নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১২ ডিসেম্বর, ২০২৪

বিএনপির লংমার্চ

এক ইঞ্চি মাটির দিকে তাকালে চোখ উপড়ে ফেলা হবে

* ভৈরবে লংমার্চের পথসভায় বক্তাদের হুংকার * রাস্তার দুই পাশে মানুষের দীর্ঘ লাইন

ভারতকে উদ্দেশ করে জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দল সভাপতি এস এম জিলানী বলেছেন, ভারতের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে আমরা লংমার্চ করছি। ভারত নিজেদের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র দাবি করে, কিন্তু বাংলাদেশের মানুষের গণআন্দোলনে পালিয়ে যাওয়া শেখ হাসিনা ও তার দোসরদের আশ্রয় দিয়েছে। আপনাদের জানিয়ে দিতে চাই, এ বাংলাদেশ শেখ হাসিনার বাংলাদেশ না। এ বাংলাদেশ শহীদ জিয়ার, খালেদার জিয়ার, তারেক রহমানের বাংলাদেশ। এদেশের এক ইঞ্চি মাটির দিকে তাকালে সেই চোখ উপড়ে ফেলা হবে। গতকাল বুধবার ভৈরব মোড়ে এক পথসভায় তিনি এসব কথা বলেন। ভারতের আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলা ও জাতীয় পতাকা অবমাননা এবং সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাধানোর ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে ঢাকা থেকে আগরতলা অভিমুখে লংমার্চে ভৈরবে এ পথসভা অনুষ্ঠিত হয়। বিএনপির তিন অঙ্গ সংগঠন যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল এ লংমার্চ করছে। ভারতের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করে জিলানী বলেন, ভারত বাংলাদেশের বন্ধু না। বিশেষ করে সেখানে শেখ হাসিনা থাকে, বাংলাদেশের শত্রু থাকে সেই ভারত বাংলাদেশের বন্ধু হতে পারে না।

যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন বলেন, ভারত-বাংলাদেশ পাশাপাশি রাষ্ট্র। আমরা বলেছি, ভারত বন্ধু রাষ্ট্র, কিন্তু সেখানে আমাদের হাইকমিশনে হামলা হয়েছে, পতাকা পুড়িয়েছে। সীমান্তে আমাদের দেশের নাগরিকদের গুলি করে মারছে, ফেলানীকে হত্যা করে কাঁটাতারে ঝুলিয়ে রাখে। এটা কোনো বন্ধু রাষ্ট্রের কাজ হতে পারে না। তিনি বলেন, ভারত একটি আধিপত্যবাদী রাষ্ট্র। ভারতের আশীর্বাদে এদেশে স্বৈরাচার প্রতিষ্ঠিতি হয়েছিল। এখন হাসিনাকে আশ্রয় দিয়েছে। দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

এদিন সকাল ৯টায় রাজধানীর নায়াপল্টনের বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে লংমার্চ শুরু হয়। লংমার্চ শুরুর আগে নয়াপল্টনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে হয়। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, আমরা রক্ত দিয়ে স্বাধীনতা কিনেছি, এ স্বাধীনতা আমরা বিক্রি করে দেব? আমরা পিন্ডির কাছে থেকে স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনেছি, এটা দিল্লির কাছে আমরা আত্মসমর্পণ করব, এ রক্ত আমাদের নেই। তিনি বলেন, আজকে দিল্লির যারা সাম্প্রদায়িক শাসকগোষ্ঠী তারা মনে রেখো, তোমরা একজন ভয়ংকর রক্তপিপাসু লেডি ফেরাউনকে টিকিয়ে রাখার জন্য সমর্থন দিয়েছিলে। আজকে ভারতের শাসকগোষ্ঠী গোটা পৃথিবীর গণতান্ত্রিক দেশগুলোর কাছে সমালোচিত। অথচ ভারত গণতান্ত্রিক দেশ। ওরা (ভারত) বাংলাদেশের মানুষের রক্তের যে তেজ, আত্মশক্তি, বীরত্ব- এটা দিল্লির শাসকরা বুঝতে পারেনি।

এর আগে লংমার্চে অংশ নিতে সকাল ৭টা থেকে জাতীয়তাবাদী যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের হাজার হাজার নেতাকর্মী মিছিল নিয়ে নয়াপল্টনে জড়ো হতে থাকেন। এ সময় তারা ভারতবিরোধী বিভিন্ন স্লোগানে নয়াপল্টন প্রাঙ্গণ মুখরিত করে তোলেন। বিএনপির ৩ সংগঠনের লংমার্চের রুট হলো- সকাল ৮টায় নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে লংমার্চ শুরু হয়ে পল্টন-ফকিরাপুল-ইত্তেফাক মোড় হয়ে ফ্লাইওভারে উঠবে। এরপর সাইনবোর্ড-চিটাগং রোড-কাঁচপুর মোড়-তারাবো-বরফা-ভুলতা, গাউছিয়া-চনপাড়া, মাধবদী-পাঁচদোনা-সাহেপ্রতাব, ভেলানগর-ইটখোলা-মারজাল-বারুইচা হয়ে ভৈরব পৌঁছাবে লংমার্চ। এরপর ভৈরব পথসভা করে আখাউড়া স্থলবন্দর অভিমুখে রওনা দেয়।

আখাউড়া পৌঁছানোর আগে প্রায় ২ কিলোমিটার রাস্তা হেঁটে সমাবেশস্থলে উপস্থিত হন জাতীয়তাবাদী যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। লংমার্চ-এ সমর্থন দিতে বিএনপির তিন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা ঢাকা সিলেট মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে দাঁড়িয়ে সমর্থন দিতে দেখা গেছে। এ সময় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের যাত্রাবাড়ী, শনির আখড়া, মাতুয়াইল, সাইনবোর্ড, চিটাগং রোড, মাতুয়াইল, কাঁচপুর, তারাবোসহ বিভিন্ন জায়গায় পথসভায় অংশ নেন স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা। ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে তারা ভারতবিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close