ক্রীড়া প্রতিবেদক

  ০৯ মে, ২০২৪

এমন পারফরম্যান্সেও উদ্বিগ্ন নন লিটন

ব্লেসিং মুজারাবানির বল একবার স্কুপ করতে গিয়ে ব্যর্থ হলেন, পরের বলে আবার একই অবস্থা। পর পর দুবার আগে থেকে ঠিক করে স্কুপের চেষ্টা গিয়ে না পেরে ক্ষান্ত হলেন না লিটন দাস। তৃতীয় বলে আবারও একই চেষ্টায় গিয়ে স্টাম্পে টেনে হলেন বোল্ড। বাজে ছন্দে থাকা ব্যাটারের জন্য আউটের এমন ধরন বিশ্বকাপের আগে তৈরি করেছে বড় প্রশ্নের জায়গা। তবে লিটন নিজে বলেছেন, নির্দিষ্ট চিন্তা থেকেই এ বিকল্প শটের খোঁজে ছিলেন তিনি। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম তিন ম্যাচে রান না পেলেও সামনেই তার ব্যাট হাসবে বলেও জানান লিটন।

অন্য সংস্করণে রান খরায় থাকা লিটন টি-টোয়েন্টিতেও টেনে আনেন নিজের দুঃসময়। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে ১ রান করে বোল্ড হওয়ার পর দ্বিতীয় ম্যাচে ভালো শুরু পেয়েছিলেন। ৯ বলে ১৭ থেকে গুটিয়ে গিয়ে পরে আউট হন ২৫ বলে ২৩ করে। তৃতীয় ম্যাচে ১৫ বলে ১২ রান করে আউট হন উইকেট ছুঁড়ে। ৩ ম্যাচে তার রান ৩৬, স্ট্রাইকরেট ৮৩।

চট্টগ্রামে তৃতীয় টি-টোয়েন্টির পর অফিসিয়াল ব্রডকাস্টার টি-স্পোর্টসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে লিটন স্বীকার করেন, তিনি নেই নিজের চেনা রূপে, ‘অবশ্যই (চেনা রূপে নেই)। চেষ্টা করছি, হচ্ছে না। পরিশ্রম করছি। এমন না যে পরিশ্রম করছি না। অনেক সময় আপনি পরিশ্রম করবেন, কিন্তু ক্রিকেট তো এটা। হতেই পারে। এটা নিয়ে আমি উদ্বিগ্ন না। চেষ্টা করছি। অবশ্যই আমার ভালো করা উচিত। দেখা যাক আরো দুটো ম্যাচ আছে। আমি যেভাবে টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলার চেষ্টা করি, সেভাবেই খেলছি। আশা করি সামনেই আমার ব্যাট হাসবে।’

টি-টোয়েন্টিতে স্কুপ শট খুব কার্যকর। সেটা যেকোনো সময় মারার দরকার হতে পারে। সেই শটের চেষ্টায় গিয়ে কেউ আউটও হতে পারেন। তবে লিটন গতকাল আগে থেকেই স্কুপ মারবেন এমন চিন্তায় গিয়ে বোলারকে করে দেন সুযোগ। ডেলিভারির আগেই স্ট্যান্স নিয়ে নিয়ে বুঝিয়ে দেন কি করতে যাচ্ছেন। পর পর তিনবার এমন করায় বোলারের জন্য তাকে চেপে ধরা হয়েছে সহজ।

ওই শটের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে তিনি বলেছেন, পরিস্থিতি ও ফিল্ডিং পজিশন অনুযায়ী ওটা ছিল সেরা বিকল্প, ‘না না তেমন না (জোর করে স্কুপ মারা)। আমার কাছে মনে হয়েছিল ওটাই আমার কাছে আদর্শ (বিকল্প)। এজন্য আমি এটা চেষ্টা করেছি। দেখেন ব্যাটে লেগে স্টাম্পে লেগেছে। এটা যদি ওদিক দিয়ে চলে যেত, তাহলে বাউন্ডারি পেয়ে যেতাম। এটা ক্রিকেটের একটা অংশ। একটা ব্যাটারের এরকম হবেই। কোনো সময় ভালো শট খেলেও আউট হয়ে যাবেন। কোনো সময় খারাপ খেলেও রান পেয়ে যাবেন। চেষ্টা করে যাচ্ছি।’

বিশ্বকাপের আগে চলতে থাকা আরো নানামুখী আলোচনা সমালোচনার জবাব দিয়েছেন কুড়ি ওভারের ক্রিকেটে দেশের সফলতম ওপেনার।

কিছু গণমাধ্যমে বলা হচ্ছে অনুশীলন কম করছেন?

‘গণমাধ্যমকে আমার পক্ষ থেকে কিছু বলার নেই। আমার কাজ আমি করে যাচ্ছি। সেটা যদি হোটেলে থেকেও হয়, ওটা যদি উন্নতির কাজ হয় ওটাও করব। আসলে মানুষ সব সময় ফলাফল আশা করে। আপনি যদি টানা পাঁচদিন অনুশীলন না করেন তাহলেও ভালো। কিন্তু নিয়মিত অনুশীলন করেও যদি ব্যর্থ হন তাহলে ভাববে ওটাই খারাপ। ওটা নিয়ে উদ্বিগ্ন না। নিজেকে কতটা দিতে পারছি ম্যাচে, অনুশীলনে ওটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ।’

এ সিরিজে পাওয়ার প্লেতে কেন রান হচ্ছে না?

‘যেদিন দেখবেন উইকেট খুব ভালো ৬০ হবে (পাওয়ার প্লেতে)। শুধু আমরা সংগ্রাম করছি তা না, জিম্বাবুয়ে দলও সংগ্রাম করছে। গত তিনটা ম্যাচে দেখছি নতুন বল খেলা সবার জন্য চ্যালেঞ্জিং ছিল। শুধু আমার জন্য না সবার জন্যই। যখন একটা জিনিস সবার জন্য সমস্যা হবে তখন কিছু কঠিন আছে। এটাও মানতে হবে আপনি যাবেন আর বল হিট করবেন, বাউন্ডারি হয়ে যাবে এমন না। উইকেট যেভাবে পারমিট করবে গড়টা ওভাবেই যাবে।’

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এমন হলে শক্ত প্রতিপক্ষের বিপক্ষে কি হবে?

‘বাইরে থেকে অনেকজন অনেক কিছু ভাবতে পারে প্রতিপক্ষ দুর্বল কিংবা শক্তিশালী। বাংলাদেশ দল কি শক্তিশালী দলের বিপক্ষে ভালো শুরু করেনি? জিনিসটা তেমন না, জিনিসটা হচ্ছে কোন সারফেসে খেলছেন। সারফেস কেমন আচরণ করছে। বোলিং কেমন হচ্ছে। ওটার ওপর নির্ভর করে কত রান করতে পারবেন। যদি খুব ভালো দলও হয় সারফেস পারমিট করলে অবশ্যই রান হবে।’

বিশ্বকাপের আগে উন্নতি সম্ভব কিনা?

‘অবশ্যই। আপনি যত ম্যাচ খেলতে থাকবেন। আপনার ম্যাচের ভেতরে যত সম্পৃক্ততা থাকবে জিনিসগুলো খুঁজে বের করতে পারবেন। অবশ্যই ভালো দিক, এখনো দুটো ম্যাচ আছে। সামনে আরো তিনটা ম্যাচ। তারপর হয়তবা অনুশীলন ম্যাচ থাকবে। এ কয়েকটা ম্যাচের ভেতর আমরা খুঁজে বের করতে পারব কোথা থেকে আমাদের উন্নতি করা দরকার।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close