ক্রীড়া ডেস্ক

  ০৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

রোমাঞ্চ ছড়িয়ে জিতল ম্যানইউ

দুই গোলে এগিয়ে থেকেও জয় নিয়ে সংশয়ে পড়েছিল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। ২২মিনিটের মধ্যে প্রতিপক্ষের জালে দুবার বল পাঠিয়ে সহজ জয়ের সম্ভাবনা জাগাল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। তখন কে জানত, শেষে গিয়ে নাটকীয়তার সব রংয়ের দেখা মিলবে। উলভারহ্যাম্পটনের ঘুরে দাঁড়ানোর শুরু দ্বিতীয়ার্ধে। নির্ধারিত সময়ে নিয়ন্ত্রণ যদিও সফরকারীদের হাতেই ছিল। কিন্তু যোগ করা সময়ে পয়েন্ট হারানোর শঙ্কায় পড়ে যায় তারা। সেই সময়ে নায়কের বেশে হাজির কবি মেইনু। নজরকাড়া এক গোলে দলকে জয়ের আনন্দে ভাসালেন এ টিনএজার। প্রতিপক্ষের মাঠে বৃহস্পতিবার রাতে প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচটি ৪-৩ গোলে জিতেছে এরিক টেন হাগের দল। অধারাবাহিক পথচলায় দুম্যাচ পর জয়ের জয়ের দেখা পেল তারা। ২২ ম্যাচে ১১ জয় ও ২ ড্রয়ে ৩৫ পয়েন্ট নিয়ে সপ্তম স্থানে টেন হাগের দল। তাদের চেয়ে ৬ পয়েন্ট কম নিয়ে ১১ নম্বরে উলভারহ্যাম্পটন। সমান ম্যাচে ৫১ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে লিভারপুল। সমান ৪৬ পয়েন্ট নিয়ে পরের দুটি স্থানে যথাক্রমে ম্যানচেস্টার সিটি ও আর্সেনাল। সিটি অবশ্য একটি ম্যাচ কম খেলেছে। ২২ ম্যাচে ৪৩ পয়েন্ট নিয়ে চতুর্থ স্থানে টটেনহ্যাম হটস্পার।

মার্কাস র‌্যাশফোর্ড ও গাসমুস হয়লুনের গোলে শুরুতেই ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেয় ইউনাইটেড। প্রথমার্ধে প্রতিপক্ষকে খুব একটা সুযোগও দেয়নি তারা। চিত্রপটে বদল আসতে শুরু করে দ্বিতীয়ার্ধের মাঝপথে। পাবলো সারাবিয়ার গোলে লড়াইয়ে ফেরে উলভারহ্যাম্পটন। পরক্ষণেই অবশ্য স্কট ম্যাকটমিনের লক্ষ্যভেদে ফের দুই গোলের লিড নেয় ইউনাইটেড। খানিক বাদে স্কোরলাইন ৩-২ করেন ম্যাক্স কিলম্যান। যোগ করা সময়ে সমতা টেনে পয়েন্ট পাওয়ার আশা জাগান উলভারহ্যাম্পটনের পেদ্রো নেতো। এরপরই মেইনুর অসাধারণ গোল এবং ইউনাইটেডের স্বস্তি।

গত আগস্টে উলভারহ্যাম্পটনকে ১-০ গোলে হারিয়েই মৌসুম শুরু করেছিল ইউনাইটেড। এবারের জয় লিগ টেবিলে এক ধাপ ওপরে উঠল তারা। দলের মতো মৌসুমজুড়ে সময়টা ভালো কাটছে না র‌্যাশফোর্ডের। সে সঙ্গে গত সপ্তাহে শৃঙ্খলা ভাঙায় শুনতে হয়েছে সমালোচনা, পেতে হইছে শাস্তিও। প্রতিকূল পরিস্থিতিতে মাঠে নেমে শুরুতেই দলকে এগিয়ে নেন ইংলিশ ফরোয়ার্ড।

পঞ্চম মিনিটে সুযোগ পেয়েও ডি-বক্সে বল ক্লিয়ার করতে পারেনি স্বাগতিকরা। উল্টো প্রতিপক্ষের পা হয়েই বক্সের বাইরে বল পেয়ে যান র‌্যাশফোর্ড। ঠাণ্ডা মাথায় নিখুঁত শটে ঠিকানা খুঁজে নেন তিনি। চাপ ধরে রেখে ২২তম মিনিটে ব্যবধান বাড়ায় ইউনাইটেড। বাঁ দিকে বাইলাইনের কাছ থেকে লুক শ গোলমুখে পাস দেওয়ার চেষ্টা করেন, স্লাইড করে বল বাইরে পাঠাতে চেয়েছিলেন উলভারহ্যাম্পটনের এক ডিফেন্ডার। উল্টোটাই হয়। বল তার পায়ে লেগে গোলরক্ষকের দুই পায়ের ফাঁক গলে জটলার মধ্যে গাসমুস হয়লুনের পা ছুঁয়ে গোললাইন পেরিয়ে যায়।

বিরতির আগের কয়েক মিনিটে প্রথমে হয়লুন এবং পরে কাসেমিরো জালে বল পাঠান। কিন্তু দুবারই অফসাইডের পতাকা তোলেন লাইন্সম্যান। ৫৫ মিনিটে ব্যবধান বাড়ানোর সুবর্ণ সুযোগ নষ্ট করেন হয়লুন। আলেহান্দ্রো গারনাচোর পাস ছয় গজ বক্সের মুখে পেয়ে যথেষ্ট জোরে শট নিতে পারেননি তরুণ ডেনিশ ফরোয়ার্ড, কোনোমতে পা দিয়ে ঠেকিয়ে দেন গোলরক্ষক। ৭১ মিনিটে সফল স্পট কিকে ব্যবধান কমিয়ে লড়াই জমিয়ে তোলেন সারাবিয়া। ডি-বক্সে প্রতিপক্ষের পেদ্রো নেতোকে ইউনাইটেড মিডফিল্ডার কাসেমিরো ফাউল করলে পেনাল্টি পায় উলভারহ্যাম্পটন।

এরপরই কাসেমিরোকে তুলে স্কট ম্যাকটমিনেকে নামান ইউনাইটেড কোচ। আর মাঠে নামার দুই মিনিটের মধ্যে ব্রুনো ফের্নান্দেসের কর্নারে বল ফাঁকায় পেয়ে অনায়াসে জালে পাঠান স্কটিশ মিডফিল্ডার। উজ্জীবিত উলভারহ্যাম্পটন ৮৫তম মিনিটে ফের ব্যবধান কমায়। তাদের কর্নার ক্লিয়ার করতে ব্যর্থ হয় ইউনাইটেড। এরপর সতীর্থের পা ঘুরে ছয় গজ বক্সে পেয়ে গোলটি করেন কিলম্যান। ৯ মিনিট যোগ করা সময়ের পঞ্চম মিনিটে ইউনাইটেডকে স্তব্ধ করে দেন নেতো। দারুণ এক প্রতি-আক্রমণে ডি-বক্সে ঢুকে কাছের পোস্ট দিয়ে গোলটি করেন পর্তুগিজ ফরোয়ার্ড।

ম্যাচ শেষের তখন বাকি আর মিনিট দুয়েক। সহজ জয়ের সম্ভাবনা থেকে ইউনাইটেড শিবিরে তখন পয়েন্ট হারানোর শঙ্কা। সেই সময়ে নিজেকে মেলে ধরলেন মেইনু। ১৮ বছর বয়সি এ ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার দারুণ নৈপুণ্যে একজনকে কাটিয়ে আরেকজনকে ফাঁকি দিয়ে কোনাকুনি শটে বল পাঠালেন জালে। জয়ের আনন্দে ফেটে পড়ল ইউনাইটেড। গত রোববার এফএ কাপে নিউপোর্ট কাউন্টির বিপক্ষে ইউনাইটেডের জার্সিতে প্রথম গোল করেন মেইনু। সেই ধারাবাহিকতায় এবার করলেন দুর্দান্ত গোল।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close