হাসমত আলী, গাজীপুর

  ১৯ মার্চ, ২০২৩

সকালে গ্রেপ্তার, দুপুরে কারাগারে, বিকেলে জামিন

নায়িকা মাহির সিনেমার মতোই একটি দিন

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে পুলিশের করা মামলায় জামিন পেয়েছেন চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি। শনিবার (১৮ মার্চ) মাহিকে গ্রেপ্তারের পর আদালতে হাজির করা হলে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয়। গাজীপুর জেলা কারাগারে পাঠানোর সাড়ে ৩ ঘণ্টা পর মাহিয়া মাহির জামিন মঞ্জুর হয়। শনিবার বিকেলে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৫ এর বিচারক ইকবাল হোসেন তার জামিন মঞ্জুর করেন।

মাহিয়া মাহি অন্তঃসত্ত্বা হওয়ায় এবং সেলিব্রেটি বিবেচনায় আদালত এ আদেশ দিয়েছে বলে জানান মাহির আইনজীবী অ্যাডভোকেট আনোয়ার শাহাদাত সরকার। তিনি বলেন, তার মক্কেল আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল বলেই মামলা হওয়ার পরও দেশে চলে এসেছেন।

এর আগে শনিবার বেলা ১১টার দিকে তাকে রাজধানী ঢাকায় শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার করে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ। একই মামলার মাহিয়া মাহির স্বামী রকিব সরকার পলাতক। মাহিয়া মাহি সৌদি আরব থেকে দেশে ফিরলে বিমানবন্দরে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। একই ফ্লাইটে তার স্বামীর দেশে আসার কথা থাকলেও তিনি পালিয়ে থাকার জন্য সৌদি আরবে রয়ে গেছেন।

গ্রেপ্তার করার পর পুলিশ শনিবার দুপুর দেড়টার দিকে তাকে গাজীপুর মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে এবং সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করে। অন্যদিকে মাহির পক্ষে জামিন আবেদন করা হয়। শুনানি শেষে গাজীপুর মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ইকবাল হোসেন উভয় আবেদন নামঞ্জুর করে মাহিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

আদালত থেকে কারাগারে নেওয়ার পথে মাহিয়া মাহি সাংবাদিকদের বলেন, ‘জাজ সাহেব আমার সাথে কোন কথা বলেননি, আমার পক্ষে কারো বক্তব্য শোনেননি, এক সেকেন্ডে কীভাবে কোর্ট শেষ হয়ে যায়।’

এর আগে ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার অভিযোগ এনে শুক্রবার (১৭ মার্চ) রাতে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) বাসন থানার এসআই রোকন মিয়া বাদী হয়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন। শুক্রবার ভোরে চিত্রনায়িকা মাহি ফেসবুক লাইভে রকিবের গাড়ির শোরুম ভাঙচুর ও হামলার অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি কলেজের পূর্ব পাশে ‘সনিরাজ কার প্যালেস’ নামে তার স্বামীর একটি গাড়ির শোরুম রয়েছে। সেই শোরুমে দুর্বৃত্তরা হামলা চালিয়েছে। হামলাকারীরা তার শোরুমের গেট ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে। তারা শোরুমে বিভিন্ন আসবাব, দরজা-জানালার কাচ ভাঙচুর করেছে। শোরুমের সাইনবোর্ডও খুলে ফেলেছে। দুর্বৃত্তরা তার অফিসকক্ষ তছনছ করে টাকা লুট করে নিয়ে গেছে।

ইসমাইল হোসেন ওরফে লাদেন ও মামুন সরকারের নেতৃত্বে এ হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ করেন মাহী। ফেসবুকে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের বিরুদ্ধে ‘ঘুষ’ নেওয়ার অভিযোগ তোলেন তিনি। পুলিশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার অভিযোগে মাহিয়া মাহী ও তার স্বামী রকিব সরকারের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করে পুলিশ।

গাজীপুর মহানগর পুলিশ কমিশনার মোল্যা নজরুল ইসলাম বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে চিত্রনায়িকা অসত্য বলে মানুষের সহানুভূতি নেওয়ার চেষ্টা করেছেন। পুলিশের বিরুদ্ধে ঢালাও অভিযোগ করেছেন। তারা পুলিশকে বিতর্কিত করার মিশনে নেমেছেন। অথচ মাহী বা তার স্বামী জমিজমা-সংক্রান্ত কোনো বিষয় নিয়ে আমার কাছে আসেননি। যাদের বিরুদ্ধে তিনি অভিযোগ করেছেন, তাদের আমি চিনি না। পুলিশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে।

প্রসঙ্গত, চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহী ফেসবুকে যে লাইভ করেন তাতে পুলিশের বিরুদ্ধে ঘুষ নিয়ে জমি দখলে সহায়তা করার চেষ্টার অভিযোগ করা হয়। এরপর বাসন থানায় মামলা হয়। মামলায় প্রধান আসামি রকিব সরকার এবং ২ নম্বর আসামি মাহিয়া মাহী।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close