ক্রীড়া প্রতিবেদক

  ০৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

অবশেষে হারের বৃত্ত ভাঙল সিলেট

একের পর এক হারে বিধ্বস্ত সিলেট স্ট্রাইকার্স। টানা পাঁচ হারের পর রাজনৈতিক ব্যস্ততার কারণ দেখিয়ে সরে যান নিয়মিত অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। গত বিপিএলের ফাইনালিস্টরা ৬ষ্ঠ ম্যাচে এসে পেল জয়ের দেখা। এ টুর্নামেন্টে ধুঁকতে থাকা দুর্দান্ত ঢাকাকে গুঁড়িয়ে জিতেছে মোহাম্মদ মিঠুনের দল।

সিলেটের ১৪৩ রান তাড়ায় ঝড়ো শুরুর চেষ্টা করেছিলেন সাইম আইয়ুব। তবে তাকে ইনিংস বড় করতে দেননি রিচার্ড এনগারাভা। বাঁহাতি এ পেসারের অফ স্টাম্পে পড়ে বেরিয়ে যাওয়া ডেলিভারিতে লেগ বিফোর উইকেট হয়েছেন সাইম। যদিও শুরুতে আউট দেননি আম্পায়ার। তবে রিভিউ নিয়ে পাকিস্তানের এ ওপেনারকে ফেরায় সিলেট। নিজের পরের ওভারে নাইম শেখকেও আউট করেছেন এনগারাভা।

বাঁহাতি এ পেসারের ফুলার লেংথ ডেলিভারিতে বলের লাইন মিস করে বোল্ড হয়েছেন ২ রান করা নাইম। দ্রুত দুই উইকেট হারালেও সেখান থেকে ঢাকাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন অ্যালেক্স রস ও সাইফ। যদিও নিজেদের ভুল বোঝাবুঝিতে তাদের জুটি বড় হয়নি। বেনি হাওয়েলের বলে কভারে পুশ করে এক রান নিতে চেয়েছিলেন কিন্তু তাতে সাড়া দেননি রস। তাতে স্ট্রাইক প্রান্তে ফেরার আগেই নাঈম হাসানের থ্রোতে রান আউট হয়েছেন ১৭ রান করা সাইফ। পরের ওভারে রেজাউর রহমান রাজার দারুণ এক ডেলিভারিতে লেগ বিফোর উইকেট হয়েছেন ২০ রান করা রস।

এদিকে ইরফান শুক্কুরকে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলেন নাঈম। ঢাকার উইকেটকিপার আউট হয়েছেন ৪ রানে। ব্যাট হাতে সময়টা ভালো যাচ্ছে না মোসাদ্দেকের। আগের ওভারে নাঈমের বিপক্ষে ছক্কা ও চার মেরে যেন ছন্দে ফেরার আভাস দিয়েছিলেন তিনি। যদিও শেষ পর্যন্ত ইনিংস বড় করতে পারলেন না ঢাকার অধিনায়ক।

হাওয়েলের নিচু হওয়া ডেলিভারিতে লেগ বিফোর উইকেট হয়েছেন ১১ রান করা মোসাদ্দেক। শেষ ৪ ওভারে যখন ঢাকার ৫৭ রান প্রয়োজন তখন আউট হয়েছেন গুলবাদিন নাইব। এনগারাভার একই ওভারে ফিরেছেন আরাফাত সানি। শেষদিকে তাসকিনের ১১ বলে অপরাজিত ২৭ রানের ইনিংস কেবল ঢাকার হারের ব্যবধান কমিয়েছে।

খানিকটা কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়া হওয়ায় টস জিতে আগে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় দুর্দান্ত ঢাকা। সেটা কাজেও লাগিয়েছে তারা। ইনিংসের প্রথম ওভারেই শরিফুল ইসলাম তুলে নিয়েছেন শামসুর রহমান শুভর উইকেট। বাঁহাতি এ পেসারের দারুণ এক ইয়র্কারের উইকেট থেকে বেরিয়ে এসে খেলতে গিয়ে বোল্ড হয়েছেন তিনি। তাতে গোল্ডেন ডাক মেরে সাজঘরে ফিরতে হয় শামসুরকে। ব্যাট হাতে এবারের বিপিএলটা একেবারেই ভালো যাচ্ছে না নাজমুল হোসেন শান্ত। টুর্নামেন্টের শুরু থেকেই ব্যাট হাতে ছন্দ নেই বাঁহাতি এ ব্যাটার। ঢাকার বিপক্ষেও জ্বলে উঠতে পারলেন তিনি। শরিফুলের অফ স্টাম্পের বাইরের বলে ইনসাইড এজ হয়ে বোল্ড হয়েছেন শান্ত। মাত্র ৩ রান করে সাজঘরে ফেরা শান্ত ব্যর্থ হলেন টানা ৬ ম্যাচেই। পরের বলে বোল্ড হয়েছেন জাকির হাসানও।

বাঁহাতি এ পেসারের অফ স্টাম্পে পড়ে ভেতরে ঢোকা গুড লেংথ ডেলিভারিতে বোল্ড হয়েছেন জাকির। টানা দুই বলে দুই উইকেট নিয়ে সিলেটকে চাপে ফেলে দিয়েছেন শরিফুল। ১৩ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর সিলেটের বিপর্যয় সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন মোহাম্মদ মিঠুন ও সামিত প্যাটেল। তারা দুজনে মিলে গড়েন ৫৭ রানের জুটি। শুরুতে দেখে শুনে খেললেও নবম ওভার থেকে দ্রুত রান তোলায় মনোযোগ দেন তারা। থিতু হওয়ার পর ব্যাট হাতে ঝড় তুলতে গিয়ে আউট হয়েছেন সামিত। আরাফাত সানির ঝুলিয়ে দেওয়া ডেলিভারিতে উড়িয়ে মারতে গিয়ে লং অফে থাকা গুলবাদিন নাইবের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন ৩২ বলে ৩২ রান করা এ ব্যাটার। পরের ওভারে রায়ান বার্লকে ফিরিয়েছেন উসমান কাদির। ডানহাতি এ স্পিনারের বলে খানিকটা অফ সাইডে সরে গিয়ে স্কয়ার লেগ দিয়ে খেলতে চেয়েছিলেন বার্ল। তবে বলের লাইন মিস করে লেগ বিফোর উইকেট হয়েছেন তিনি।

রিভিউ নিলেও শেষ পর্যন্ত রক্ষা হয়নি ১ রান করা বার্লের। এদিকে অধিনায়কত্ব পেয়েই হাফ সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন মিঠুন। বাজে ফর্মের কারণে গত ম্যাচে বাদ পড়েছিলেন তিনি। তবে মাশরাফি বিন মর্তুজা বিপিএল থেকে বিরতি নেওয়ায় অধিনায়ক করা হয় মিঠুনকে। নিজের ফেরার ম্যাচেই ঢাকার বিপক্ষে ৩৬ বলে পঞ্চাশ ছুঁয়েছেন ডানহাতি এই ব্যাটার। এদিকে ব্যাটিংয়ে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি বেনি হাওয়েল। সানির বলে বোল্ড হয়ে ফিরেছেন ১১ রান করা এ ব্যাটার। শেষদিকে ৯ বলে ২১ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেছেন আরিফুল ইসলাম। দারুণ ব্যাটিংয়ে হাফ সেঞ্চুরি করা মিঠুন আউট হয়েছেন শেষ ওভারে। ৫৯ রান করা সিলেটের অধিনায়ককে ফিরিয়েছেন তাসকিন আহমেদ।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close