প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ২৪ এপ্রিল, ২০২৪

হিটস্ট্রোকে ৩ মৃত্যু, বাড়ছে শিশু রোগী

হিটস্ট্রোকে ময়মনসিংহের ফুলপুরে, নাটোরের বড়াইগ্রামে ও সিরাজগঞ্জের তাড়াশে একজন করে মোট তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। অন্যদিকে, তীব্র গরমে পর্যটকশূন্য হয়ে পড়েছে সাগরকন্যা কুয়াকাটা। এ ছাড়া তীব্র গরমে হাসপাতালে বাড়ছে শিশু রোগী। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-

ফুলপুর (ময়মনসিংহ) : উপজেলার ইমাদপুর গ্রামে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে হিট স্ট্রোকে রমজান আলী (৬৩) নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে। তার বাড়ি তারাকান্দা উপজেলার বগিরপাড়া গ্রামে। তিনি সিলপাটা কাটার কাজ করতেন। সেই কাজ করার সময় হিটস্ট্রোকে অসুস্থ হন। পরে ফুলপুর হাসপাতালে আনার পর মারা যান।

বড়াইগ্রাম (নাটোর) : নাটোরের বড়াইগ্রামে প্রখর রোদে দুপুরে জমিতে কাজ করার সময় রকুল হোসেন (৩০) নামে এক কৃষকের মুত্যু হয়েছে। গতকাল দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলার চান্দাই ইউনিয়নের সাতইল বিলে তার মৃত্যু হয়। রকুল হোসেন গাড়ফা উত্তরপাড়া গ্রামের হাজি আবদুর রহিমের ছেলে।

স্থানীয় গ্রাম্যচিকিৎসক আসাদুজ্জামান রঞ্জু জানান, তীব্র তাপপ্রবাহ সহ্য করতে না পেরে পাশের জলাশয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু সেখানে পোঁছানোর আগেই হিট স্ট্রোকে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। অন্য কৃষকরা টের পেয়ে তার মৃতদেহ উদ্ধার করে বাড়িতে পৌঁছে দেন।

তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ) : সিরাজগঞ্জের তাড়াশে আফসার আলী (৬৫) নামের এক কৃষক হিট স্ট্রোকে মারা গেছেন। তিনি উপজেলার কালুপাড়া গ্রামের মৃত মাহাম আলীর ছেলে। স্থানীয় সংবাদকর্মী মো. আবদুস সালাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এদিকে বোরো ধান কাটার জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোদে না গিয়ে ঘরে থাকার নির্দেশনা মানতে পারছেন না কৃষক। এসব নির্দেশনা উপেক্ষা করেই তাদের পাকা ধান কাটতে হচ্ছে।

কলাপাড়া (পটুয়াখালী) : তীব্র তাপপ্রবাহে পর্যটকশূন্য হয়ে পড়েছে পটুয়াখালীর সমুদ্রকন্যাখ্যাত কুয়াকাটা সৈকত। দীর্ঘ ৩০ কিলোমিটার সমুদ্রসৈকতে হাতেগোনা পর্যটকের উপস্থিতি থাকলেও কোলাহল ও মুখরতা নেই বললেই চলে। সৈকত জুড়ে বিরাজ করছে সুনসান নীরবতা।

স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বলছেন, পর্যটক কমে যাওয়ায় সংশ্লিষ্ট ১৮টি পেশায় জড়িত নিম্নআয়ের মানুষ পড়েছে অর্থনৈতিক সংকটে।

পর্যটনসংশ্লিষ্টরা বলছেন, পদ্মা সেতু নির্মাণের পর কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকতে বিশেষ দিন ও ছুটির দিন ছাড়াও হাজারো দর্শনার্থীর সমাগম ঘটে। ঈদ-পরবর্তী সপ্তাহ জুড়ে কুয়াকাটার পর্যটন স্পটগুলোয় ছিল পর্যটকের উপচে পড়া ভিড়। কিন্তু গত দুদিন ধরে কুয়াকাটা থেকে পর্যটক কমতে শুরু করেছে।

সৈয়দপুর (নীলফামারী) : সৈয়দপুর ১০০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে গত ৩ দিনে প্রায় ৮০০ শিশু রোগী চিকিৎসাসেবা নিয়েছে। প্রতিদিন শিশু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।

হাসপাতালের সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিন বহির্বিভাগে ৪০০/৫০০ রোগী চিকিৎসাসেবা নিচ্ছেন। এর মধ্যে অর্ধেকই শিশু। শয্যা সংকটের কারণে কেউ কেউ মেঝেতে চিকিৎসাসেবা নিচ্ছেন।

হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. আফরোজা সিমু জানান, ডাইরিয়া রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৮০ শতাংশ। এর মধ্যে শিশু রোগীর সংখ্যাই বেশি।

সৈয়দপুর ১০০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তার ওয়াসিম বারি জয় বলেন, শিশুরা প্রথমে জ্বর, এরপর ডাইরিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে। অনেক শিশু ডাইরিয়ার সঙ্গে নিউমোনিয়া রোগেও আক্রান্ত হচ্ছে। তবে ভয়ের কিছু নেই। শয্যা সংকট হলেও ওষুধ সংকট নেই।

সরাইল (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে হাসপাতালে বাড়ছে জ্বর, ডায়রিয়া, শ্বাসকষ্ট, নিউমোনিয়া, টাইফয়েডসহ গরমজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। গরম সবচেয়ে বেশি কাবু বয়স্ক ও শিশুরা।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গতকাল ৫০ শয্যাবিশিষ্ট সরাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৪৫ জন রোগী ভর্তি রয়েছেন। যার অধিকাংশই শিশু এবং ডায়রিয়ায় আক্রান্ত।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close