কুষ্টিয়া প্রতিনিধি

  ২৭ নভেম্বর, ২০২২

ভেড়ামারায় গরু চুরি

আতঙ্কে নির্ঘুম কৃষক গোয়ালঘরে পাহারা

কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলায় গরু চুরি বেড়েছে। প্রায় প্রতিরাতেই সংঘবদ্ধ চোরের দল কোনো না কোনো এলাকায় গরু চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে। চোর চক্রের অপতৎপরতায় কৃষক ও খামারিদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। অনেক এলাকায় পালাক্রমে রাত জেগে পাহারা দিচ্ছেন গ্রামবাসী। আবার কিছু এলাকায় গরু পাহারা দিতে গরুর সঙ্গে গোয়ালঘরে ঘুমাচ্ছেন গৃহস্থরা।

গত ১৫ দিনে এ উপজেলায় ১০ থেকে ১২টি গরু চুরি হয়েছে বলে জানান কৃষক ও খামারিরা। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জুনিয়াদহ ইউনিয়ন, মোকারিমপুর ইউনিয়ন, চাঁদগ্রাম ইউনিয়নে চোরের উপদ্রব বেড়েছে।

এছাড়া এসব এলাকায় ভ্যান, সাইকেল, পানির পাম্পসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র চুরি হচ্ছে। এর মধ্যে চাঁদগ্রামের হবিল সর্দারের দুটি গরু, বিপ্লবের দুটি, হরিপুরের মহিউদ্দিনের একটি গরু, জুনিয়াদহ গ্রামের ফিরোজের একটি গরু, মোকারিমপুর ইউনিয়নের গোলাপনগর গোরস্থানপাড়ার কাসেম উদ্দিনের একটি গরু এবং পৌরসভার ফারাকপুরের মজিবর মৃধার দুটি গরু চুরি হয়েছে। এছাড়া গরু চুরির সময় ধাওয়া খেয়ে ফেলে যাওয়া প্রায় পাঁচটি গরু উদ্ধার করতে সক্ষম হন এলাকাবাসীরা।

ভুক্তভোগীরা জানান, গরু চুরির পর কোথায় নিয়ে যায় তা বুঝতে পারছে না কেউ। এ ঘটনায় থানায় খুব কম অভিযোগ জমা পড়ে। অনেক সময় ক্ষতিগ্রস্তরা প্রতিকার না পাওয়ায় থানায় অভিযোগ করেন না। গত এক মাসে হঠাৎ এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে তারা জানান। এ ঘটনায় গরু হারিয়ে হতদরিদ্র কৃষক পরিবারগুলো নিঃস্ব হয়ে পড়ছেন।

জুনিয়াদহ গ্রামের খন্দকার এজাজ বলেন, চুরির মাত্রা বাড়ছে। গরু ছাড়াও ভ্যান, নছিমন, অটোরিকশা এমনকি গাছের ডাব পর্যন্ত চুরি হচ্ছে। পদ্মা নদীর তীববর্তী ও উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকা হওয়ায় এখানে চুরির ঘটনা বেশি ঘটছে।

রাত জেগে পালাক্রমে এলাকা পাহারা দিচ্ছেন মোকারিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের খেমিরদিয়ার গ্রামের কৃষক আনতাজ আলী, মাজদার হোসেন, স্বপন ও সোহেল। তারা বলেন, দফেলা নামে একজনের বাড়িতে গরু চুরি করতে আসে চোর। পরে ধাওয়া দিয়ে গরু উদ্ধার করা হয়। রাজিব ও মজিবের ভ্যান, সাইকেল ও রুবেলের পাম্প মেশিন চুরি হয়েছে। আমরা প্রতিদিন রাত জেগে পাহারা দিচ্ছি।’

চাঁদগ্রামের কৃষক বিপ্লব হোসেন বলেন, শনিবার (১৯ নভেম্বর) রাতে আমার বাড়ি থেকে গাভি ও বাছুর চুরি করে নিয়ে যায় চোরচক্র। এর কয়েক দিন আগে আমার চাচার গোয়াল থেকে গাভি ও বাছুর চুরি হয়। আমি গাভি পালন করে দুধ বিক্রি করে কোনো রকমে সংসার চালাতাম। চুরি যাওয়া দুই গরুর দাম প্রায় দুই লাখ টাকা বলে তিনি জানান।

ভেড়ামারা থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আকিবুল ইসলাম বলেন, সবে মাত্র এ থানায় যোগদান করেছি। চুরি, ছিনতাইসহ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে আমি আন্তরিক চেষ্টা করে যাচ্ছি। এরই মধ্যে পুলিশের নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে। সামনের দিনগুলোতে এ ধরনের ঘটনা ঘটবে না বলে তিনি জানান।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close