অধ্যাপক ডা. শুভাগত চৌধুরী
মানসিক চাপ দূর করার ১০ উপায়
মানসিক চাপ এমন এক আবেগ, যার সঙ্গে আমাদের পরিচয় হওয়া খুব স্বাভাবিক। দৈনন্দিন টানাপড়েন এটি তৈরি হওয়ার অন্যতম কারণ। আমাদের শরীর ও মনের ওপর এর প্রভাব মারাত্মক। ফলে একে সামাল দিয়ে চলতে হয়। জীবনে আঘাত আসে, চ্যালেঞ্জ আসে। এজন্য মানসিক চাপ তৈরি হওয়া স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া। কিন্তু এটি ক্রনিক হলে বিপদ।
মেনে চলুন ১০টি উপায় : চর্চা করুন মনোযোগ ধরে রাখার। এ জন্য ধ্যানের চর্চা করা যায়। এতে লক্ষ্য থাকবে স্থির, মন বিক্ষিপ্ত হবে না। এতে শরীর থাকবে শিথিল, স্নায়ু হবে শান্ত, চিন্তা আর আবেগের ওপর ফিরে আসবে নিয়ন্ত্রণ।
নিয়মিত ব্যায়াম করুন। শরীরচর্চায় নিঃসৃত হয় সুখের হরমোন এন্ডরফিন। এরা মেজাজ চনমনে করে। এন্ডরফিন হলো মুড লিফটার। দ্রুত হাঁটা, যোগব্যায়াম বা জিমে যাওয়ার অভ্যাস আনবে মনের শান্তি।
সুষম খাদ্য খাওয়ার অভ্যাস করুন। ফল, শাকসবজি, শস্যদানা, মাছ, মাংস, ডিম, বাদাম ইত্যাদি খাবার খেলে মানসিক চাপ প্রতিরোধে শক্তি বাড়ে। বাড়তি মিষ্টি, লবণ, প্রক্রিয়াজাত খাবার, কোমলপানীয় ইত্যাদি বাদ দিতে হবে। এসব খাবার মানসিক চাপ তৈরির জন্য দায়ী।
চাই সুনিদ্রা। রাতে ভালো ঘুম চাই মানসিক চাপ মোকাবিলা করার জন্য। এ জন্য স্লিপ হাইজিনচর্চাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। সময়মতো ঘুমাতে যাওয়া ও ওঠা জরুরি বিষয়। শোয়ার ঘর হতে হবে নীরব, ঘুমানোর আগে মোবাইল ফোনসহ সব ধরনের ডিভাইস থাকবে বন্ধ। শোয়ার ঘর হবে অন্ধকার আর স্বস্তিদায়ক। ঘুমানোর আগে চা-কফি পানের অভ্যাস বাদ দিতে হবে।
লক্ষ্য হতে হবে বাস্তববাদী। অবাস্তব লক্ষ্য থাকলে মানসিক চাপ আর হতাশা আসবে। বড় কাজ ছোট ছোট ভাগে করলে মানসিক চাপ কম হবে।
চাই সঠিক সময় ব্যবস্থাপনা। এটি ঠিকঠাক থাকলে কাজের ভারে বিপর্যস্ত হতে হবে না। এ জন্য কাজের তালিকা করুন।
প্রিয়জনের সহযোগিতা জরুরি। আত্মীয়স্বজন, পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখুন।
না বলতে শিখুন। নিজের সীমা জানা ভালো। সেই সীমার মধ্যে থেকে কাজ করুন। বাড়তি কাজে না বলুন। তাতে মানসিক চাপ থাকবে না।
আরাম বা রিলাক্স করার উপায় খুঁজুন। ডিপ রিলাক্সেশন টেকনিক, শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম, পেশি শিথিল করার কৌশল মানসিক চাপ সামাল দেওয়ার কার্যকর উপায়।
যেকোনো প্রয়োজনে সবার কথা না শুনে পেশাদার মনোবিদের পরামর্শ নিন।
লেখক : সাবেক অধ্যক্ষ
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল
"