প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২১

যুক্তরাষ্ট্রে সেই ছন্দপতনের দিন

২০ বছর আগে যুক্তরাষ্ট্রে ১১ সেপ্টেম্বরের সকাল শুরু হয়েছিল স্বাভাবিক জীবন ছন্দে। প্রতিদিনের মতোই সেদিন ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের ৭২-তলার অফিসে ঢুকছিলেন মার্কিন এক সংস্থার কর্মী লরেন। হঠাৎ প্রচণ্ড শব্দ শুনতে

পান তিনি। এরপর দেখেন তার শরীরে আগুন জ্বলছে। ওই অবস্থায় দৌড়ে রাস্তায় চলে যান তিনি। জ্ঞান হারানোর আগে বুঝতে পারেন তারা শরীরে পানি ঢালা হচ্ছে। কিছুক্ষণ পর জ্ঞান ফিরে আসে তার। জ্ঞান ফেরার পর শরীরে প্রচণ্ড যন্ত্রণা অনুভব করেন। বুঝতে পারেন তার শরীর পুড়ে গেছে। খবর বিবিসি ও সিএনএনের।

লরেন জানান, সেদিনের ওই হামলায় তার অফিসের প্রায় ৬০০ জন প্রাণ হারিয়েছেন। সেদিনের পরিস্থিতি এত ভয়াবহ ছিল যে প্রাণ বাঁচাতে অনেকেই হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ৭২-তলা থেকেও ঝাঁপ দিয়েছিলেন। এভাবেই সেদিন সৌদি নাগরিক ওসামা বিন লাদেনের সন্ত্রাসী সংগঠন আল কায়দার বিমান হামলার জীবনের নির্মম ছন্দপতন হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে ও দেশটির প্রধান সামরিক দপ্তর পেন্টাগনে।

ওই ঘটনায় লরেনের শরীরের ৮০ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল। বাঁচার আশা ছিল না তার। অনেকটা অলৌকিকভাবেই প্রাণে বেঁচে যান তিনি।

লরেন জানান, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাকে দেখে তার বাচ্চা ছেলে রীতিমতো শিউরে উঠেছিল। ২০ বছর পরও সেদিনের ক্ষত শরীরে ও মনে বয়ে বেড়াচ্ছেন লরেন। তবে এত কিছুর পরও স্বামী-সন্তান নিয়ে দিন কেটে যাচ্ছে এই মার্কিন নারীর।

৯/১১ এর দিন টুইন টাওয়ারের ৬৮-তলায় একটি সাক্ষাৎকার ছিল নিউইয়র্ক ফায়ার সার্ভিসের ডেপুটি কমিশনার লিন টাইনির। মাঝপথেই হামলার খবর আসে। সেদিনের স্মৃতিচারণ করে লিন বলেন, সেদিনের পরিস্থিতি ভয়াবহ ছিল। আগুনের তীব্রতায় ভেতরে যেতে পারছিলাম না। এরই মধ্যে ওপর থেকে মানুষের লাশ নিচে পড়ছিল। আমি একজন দম্পতিকে দেখেছিলাম, যারা হাতে হাত রেখে ওই দিন ওপর থেকে লাফিয়ে ছিলেন।

যুক্তরাষ্ট্রে ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর দেশটিতে একসঙ্গে চারটি সমন্বিত সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে। দুটি বিমান নিউইয়র্কের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার ধ্বংস করে। একই দিন ভার্জিনিয়ার আরলিংটনে তৃতীয় বিমান হামলা করে।

এসব হামলায় প্রায় তিন হাজার মানুষ নিহত হন। ছয় হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়। ১০ বিলিয়ন ডলারের অবকাঠামো ধ্বংস হয়। কিন্তু ২০ বছর পরও নাইন-ইলেভেনের ক্ষত সারেনি।

ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের টুইন টাওয়ারে সন্ত্রাসী হামলার পেছনে ওসামা বিন লাদেন ও তার সন্ত্রাসী দল আল কায়দা জড়িত ছিল। ৯/১১ নামে খ্যাত ওই হামলার বিপরীতে সন্ত্রাস বা জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র। সন্দেহের আওতায় থাকা জঙ্গি সংগঠন আল কায়দার বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী যুদ্ধ চালাতে গিয়ে ২০ বছরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ৮ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার খরচ হয়েছে। ব্রাউন ইউনিভার্সিটির কস্টস অব ওয়ার প্রজেক্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, এসব যুদ্ধে বিভিন্ন দেশে ৯ লাখেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close