প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ১৮ অক্টোবর, ২০২৪

ফক্স নিউজকে কমলা

কাজ-কর্মে থাকবে নতুনত্ব বাইডেনের চেয়ে হবেন আলাদা

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রেসিডেন্ট প্রার্থী কমলা হ্যারিস বলেছেন, তিনি প্রেসিডেন্ট হলে তার কাজের ধরন বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের চেয়ে ভিন্ন ধরনের হবে। গত বুধবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এমন কথা বলেছেন তিনি। তবে সঞ্চালকের প্রশ্নবানে একপর্যায়ে মেজাজ ধরে রাখতে পারেননি কমলা হ্যারিস। জানা গেছে, আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বেশ জোর দিয়ে তিনি বলেন, তার প্রশাসনিক কাজে-কর্মে থাকবে নতুনত্ব। নেতৃত্ব হবে জো বাইডেনের থেকে আদালাদা।

যুক্তরাষ্ট্রের ডানপন্থি সংবাদমাধ্যম ফক্স নিউজে কমলা হ্যারিসের সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন ব্রেট বেয়ার। অভিবাসন এবং লিঙ্গ রূপান্তরজনিত অস্ত্রোপচার প্রসঙ্গে কথা বলার সময় দুজনের মধ্যে তর্ক হয়েছে। কমলা প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার সময় সঞ্চালক ব্রেট বেয়ারকে বারবারই মাঝপথে কথা বলতে দেখা গেছে। কমলাও তখন তাকে বারবার বলছিলেন, ‘আমাকে শেষ করতে দিন।’

আধাঘণ্টার ওই সাক্ষাৎকারের একটি উল্লেখযোগ্য অংশে কমলার কাছে তার গত সপ্তাহে করা বিভিন্ন মন্তব্য নিয়ে প্রশ্ন করা হয়। কমলা হ্যারিস বলেন, চার বছরের মেয়াদে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের প্রশাসনের অধীনে কাজ করতে গিয়ে তিনি বাইডেনের চেয়ে ভিন্ন কিছু ভাবতে পারেননি। এ নিয়ে রিপাবলিকানরা তাকে ধরাশায়ী করার চেষ্টা করছে। তবে বুধবার সাক্ষাৎকারে ৫৯ বছর বয়সি কমলা বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট হিসেবে আমার কাজ প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কাজের ধারায় হবে না।’

প্রেসিডেন্ট হলে ‘সজীব ও নতুন নতুন ধারণা’ নিয়ে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন কমলা। তিনি বলেন, ‘আমি নেতৃত্বের নতুন প্রজন্মের প্রতিনিধিত্ব করছি।’ গত জুলাইয়ে বাইডেন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেওয়ার পর তার জায়গায় কমলা প্রার্থী হন। মঙ্গলবার বাইডেনও বলেন, ‘কমলা হ্যারিস প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিজের রাস্তা নিজে তৈরি করবেন।’ রিপাবলিকান প্রতিদ্বন্দ্বী ট্রাম্প অভ্যন্তরীণ শত্রুর বিরুদ্ধে সামরিক শক্তি ব্যবহারের যে হুমকি দিয়েছেন, তা নিয়ে তাকে আক্রমণ করেন কমলা। ট্রাম্প সম্পর্কে ডেমোক্রেটিক এ প্রেসিডেন্ট প্রার্থী বলেন, “তিনিই মার্কিন জনগণকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য এবং হেয় করেন। তিনিই ‘অভ্যন্তরীণ শত্রু’ সম্পর্কে কথা বলেন।”

ট্রাম্পের প্রচার শিবির দ্রুতই কমলার সাক্ষাৎকারের বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। তারা সাক্ষাৎকারটিকে ‘লাইনচ্যুত’ বলে উল্লেখ করেছে। ট্রাম্পের মুখপাত্র ক্যারোলিন লেভিট এক বিবৃতিতে বলেন, কমলা খেপে গিয়েছিলেন এবং আত্মপক্ষ সমর্থন করে কথা বলেছেন। মার্কিন নাগরিকরা যেসব সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে, তার দায় তিনি আবারও এড়িয়ে গেছেন। ফক্সের সঙ্গে এটি কমলা হ্যারিসের প্রথম সাক্ষাৎকার ছিল। একই সঙ্গে হোয়াইট হাউসের দৌড়ে থাকা কমলার জন্য সাক্ষাৎকারটি গুরুত্বপূর্ণও। কারণ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আর তিন সপ্তাহেরও কম সময় বাকি আছে এবং এখন পর্যন্ত প্রতিদ্বন্দ্বী ট্রাম্পের সঙ্গে তার হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হওয়ার আভাস আছে। সে অচলাবস্থাকে ভেঙে এগিয়ে যেতে চাইছেন কমলা হ্যারিস।

ডেমোক্রেটিক পার্টির এ নেতা সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় বিভিন্ন প্রশ্নের মুখোমুখি হন। ট্রাম্পের প্রচারণাসংক্রান্ত বিজ্ঞাপন নিয়ে তার কাছে জানতে চাওয়া হয়। সামরিক শক্তির ব্যবহার নিয়ে ট্রাম্প যে মন্তব্যটি করেছেন, তার পক্ষে রিপাবলিকানদের বক্তব্যের ভিডিও ক্লিপ প্রসঙ্গেও জানতে চাওয়া হয়। কমলা বারবারই সেসব প্রশ্ন প্রতিদ্বন্দ্বী ট্রাম্পের দিকে ঠেলে দিয়েছেন। তবে সঞ্চালক বেয়ার ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমলাকে অবৈধ অভিবাসন নিয়ে প্রশ্ন করলে সাক্ষাৎকারটি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। প্রেসিডেন্ট বাইডেনের শাসন মেয়াদে মেক্সিকো সীমান্ত পার হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করা অবৈধ অভিবাসীদের রেকর্ড সংখ্যা সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়েছিল। যদিও সাম্প্রতিক মাসগুলোয় এ সংখ্যা নাটকীয়ভাবে কমেছে।

জবাবে কমলা হ্যারিস বলেন, জো বাইডেন-কমলা হ্যারিস প্রশাসন সীমান্ত পারাপার নিয়ে একটি বিল প্রস্তাব করেছিল। কিন্তু ট্রাম্পের পরামর্শে রিপাবলিকানরা বিলটি ঠেকিয়ে দেন। ট্রাম্পের সঙ্গে বিতর্কে ধরাশায়ী হওয়ার পর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দৌড় থেকে সরে দাঁড়িয়েছিলেন বাইডেন। সাক্ষাৎকারে কমলার কাছে জানতে চাওয়া হয়, তিনি প্রথম কখন টের পেয়েছেন যে বাইডেনের মানসিক তীক্ষèতা কমে গেছে। কমলা হ্যারিস আবারও বিষয়টি রিপাবলিকানদের দিকে ঠেলে দেন। ডেমোক্র্যাট এ প্রার্থী বলেন, ‘ব্রেট, জো বাইডেন ব্যালটে নেই। আর ডোনাল্ড ট্রাম্প আছেন।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close