারকে দলে টানে লিভারপুল। তাকে কেনায় তখন বেশ সমালোচনাও হয়েছিল। অনেকেই তার রক্ষণকাজ নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছিল। তবে লিভারপুলে একজন অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন তিনি। ক্লপের ভাষায়, ‘তার রক্ষণাত্মক কাজও সত্যিই ভালো ছিল, যেখানে লোকরা সন্দেহ করেছিল যে, সে রক্ষণাত্মক হতে পারে কি না, তবে আমি তাকে আটে (অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার) পছন্দ।’

আগের দিন লুটন টাউনকে হারিয়ে শীর্ষে উঠেছিল আর্সেনাল। ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই তাদের দ্বিতীয় স্থানে নামিয়ে দিল লিভারপুল। ৩০ ম্যাচে ২১ জয় ও ৭ ড্রয়ে লিভারপুলের পয়েন্ট ৭০। আর ২১ জয় ও ৫ ড্রয়ে আর্সেনালের পয়েন্ট ৬৮। সমান ম্যাচে ২০ জয় ও ৭ ড্রয়ে ৬৭ পয়েন্ট নিয়ে তিন নম্বরে ম্যানচেস্টার সিটি। প্রথম মিনিটেই লিভারপুলের রক্ষণে হানা দেয় তলানির দল শেফিল্ড। জেমস ম্যাকাটির শট কর্নারের বিনিময়ে ঠেকিয়ে দেন লিভারপুল গোলরক্ষক। ওই কর্নারেও হতে পারত গোল, দূরের পোস্টে অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয় বেন দিয়াসের প্রচেষ্টা।

এরপর শুরু হয় লিভারপুলের টানা আক্রমণ। খুব ভালো কোনো সুযোগ তৈরি করতে না পারলেও, প্রতিপক্ষের ওপর চাপ ধরে রাখে তারা। সপ্তদশ মিনিটে শেফিল্ড গোলরক্ষক ইভো গিরবিচের হাস্যকর ভুলে এগিয়ে যায় লিভারপুল। প্রতিপক্ষের কোনো তখন চাপই ছিল না, তারপরও দারউইন নুনেসকে এগিয়ে আসতে দেখে একটু তাড়াহুড়ো করেই শট নেন গিরবিচ; বল সামনে লাফিয়ে ওঠা নুনেসের পায়ে লেগে চলে যায় জালে। পেছনে ছুটেও নাগাল পাননি গোলরক্ষক। ৩৪তম মিনিটে আরেকটি ভালো সুযোগ পায় লিভারপুল। তবে আলেক্সিস মাক আলিস্তেরের শট অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। ১০ মিনিট পর দারুণ এক সেভ করে ব্যবধান বাড়তে দেননি গিরবিচ। দমিনিক সোবোসলাইয়ের শট ক্রসবারের ওপর দিয়ে বাইরে পাঠান তিনি।

দ্বিতীয়ার্ধের প্রথম পাঁচ মিনিটে আরো তিনবার গোলের প্রচেষ্টা চালায় লিভারপুল, যদিও কোনোবারই তারা প্রতিপক্ষ গোলরক্ষককে সেভাবে ভাবাতে পারেনি। এরপরই ৫৭তম মিনিটে কনর ব্র্যাডলির ওই আত্মঘাতী গোল। অবশ্য লিভারপুলের তরুণ এই ডিফেন্ডারের সেখানে খুব একটা দায় ছিল না। ডি-বক্সে শেফিল্ড মিডফিল্ডারের হেড লক্ষ্যে ছিল না; কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত বল ব্র্যাডলির পায়ে লেগে গোললাইন পেরিয়ে যায়। আচমকা গোল হজমের পর লিড পুনরুদ্ধারে মরিয়া হয়ে উঠে লিভারপুল। একের পর এক আক্রমণ করে ৭৬তম মিনিটে সাফল্যের দেখা পায় তারা। ডি-বক্সের বাইরে থেকে বুলেট গতির শটে দলকে ফের এগিয়ে নেন আর্জেন্টাইন মিডফিল্ডার মাক আলিস্তের। ৮৫তম মিনিটে আরেকটি চমৎকার গোল পেতে পারতেন মাক আলিস্তের। কিন্তু দুর্ভাগ্য বাঁধ সাধে; বিশ্বকাপজয়ী তারকা দারুণ ফ্রি কিক ক্রসবারে বাধা পায়। নির্ধারিত সময়ের শেষ মিনিটে ব্যবধান বাড়িয়ে সব অনিশ্চয়তা একরকম ইতি টেনে দেন হাকপো। বাঁ দিকের বাইলাইন থেকে বক্সে দারুণ এক ক্রস বাড়ান অ্যান্ডি রবার্টসন আর নিখুঁত হেডে গোলটি করেন ডাচ ফরোয়ার্ড।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close