অর্থনৈতিক প্রতিবেদক
এফবিসিসিআইর কর্মশালায় মো. জসিম উদ্দিন
দেশি ক্রেতাদের জন্যও কারখানা কমপ্লায়েন্স হতে হবে
বাংলাদেশের তৈরি পোশাক কারখানা কমপ্লায়েন্স না হলে রপ্তানির ক্ষেত্রে বিদেশি ক্রেতারা সেই পণ্য কিনতে চান না। বিদেশি ক্রেতাদের কথা মাথায় রেখে ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানগুলো যেভাবে কারখানায় কমপ্লায়েন্স নীতি মেনে চলছেন, ঠিক দেশি ক্রেতাদের জন্যও কারখানা কমপ্লায়েন্স হতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন। বৃহস্পতিবার (৮ জুন) দুপুরে এফবিসিসিআই সেফটি কাউন্সিল আয়োজিত ‘লিভারেজিং লেসনস লার্নড টু মুভ ফরওয়ার্ড’ শীর্ষক এক কর্মশালার সমাপনী অনুষ্ঠানে তিনি এই মন্তব্য করেন।
মো. জসিম উদ্দিন বলেন, ‘বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাত কমপ্লায়েন্স ও নিরাপত্তার দিকে অনেক ভালো করছে। বিশ্বের সেরা ১০টি গ্রিন ফ্যাক্টরির মধ্যে ৮টির অবস্থান এখন বাংলাদেশে। আমাদের আরএমজি সেক্টরের কমপ্লায়েন্সের জন্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও প্রতিষ্ঠান দারুণ প্রশংসা করে। আমার মতে, যেসব পণ্য রপ্তানি হচ্ছে সেগুলোর কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত করা যেমন জরুরি, ঠিক একইভাবে আমাদের দেশীয় ক্রেতাদের জন্যও একই মানের কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত করা দরকার। এতে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা যেমন সুরক্ষিত থাকে ঠিক তেমনি ব্যবসায়ীরাও অগ্নিকাণ্ড বা বড় দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে যেতে পারেন। এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, এফবিসিসিআই দেশের প্রধান বাণিজ্য সংগঠন। কলকারখানার নিরাপত্তা নিয়ে আমাদের কাজ করার কথা নয়। কিন্তু বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় কর্মীদের প্রাণহানিসহ ব্যবসায়ীদের যে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয় সেগুলো কাটিয়ে উঠতে এবং ব্যবসায়ীদের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে আমরা এফবিসিসিআই সেফটি কাউন্সিল গঠনের সিদ্ধান্ত নিই। ইতোমধ্যে এই সেফটি কাউন্সিল ৫ হাজার ২০৬টি প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করেছে। তার মধ্যে আমরা ১০০টিরও বেশি প্রতিষ্ঠান পেয়েছি যেগুলো ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে। তাদের সঙ্গে আমরা আলোচনায় বসে পরবর্তী করণীয় ঠিক করব।’
কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ। তিনি পাঁচ হাজারের বেশি কারখানা পরিদর্শনের জন্য এফবিসিসিআই সেফটি কাউন্সিলের প্রতি ধন্যবাদ জানান।
কর্মশালায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক মাইন উদ্দিন আহমেদ বলেন, ব্যবসায়ীরা সুন্দরভাবে ব্যবসা করে আসছে বলেই দেশ আজ এগোচ্ছে। ব্যবসায়ীদের হাত ধরেই ২০৪১ সালে উন্নত দেশ হবে বলে আমি আশা করি। তবে কর্মক্ষেত্রের নিরাপত্তায় পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) মডেল তৈরি করা অত্যন্ত জরুরি বলে মনে করেন তিনি।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এফবিসিসিআইর সিনিয়র সহ-সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু বলেন, এফবিসিসিআই সেফটি কাউন্সিলের প্রশিক্ষকরা নিজ নিজ চেম্বার ও অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য কারখানায় এফবিসিসিআই সেফটি কাউন্সিলের তত্ত্বাবধানে অগ্নিনিরাপত্তা বিষয়ে ৭৯ কারখানায় প্রায় ৩ হাজার কর্মী এবং ১২৪টি কারখানায় সেফটি কমিটি গঠন ও তাদের দায়িত্ব বিষয়ে ৩০টি কর্মশালায় ১ হাজার জনকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।
এর আগে কর্মশালায় সেফটি কাউন্সিলের কর্মকাণ্ড তুলে ধরেন এফবিসিসিআই সেফটি কাউন্সিলের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবু নাঈম মো. শহিদুল্লাহ। অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ জানান এফবিসিসিআইর সহসভাপতি মো. আমিন হেলালী। এ সময় এফবিসিসিআইর পরিচালকরা, ব্যবসায়ী নেতা ও কর্মশালায় অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
"