ক্রীড়া প্রতিবেদক

  ২৯ মার্চ, ২০২৩

বিশ্বের শীর্ষ দল হওয়ার স্বপ্ন বুনছেন তাসকিন

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ধুঁকতে থাকা বাংলাদেশ গত কিছুদিন ধরে পাচ্ছে সাফল্যের দেখা। ওয়ানডে ক্রিকেটে পায়ের নিচে ভিত খুঁজে পাওয়ার পর টি-টোয়েন্টিতেও লেগেছে ইতিবাচক বদলের হাওয়া। এখনো প্রত্যাশার চেয়ে অবস্থান বেশ দূরে হলেও অনেক বড় স্বপ্ন দেখছেন ক্রিকেটাররা। পেসার তাসকিন আহমেদ জানালেন, বিশ্বের একদম শীর্ষ দল হতে চান তারা, সেই স্বপ্ন বুনছেন। এগিয়ে যেতে অনুসরণ করছেন প্রক্রিয়া। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এখন পর্যন্ত সেরা হওয়ার দাবি জানাতে পারেনি বাংলাদেশ। আইসিসি আসরগুলোতে সর্বোচ্চ সাফল্য ২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়নস ট্রফির সেমিফাইনাল খেলা। এশিয়া কাপে একাধিকবার ফাইনাল খেললেও কখনো কাপ জেতা হয়নি। আয়ারল্যান্ডে ২০১৯ সালে একটি ত্রিদেশীয় আসরের ট্রফি ছাড়া বাংলাদেশের কোনো রকম বড় আসরেই নেই কোনো ট্রফি। টেস্ট তো তলানির অবস্থান থেকে বের হওয়া যায়নি সেভাবে।

এসব বাস্তবতা মানলেও বড় স্বপ্ন দেখতে বাধা কোথায়? আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম টি-টোয়েন্টি জেতার পর অনেক দূরে, অনেক উচ্চতায় তাকালেন তাসকিন, ‘ওটা (পরিপক্বতা) মিসিং ছিল বলেই ওখান থেকে শিখে ভালো কিছু দেখাতে পারছি। সামনে আরো ভালো কিছু দেখাব ইনশাল্লাহ। ক্রমে আমরা প্রক্রিয়া অনুযায়ী উন্নতি করছি, এটা গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের ভুলগুলো বারবার পুনরাবৃত্তি হচ্ছে কি না, এটা গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের ভুলগুলো কিন্তু কমে আসছে যে কোনো ফরম্যাটে। তার মানে আমরা ভুল থেকে শিখছি, প্রক্রিয়াটা দারুণ যাচ্ছে এবং আমরাও শিখতে আগ্রহী। ‘আমাদের স্বপ্ন আমরা বিশ্বের শীর্ষ দল হব, সেই প্রক্রিয়া অনুযায়ী আমরা ক্রিকেট খেলছি এবং এগোচ্ছি। আস্তে আস্তে মাঠেও দৃশ্যমান হচ্ছে। যদি এভাবে ধারাবাহিকতা থাকে, সামনে অনেক বড় বড় ইভেন্ট আছে, ওসবেও প্রতিফলন পড়বে ইনশাল্লাহ।’

গত দুই বছরে দ্বিপক্ষীয় সিরিজগুলোতে বাংলাদেশে সাফল্যের অন্যতম কারিগর পেসাররা। একসঙ্গে উঠে আসা কয়েকজন পেসারই আছেন ছন্দে। তাসকিন আহমেদ, ইবাদত হোসেন, হাসান মাহমুদদের ঝলকে বরং পেছনে পড়ে আছেন মোস্তাফিজুর রহমানই। তাসকিন মনে করছেন বিশ্বমানের পেসার হয়ে প্রতিপক্ষের ওপর প্রভাব তৈরি করবেন তারা। এগুবেন ধাপে ধাপে, সবাই সবার দিক থেকে চেষ্টা করছে। ইউনিট হিসেবে যদি সবাই বিশ্বমানের বোলার থাকি, এই ইউনিটকে সামলাতে কিন্তু অন্যদের সমস্যাই হবে। বড় বড় দলে কিন্তু একটা নয়, চার-পাঁচটা বিশ্বমানের ফাস্ট বোলার থাকে। আমরাও চাচ্ছি, আমাদেরও এরকম হোক। যেহেতু আমরা সবাই পরিবারের অংশ, ফাস্ট বোলাররা, ভাইয়ের মতো। সবাই সবার ভালো চাই এবং সবশেষ দুই-আড়াই বছরে উন্নতিও চোখে পড়ছে। এখনো আমাদের পরের ধাপে যাওয়া বাকি। আমি মনে করি, আমরা সঠিক পথে আছি। মানসিকতা ভালো। যদি এই প্রক্রিয়ায় থাকি, আমাদের এই স্বপ্নও পূরণ হবে যে আমরা সবাই বিশ্বমানের হব।

ঘরের মাঠে একটা সময় পেসারদের হাতে বল তুলে দিতেই দ্বিধায় ভুগতেন বাংলাদেশের অধিনায়করা। স্পিন শক্তির ওপর ভরসা করেই আসত টুকটাক সাফল্য। সেই দিন গত হয়েছে বেশ আগে। এখন দেশে ও দেশের বাইরে বাংলাদেশের সাফল্যে বড় ভূমিকা রাখছে পেস আক্রমণ। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে চলতি সিরিজেও দেখা যাচ্ছে সেই ঝাঁজ। প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ক্যারিয়ারসেরা বল করা তাসকিন আহমেদ জানালেন, একে অন্যের প্রতিদ্বন্দ্বী না, দলের জন্য একে অন্যের সহায়ক হিসেবে নিজেদের নিংড়ে দিচ্ছেন তারা।

তরুণ হাসান যেভাবে বল করছেন, তাতে কিছুটা অভিজ্ঞ তাসকিনরাও আরো ভালো করার চাপ অনুভব করেন কি না। ম্যাচ শেষে এমন একটি প্রশ্ন করা হয়েছিল তাকে। জবাবে তাসকিন জানান তারা মূলত একে অন্যের পরিপূরক, ‘আরও ভালো করুক (হাসান), ১০ উইকেট করে নিক আমি চাই। কারণ আমি তো আগেই বললাম পাঁচজনই ভাই। সবাই যত ভালো করবে, প্রতিপক্ষ চাপ অনুভব করবে। কারণ ওরা কি আমার প্রতিদ্বন্দ্বী কি না? না। আমিই আমার প্রতিদ্বন্দ্বী। আমি চাইবো সবাই মিলে ভালো করতে। তাহলে বিশ্ব ক্রিকেটে একটা হুমকি যাবে যে বাংলাদেশের পেস বোলাররা গ্রো করছে। ১০ উইকেট নিলেও আমার কোনো ক্ষতি নাই বা আমার উন্নতি নাই। আমার প্রতিদ্বন্দ্বী আমি, আমার বেস্ট রেকর্ডটা ভেঙে আরো ভালো করতে চাই। দোয়া করি সবাই ভালো করুক।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close