ক্রীড়া প্রতিবেদক

  ২৭ জানুয়ারি, ২০২৪

বিপিএলে খুলনার হ্যাটট্রিক জয়

নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের অন্যতম সেরা খেলোয়াড় সাকিব আল হাসান। তবে সাম্প্রতিক সময়ে চোখের সমস্যায় ভুগছেন এ অলরাউন্ডার। সে কারণেই হয়তো ৮ নম্বরে ব্যাটিংয়ে নামেন তিনি। তবে টপঅর্ডার কিংবা মিডল অর্ডারে তার অভাব ঘোচাতে পারেননি তার সতীর্থরা। শুধু লড়াই করেছেন আফগান তারকা মোহাম্মদ নবি। ফলে খুলনা টাইগার্সের কাছে হারতে হয় রংপুর রাইডার্সকে। এবারের বিপিএলে প্রথমবারের মতো আগে ব্যাট করে জয় পেল কোনো দল। রংপুরকে ২৮ রানে হারিয়ে হ্যাটট্রিক জয় তুলে নিল এনামুল হক বিজয়ের দল।

মাঝারি লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি রংপুরের। তারা দলীয় ৬ রানেই হারায় বাবর আজমের উইকেট। পাকিস্তানি এ ব্যাটার স্বদেশি ওয়াসিম জুনিয়রের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে আউট হয়েছেন। ওয়াসিমের করা গুড লেন্থের বলে ফ্লিক করতে চেয়েছিলেন বাবর। তবে ব্যাটে লাগেনি। বল সোজা আঘাত হানে প্যাডে। আম্পায়ার আউট দিয়ে দেন। তবু রিভিউ নিয়েছিলেন বাবর। তবে রক্ষা হয়নি। টিভি রিপ্লেতে দেখা যায় বলের অল্প অংশ লেগ স্টাম্প স্পর্শ করেছে। পিচিং এবং ইম্পেক্ট দুটোই ছিল লাইনে। ফলে ফিরতে হয় বাবরকে।

এরপর বেশিক্ষণ থিতু হতে পারেননি ব্র্যান্ডন কিং। ফরচুন বরিশাল ও সিলেট স্ট্রাইকার্সের বিপক্ষে রানের খাতাই খুলতে পারেননি কিং। খুলনার বিপক্ষে হ্যাটট্রিক ডাকের শঙ্কা ওড়ালেও এক রান করে ফিরতে হয়েছে তাকে। মোহাম্মদ নাওয়াজের ফুলার লেংথের বলে লাইন মিস করে বোল্ড হয়েছেন তিনি। মাত্র ১১ রানে ২ উইকেট হারিয়ে ধুঁকছে রংপুর। একপ্রান্ত আগলে রাখা রনি তালুকদারকে আউট করেছেন দাসুন শানাকা। লঙ্কান এ পেসারের বলে লংঅফ দিয়ে উড়িয়ে মারতে চেয়েছিলেন রনি। সীমানায় থাকা মুকিদুল ইসলাম মুগ্ধ ডাইভ দিয়ে দারুণ ক্যাচ নিয়েছেন। এরপর মোহাম্মদ নাওয়াজ আউট করেছেন দারুণ খেলতে থাকা শামীম পাটোয়ারিকে। ডিপ স্কয়ার লেগে সহজ ক্যাচ নিয়েছেন নাহিদুল ইসলাম।

আজমতউল্লাহ ওমরজাই আউট হয়েছেন চড়াও হতে গিয়ে নাসুম আহমেদের ওপর। লং অফে তার দারুণ ক্যাচ নিয়েছেন মেহেদী হাসান। দাসুন শানাকার ডিরেক্ট থ্রুতে রান আউট হয়েছেন ১ রান করা নুরুল হাসান সোহান। এদিন ৭ নম্বরে খেলতে নেমে ব্যর্থ হয়েছেন সাকিব আল হাসানও। তিনি শানাকার করা অফ স্টাম্পের বাইরের লাফিয়ে ওঠা বলে জায়গা করে খেলতে চেয়েছিলেন। তবে তা ব্যাটের কানায় লেগে চলে যায় উইকেটরক্ষক এনামুল হক বিজয়ের হাতে।

রান তোলার চাপে দ্রুত আউট হয়েছেন শেখ মেহেদীও। শানাকার স্লোয়ার ডেলিভারিতে এক্সট্রা কভারের পর দিয়ে উড়িয়ে মারতে গিয়ে সীমানার কাছে ক্যাচ দিয়েছেন ১২ রান করা এ ব্যাটার। একই ওভারে টানা দুই বলে দুই চার মারা রিপন মণ্ডলকেও ফিরিয়েছেন শানাকা। শেষ দিকে ৫০ রান করা নবিকে বিদায় করে খুলনার জয় নিশ্চিত করেন ওয়াসিম জুনিয়র। খুলনার হয়ে একাই চার উইকেট নিয়েছেন শানাকা।

এদিকে আগের ম্যাচে ফরচুন বরিশালের বিপক্ষে ব্যাট হাতে তাণ্ডব চালিয়েছিলেন এনামুল হক বিজয় ও এভিন লুইস। তাদের দুজনের উদ্বোধনী জুটিতেই বাজিমাত করেছিল তারা। তবে এদিন তাদের জুটিই গড়তে দেননি শেখ মেহেদী হাসান। আজমতউল্লাহ ওমরজাইয়ের সুইংয়ে খানিকটা খাবি খাচ্ছিলেন বিজয়। পরের ওভারে রান তুলতে গিয়ে শেষ পর্যন্ত দিয়ে গেলেন নিজের উইকেট।

মেহেদীর টসড আপ ডেলিভারিতে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে মিড উইকেটে রনি তালুকদারের হাতে ধরা পড়েছেন ৭ বলে রানের খাতা খুলতে না পারা বিজয়। খুলনার অধিনায়ক ফিরলেও দ্রুত রান তুলতে থাকেন লুইস। তাকে অবশ্য সঙ্গ দিতে পারেননি মাহমুদুল হাসান জয়। পাওয়ার প্লে শেষ হওয়ার আগে মেহেদীর বলে উড়িয়ে মারতে গিয়ে লং অনে ব্রেন্ডন কিংয়ের হাতে ধরা পড়েন। জয়ের ব্যাট থেকে এসেছে ৭ রান। চারে নেমে সুবিধা করতে পারেননি আফিফ হোসেনও। হাসান মাহমুদের লেংথ ডেলিভারিতে পুল করতে চেয়েছিলেন বাঁহাতি এ ব্যাটার। তবে টপ এজ হলে নুরুল হাসান সোহানের গ্লাভসে ধরা পড়তে হয় ৪ রান করা আফিফকে। ৫০ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি লুইসও। শুরু থেকে ঝড়ো ব্যাটিং করতে থাকা ওয়েস্ট ইন্ডিজের এ ব্যাটারকে হাসান সেঞ্চুরি করতে দেননি হাসান মাহমুদ।

ডানহাতি এ পেসারের শর্ট লেংথ ডেলিভারিতে পুল করতে গিয়ে এজ হয়ে সোহানের গ্লাভসে ধরা পড়েন ৩৭ রান করা লুইস। ৬৪ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর অবশ্য দারুণ এক জুটি গড়ে তোলেন শানাকা ও নওয়াজ। তারা দুজনে মিলে যোগ করেন ৭৭ রান। শানাকাকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন হাসান। ডানহাতি এ পেসারের ফুলটস ডেলিভারিতে স্কুপ করতে গিয়ে বলের লাইন মিস করে বোল্ড হয়েছেন শ্রীলঙ্কার এ ব্যাটার। শানাকার ব্যাট থেকে এসেছে ৪০ রান। শানাকা না পারলেও শেষ ওভারে গিয়ে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন নওয়াজ। রিপন মণ্ডলের বলে ছক্কা মেরে ৩৩ বলে পঞ্চাশ ছুঁয়েছেন তিনি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close