রাজিবুল ইসলাম

  ২৮ অক্টোবর, ২০২১

ইংলিশে ডুবল বাংলাদেশ

ইংল্যান্ডের বিপক্ষে মাঠে নামার আগে থেকেই দলের খেলোয়াড়দের নিয়ে সোশ্যাল মাধ্যমগুলোতে চলছিল নানা আলোচনা-সমালোচনা। উপলক্ষ একটাই! বাংলাদেশ কেন ভালো করতে পারছে না। লঙ্কানদের বিপক্ষে হারের ক্ষত না শুকাতেই ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বড় ব্যবধানে হেরে সে ক্ষত আরও বড় করল বাংলাদেশ। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে যতটুকু লড়াই করেছিল ইংলিশদের বিপক্ষে সে লড়াইটুকুও করতে পারেনি মাহমুদউল্লাহরা।

গতকাল আবুধাবির শেখ জায়েদ স্টেডিয়ামে দুপুরের ৩৬ ডিগ্রি ছাড়ানো তাপমাত্রায় ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশ তুলতে পারে ২০ ওভারে মাত্র ১২৪ রান। জবাবে ১৪.১ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে ইংলিশরা অনায়াসেই পা রাখে জয়ের বন্দরে।

যে ইংল্যান্ড আগের ম্যাচে ৫৫ রানে অলআউট করেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজকে তাদের কাছে বাংলাদেশের এমন হারই তো স্বাভাবিক। জিততে হলে খেলতে হয় মাঠে, সেটাই পারেনি বাংলাদেশ। যে পুঁজি দিয়েছিলেন ব্যাটসম্যানরা, তা নিয়ে লড়াই করা যায় না।

যে একটি উইকেট পড়ল তা পেলেন নাসুম, তিনি ফেরান জস বাটলারকে। তিনি ফেরেন ১৮ বলে ১৮ করে! প্রথম ১০ ওভারে ইংল্যান্ড তোলে ৯০ রান। জেসন রয় ও ডেভিড মালান এরপর ইংল্যান্ডকে এনে দেন সহজতম জয়। আরও একবার আমিরাত প্রবাসীদের হতাশ করলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদরা। ছুটি নিয়ে হাসিমুখে মাঠে এসে খেলা দেখে শুধু হতাশা সঙ্গী হলো তাদের।

এর আগে লিটন দাস শুরুটা করেছিলেন দুর্দান্ত। মঈন আলির করা প্রথম ওভারে টানা দুই বলে চার মেরেছিলেন। মনে হচ্ছিল, নিভু নিভু করে জ্বলা আশার প্রদীপটা বোধ হয় এবার জ্বলে উঠবে। কিন্তু লিটন তার পুরোনো রোগটা ভুলতে পারলে তো।

পাওয়ার-প্লের প্রথম ছয় ওভারে দুজন ফিল্ডার ৩০ গজ বৃত্তের বাইরে থাকেন। লিটন এই দুইজনের একজনের হাতে তুলে দেওয়াটাকে নিয়ম বানিয়ে ফেলেছেন। এর ব্যত্যয় হলো না এদিনও। পরের বলেই আরেক ওপেনার নাঈম শেখ তো ক্যাচ তুলে দিলেন ৩০ গজ বৃত্তের ভেতরে দাঁড়িয়ে থাকা ফিল্ডারের হাতেই।

লিটন ৮ বলে ৯ আর নাঈম ৯ বলে ৭ রান করে আউট হন। ফের ব্যর্থতার বৃত্ত ভেঙে বের হতে ব্যর্থ হয় উদ্বোধনী জুটি। দ্রুতই ফেরেন সাকিবও। তার টাইমিংটা ঠিকঠাক হয়নি সত্যি। কিন্তু আউট হওয়ার পেছনে আদিল রশিদের দুর্দান্ত ক্যাচের কৃতিত্বটাই বেশি। তবে সবচেয়ে বেশি কষ্ট দেবে বোধ হয় আফিফ হোসেন ধ্রুবর আউট।

এমনিতেই নানা ঝক্কি-ঝামেলা পোহানো অধিনায়ক রিয়াদের কারণেই তো এই তরুণ তুর্কিকে দ্রুতই ফিরতে হলো। যেখানে এক রানও হয় না, সেখানে দুই রানের কল দিলেন। পরে নিজে থেমেও গেলেন, তাতে আফিফকে আউট হতে হলো দৃষ্টিকটুভাবে। সে ক্ষতি তো রিয়াদও পোষাতে পারেননি। আউট হয়েছেন অসময়ে মারমুখী খেলতে গিয়ে।

ইংলিশদের বিপক্ষে আগের ম্যাচের মতোই একাদশে তিন স্পিনার নিয়ে খেলতে নামে বাংলাদেশ। পরিবর্তন বলতে ইনজুরির কারণে স্কোয়াড থেকে ছিটকে যাওয়া মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের জায়গা নিয়েছেন বাঁহাতি পেসার শরিফুল ইসলাম।

ম্যাচে টস জিতে আগে ব্যাট করতে নামাটা যদিও যৌক্তিক হয়নি। তবে বরাবরের মতো আজও ব্যর্থ ওপেনিং জুটি। পাওয়ার-প্লের শেষ ওভারে সাকিব আল হাসান আউট হন ক্রিস ওকসকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে। দেখার মতো এক ক্যাচ নেন আদিল রশিদ।

সাকিব ৭ বলে ৪ রান তুলে আউট হলে পাওয়ার-প্লের ৬ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ দলের সংগ্রহ দাঁড়ায় মাত্র ২৭ রান। এরপর চেষ্টা করেন মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। মুশফিক ব্যক্তিগত ৯ রানে একবার জীবন না পেলে চতুর্থ উইকেটে তাদের ৩৭ রান পার্টনারশিপটা আরো আগেই শেষ হয়ে যেত।

সেøা উইকেটে মুশফিক হলেন লেগ বিফোর আউট। ৩০ বল খেলে ২৯ রানেই থামতে হয় মুশফিককে। ‘বিতর্কিত’ রিভার্সসুইপে উইকেট বিলিয়ে আসেন মুশি।

আফিফ হোসেন আরও একবার ব্যর্থ। এবার যদিও রানআউট। মাহমুদউল্লাহও হতাশ করেন। ক্যাচ তুলে দিলেন সেই লিভিংস্টোনের বলে। মাহমুদউল্লাহ ফিরলেন ২৪ বল খেলে ১৯ রানে। ৮৩ রানে ৬ উইকেট শেষ।

শেষদিকে নুরুল হাসান সোহান, শেখ মেহেদী হাসান, নাসুম আহমেদরা কিছুটা লড়াই করেন। মেহেদী ১১। সোহানও ১১। অপরাজিত নাসুমের ব্যাট থেকে আসে ৯ বলে ১৯।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close