মাহমুদ আহমদ

  ২৫ জুন, ২০১৭

ঈদ হোক সবার জন্য আনন্দময়

মহান আল্লাহপাকের দরবারে শুকরিয়া জ্ঞাপন করছি, তিনি আমাদের সুস্থতার সঙ্গে রমজানের দিনগুলো অতিবাহিত করার শক্তি দান করেছেন। আজ চাঁদ দেখা গেলে কাল ঈদ উদ্যাপন করব। সারা মুসলিম জাহানে সিয়াম-সাধনা এবং ত্যাগের মধ্য দিয়ে সর্বশক্তিমান আল্লাহর কাছে নিজেকে সমর্পণ করে বান্দা তার অতীতের সব ভুল-ভ্রান্তির ক্ষমা চেয়ে পরবর্তী জীবনে এ প্রশিক্ষণলব্ধ আমলে সালেহ যথাযথ কাজে লাগিয়ে সিরাতুল মুস্তাকিমের পথে চলার অঙ্গীকারে প্রত্যয়ী হওয়ার এক সফল অনুষ্ঠান এ পবিত্র ঈদ। যে আনন্দ বিশ্ববাসীর মাঝে বারবার ফিরে আসে তাকেই ঈদ বলা হয়। ইসলাম ধর্ম বিকশিত হওয়ার বহুপূর্ব থেকে মর্ত্যবাসীদের বিভিন্ন জাতি, গোষ্ঠী ও ধর্মের অনুসারীরা নানা ভাব ও ভঙ্গিতে ঈদ পালন করত। তবে ইসলাম ধর্মেই কেবল ঈদকে সর্বজনীন ইবাদত রূপে রূপায়ণ করা হয়েছে।

ঈদ সম্পর্কে হাদীসে বর্ণিত হয়েছে, হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন হজরত রাসূলে করীম (সা.) মদিনাতে উপস্থিত হয়ে দেখতে পান, সেখানকার অধিবাসীরা বছরে দুটি দিন (পায়মুক ও মিহিরজান) খেলাধুলা ও আনন্দ উৎসব করে। হুজুর (সা.) জিজ্ঞেস করলেন, এ দুটি কিসের দিন? সাহাবায়ে কেরাম উত্তর দিলেন, জাহেলিয়াতের যুগে আমরাও এ দুটি দিনে খেলাধুলা ও উৎসব পালন করতাম। হুজুর (সা.) এ কথা শুনে বললেন, ‘আল্লাহপাক তোমাদেরকে এ দুই দিনের পরিবর্তে অন্য দুটি উত্তম দিন প্রদান করেছেন। আর তা হলো, ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা।’ (আবুদাউদ, তিরমিজি)।

ঈদ আমাদের এ নিয়তে উদ্যাপন করা উচিত-যাতে আমাদের সৃষ্টিকারী আল্লাহর সন্তুষ্টির প্রতি আমাদের মনোযোগ নিবদ্ধ থাকে, তার ইবাদতের প্রতি দৃষ্টি থাকে। আমরা যদি সর্বদা এই চিন্তা করি যে, নেকি ও তাকওয়াকে প্রতিষ্ঠিত ও প্রচলন করাই আমাদের আসল উদ্দেশ্য, তাহলে আমাদেরকে অবশ্যই তার নির্দেশমতো চলতে হবে। আর এ শিক্ষাই কিন্তু আমরা রমজানের রোজা আর ঈদ থেকে লাভ করি। এক মাসের রোজা এবং ঈদ দুটিই আমাদের আনুগত্যের শিক্ষা দেয়। আমরা এক মাস রোজা রাখি তার পর ঈদ উদ্যাপন করি, এসব কিন্তু আমরা আল্লাহর আনুগত্যের খাতিরেই করে থাকি। ঈদ শুধু আনন্দ উৎসবের নাম নয় বরং মহান রাব্বুল আলামিনের পক্ষ থেকে মুসলিম মিল্লাতের জন্য একটি বিশেষ রহমত ও আল্লাহর দেওয়া আদেশ। যার মাধ্যমে আমরা আল্লাহর নৈকট্য ও সন্তুষ্টি অর্জন করতে পারি। অন্য কথায় ঈদ হলো তাকওয়া ও ত্যাগের মহিমার সাফল্যের বিজয়ের প্রতীক ও আনন্দের দ্যোতক। বলা যায়, আল্লাহ ও রাসুল (সা.)-এর অপছন্দনীয় সব কাজ থেকে বিরত থাকা এবং সারা মাস রোজা থাকার ফলে হৃদয় থেকে যে আনন্দ বের হয়ে আসে তা-ই প্রকৃত ঈদ। যারা পবিত্র মাহে রমজানের সারা মাস রোজা রেখেছে এবং অন্যান্য ইবাদত গভীর মনোনিবেশ সহকারে করেছে তাদের জন্যই ঈদ প্রকৃত আনন্দের আর এই ঈদ ইবাদতের।

আমরা যখন পুরোপুরি আমাদের গরিব ভাইদের অভাব দূরীকরণের দিকে দৃষ্টি নিবদ্ধ করব তখনই এটা আমাদের প্রকৃত ঈদ উদ্যাপন হবে। মুসলমানের জন্য ঈদ একটি মহা ইবাদত। ঈদের ইবাদতে শরীয়ত নির্দেশিত কিছু বিধিবিধান রয়েছে, যা পালনে সামাজিক জীবনে পারস্পরিক আন্তরিকতা, সহমর্মিতা ও বন্ধন সুসংহত হয়। ঈদুল ফিতরের শরীয়ত দিক হলো, ঈদের নামাজের পূর্বে রোজার ফিতরানা ও ফিদিয়া আদায় করা, ঈদগাহে দুই রাকাত নামাজ আদায় করা, খুতবা শোনা এবং উচ্চস্বরে তাকবির পাঠ করা। মহান আল্লাহপাক আমাদের সবাইকে প্রকৃতঅর্থে ঈদ উদ্যাপন করার তৌফিক দান করুন। আমিন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist