আন্তর্জাতিক ডেস্ক

  ০৪ জুন, ২০২০

ফ্লয়েড হত্যা

কারফিউ ভেঙে বিক্ষোভ অব্যাহত

পুলিশ হেফাজতে কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে টানা অষ্টম দিনের মতো প্রতিবাদ অব্যাহত রয়েছে। রয়টার্স জানায়, গত মঙ্গলবার রাতেও যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান শহরগুলোতে হাজার হাজার লোক রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ বিক্ষোভে শামিল হয়েছে। কঠোর কারফিউ, মেয়রদের অনুরোধ এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পদক্ষেপ কিছুই মানেনি তারা। ২৫ মে মিনেসোটার মিনিয়াপোলিসে পুলিশের নির্যাতনে ফ্লয়েডের মৃত্যু হয়। ঘটনার কয়েকটি ভিডিও সামনে আসার পর শুরু হওয়া প্রতিবাদ পুরো যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। বিক্ষোভ-সহিংসতা নিয়ন্ত্রণে যুক্তরাষ্ট্রের অন্তত ৪০টি শহরে কারফিউ জারি করা হয়। এসব শহরের মধ্যে রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসি ও সবচেয়ে জনবহুল শহর নিউইয়র্কও আছে। নিউ ইয়র্কে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে। এখানে কিছু লুটপাটের ঘটনাও ঘটেছে। নিউইয়র্কের পাশাপাশি লস অ্যাঞ্জেলস, ফিলাডেলফিয়া, আটলান্টা ও সিয়াটলেও বড় ধরনের প্রতিবাদ সমাবেশ ও মিছিল হয়েছে।

ওয়াশিংটন ডিসিতে হোয়াইট হাউস সংলগ্ন লাফায়েট পার্কে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছে প্রতিবাদকারীরা প্রেসিডেন্টে ডনাল্ড ট্রাম্প হোয়াইট হাউস থেকে হেঁটে নিকটবর্তী সেইন্ট জনস এপিস্কোপাল গির্জায় গিয়ে যেন ছবি তুলতে পারেন তার ব্যবস্থা করতে সোমবার পার্কটিতে অবস্থান নেওয়া বিক্ষোভকারীদের ওপর চড়াও হয় পুলিশ। রাত নেমে আসার পর কারফিউয়ের মধ্যেই লাফায়েট পার্ক ও রাজধানীর অন্যান্য স্থানে বিক্ষোভ চলতে থাকে। সেখানে স্লোগান দেওয়া হয় ‘নো জাস্টিস, নো পিস’। নিউইয়র্ক শহরে রাত ৮টায় (স্থানীয় সময়) কারফিউ শুরু হলেও কয়েক হাজার বিক্ষোভকারীর প্রতিবাদ মিছিল চলতে থাকে। মাথার ওপর্ পুলিশের হেলিকপ্টার চক্কর দিলেও তা তারা গ্রাহ্য করেননি। মিছিলটি ম্যানহটন সেতুর দিকে যাওয়ার পর সেখান থেকে প্রতিবাদকারীরা রাস্তার মুখে দাঁড়িয়ে থাকা পুলিশ সদস্যদেরও বিক্ষোভে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানান। লস অ্যাঞ্জেলেসে কয়েকশ প্রতিবাদকারী মিছিল করে হলিউড বুলেভার্ডের বিখ্যাত ল্যান্ডমার্কের সামনে গিয়ে জড়ো হন। প্রতিবাদকারীদের অন্য একটি দল শহরের কেন্দ্রস্থলে পুলিশ সদর দফতরের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ দেখায়। তাদের কেউ কেউ সামনে লাইন করে দাঁড়িয়ে থাকা পুলিশ কর্মকর্তাদের জড়িয়ে ধরেন এবং করমর্দন করেন।

ডেনভার ও সিয়াটলেও কয়েকশ প্রতিবাদকারী জড়ো হয়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছে। রাত

নেমে আসার পরও সেখানে পরিস্থিতি মোটামুটি শান্তিপূর্ণ ছিল।

বিবিসি জানিয়েছে, ফ্লয়েডের মৃত্যুর ঘটনায় মিনেসোটা রাজ্য কর্তৃপক্ষ নাগরিক অধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ এনেছে তাদের পুলিশ বিভাগের বিরুদ্ধে। এক সংবাদ সম্মেলনে গর্ভনর টিম ওয়ালজ বলেছেন, ‘প্রজন্মের গভীরে থাকা প্রথাগত বর্ণবাদ’ শেকড়শুদ্ধ উপড়ে ফেলার পরিকল্পনা নিয়ে তারা বিষয়টি তদন্ত করবেন। অন্যদিকে ফ্লয়েডের নিজের শহর টেক্সাসের হিউস্টনে তার স্মৃতিতে একটি শান্তিপূর্ণ পদযাত্রার আয়োজন করা হয়; ফ্লয়েডের পরিবারের সদস্যরাও তাতে অংশ নেন। ফ্লয়েডের স্মৃতি প্রতি সম্মান জানাতে এই পদযাত্রায় ৬০ হাজার লোক অংশ নিয়েছে বলে হিউস্টনের

মেয়রের দফতর জানিয়েছে। ওয়াশিংটন ডিসিতে বিমানে করে ১ হাজার ৬০০ সৈন্যকে এনে শহরের আশপাশের ঘাঁটিগুলোতে রাখা হয়েছে। তারা ‘সতর্কাবস্থায়’ আছেন বলে পেন্টাগনের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close