মিজান রহমান

  ০৭ জুন, ২০২৩

মার্কিন রাষ্ট্রদূতের দৌড়ঝাঁপ আলোচনায় নির্বাচন

প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা, আইনমন্ত্রী ও বিএনপি মহাসচিবের সঙ্গে বৈঠক

বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচনে কেউ বাধা দিলে তার বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞার যে হুমকি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র তা নিয়ে রাজনীতির মাঠ গরম হয়ে উঠেছে; চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। ভিসানীতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানে পর ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বৈঠক করছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও ব্যক্তির সঙ্গে। এসব বৈঠকে আলোচনায় উঠে আসছে চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন, মার্কিন নতুন ভিসানীতিসহ বিভিন্ন বিষয়। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

মঙ্গলবার (৬ জুন) সকালে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের সরকারি অফিসে গিয়ে তার সঙ্গে বৈঠক করেন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। বৈঠকে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মহাপরিচালক উপস্থিত ছিলেন।

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বৈঠকের বিষয়ে বলেন, তাদের সঙ্গে বৈঠকে মার্কিন রাষ্ট্রদূত মূলত শ্রম আইন নিয়ে আলোচনা করেছেন। বাংলাদেশের শ্রম আইন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কিছু বক্তব্য ছিল। সেসব বিষয় নিয়েই রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের সরকারের বক্তব্য জানতে চেয়েছেন এবং এই আলোচনা অব্যাহত থাকবে। এর বাইরে আইনমন্ত্রী ওই বৈঠক সম্পর্কে আর কিছু বলেননি।

সরকারি সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) অনুষ্ঠানে যোগ দিতে চলতি মাসেই জেনেভা যাচ্ছেন। তার আগে শ্রম আইন নিয়ে বাংলাদেশের সরকারের বক্তব্য জানল যুক্তরাষ্ট্র। এদিকে, দুপুরে এক ঘণ্টার বেশি সময় ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের সঙ্গে বৈঠক করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। পিটার হাসের আমন্ত্রণে মির্জা ফখরুল ইসলাম গিয়েছিলেন এবং এই বৈঠকে বিএনপির পক্ষ থেকে তিনি একাই ছিলেন বলে জানা গেছে। এর আগে গত ১৬ এপ্রিল বিএনপির মহাসচিব যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। সেই বৈঠকে তার সঙ্গে বিএনপির আরো দুজন নেতা উপস্থিত ছিলেন।

মির্জা ফখরুল ইসলাম জানান, বাংলাদেশের নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করার লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্র যে ভিসানীতি ঘোষণা করেছে, সে ব্যাপারে বিএনপির অবস্থান ও প্রতিক্রিয়া জানতে চেয়েছিলেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, সরকার যেহেতু নির্বাচনী প্রক্রিয়াসহ গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংস করেছে, সে প্রেক্ষাপটে নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করতে গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রকে এই ভিসানীতি দিতে হয়েছে বলে আমরা মনে করি। আমাদের এ অবস্থানই পিটার হাসের কাছে তুলে ধরেছি। চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং আগামী নির্বাচনসহ সার্বিক পরিস্থিতি নিয়েও যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত বিএনপির বক্তব্য জানতে চান বলে মির্জা ফখরুল ইসলাম উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে না বলে তারা মনে করেন। এ বক্তব্যই তিনি তুলে ধরেন পিটার হাসের কাছে।

এর আগে রবিবার জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও বিরোধী দলীয় উপনেতা জি এম কাদের এমপির সঙ্গে বৈঠক করেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। রাষ্ট্রদূতের গুলশানের বাসায় অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন, মার্কিন নতুন ভিসানীতিসহ নানা বিষয় নিয়ে দুজনের মধ্যে আলোচনা হয়। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের বিশেষ দূত মাসরুর মাওলা এ সময় জি এম কাদেরের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close