প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ২৯ জুলাই, ২০২১

জোটের আশায় সোনিয়া-মমতা

ভারতের আগামী ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে একজোট হওয়ার আশা করছে বিজেপিবিরোধী দলগুলো। নির্বাচনের এখনো বছর তিনেক বাকি থাকলেও এখন থেকেই বিজেপি হটানোর প্রস্তুতি শুরু করতে হবে বলে জানিয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গেও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি গতকাল বুধবার দিল্লি সফরকালে কেন্দ্রে প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন। বৈঠকে আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিজেপি হটাতে একজোট হওয়ার আশা প্রকাশ করেছেন দুই নেত্রী। খবর হিন্দুস্তান টাইমস, এনডিটিভি ও আনন্দবাজারের।

কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে মমতা বলেন, ‘বিজেপিকে হারাতে সবাইকে একজোট হয়ে লড়তে হবে। আমি একা কিছু করতে পারব না। আমি লিডার নই, আমিও ক্যাডার। আমি স্ট্রিট ফাইটার। একসঙ্গে লড়াই করতে হবে সবাইকে।’

সোনিয়ার সঙ্গে বৈঠকে বিরোধী ঐক্য এবং পেগাসাস নিয়ে কথা হয়েছে বলে জানান মমতা। তিনি বলেন, ‘বিরোধী ঐক্য, পেগাসাস ও কোভিড নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বৈঠক ইতিবাচক হয়েছে।’ ২০২৪ সালে লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আশা জোগাতে ‘হোপ টোয়েন্টি ফোর’ বার্তাও দেন মমতা।

বিরোধী জোট গড়তে আলোচনায় প্রস্তুত বলে ২১-এর মঞ্চ থেকেই জাতীয় নেতানেত্রীদের বার্তা দিয়েছিলেন মমতা। তার পরই সোমবার পাঁচ দিনের দিল্লি সফরে বেরিয়ে পড়েন তিনি। বুধবার বিকালে ১০ নম্বর জনপথে সোনিয়ার বাসভবনে পৌঁছান মমতা। দুজনের মধ্যে বৈঠক শুরু হয়। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রাহুল গান্ধীও।

সোনিয়ার সঙ্গে সাক্ষাতের আগে মঙ্গলবার প্রবীণ কংগ্রেস নেতা কমল এবং আনন্দ শর্মার সঙ্গেও দফায় দফায় কথা হয় মমতার। সাউথ অ্যাভিনিউয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাসভবনে গিয়ে মমতার সঙ্গে দেখা করেন কমলনাথ ও আনন্দ। মমতার সঙ্গে সাক্ষাৎ সেরে বেরিয়ে, দুজনেই জোট নিয়ে আশা প্রকাশ করেছিলেন। ২৪-এর আগেই জোট গড়ে ফেলা সম্ভব কিনা, তা নিয়ে দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলবেন বলেও জানিয়েছিলেন কমল।

বিপুল জনসমর্থন নিয়ে তৃতীয়বারের জন্য পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতায় আসার পর গতকালই প্রথম সোনিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ হলো মমতার। তা নিয়ে গত কয়েক দিন ধরেই দুই পক্ষের মধ্যে তৎপরতা চোখে পড়ছিল। এমনকি এই বৈঠকেই ২০২১-এর বিজেপি-বিরোধী জোটে মৌখিক সিলমোহর পড়ে যেতে পারে বলে শোনা যাচ্ছিল। কিন্তু প্রদেশ কংগ্রেস নেতাদের সঙ্গে মমতার সমীকরণ আলোচনার পথে বাধা হয়ে দাঁড়াবে কিনা, সেই আশঙ্কাও ছিল। তাই কমলের সঙ্গে মমতার সাক্ষাতের পর আশার আলো দেখেছিল বিজেপি-বিরোধী শিবির। কারণ কংগ্রেস ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার পরেও কমলের মধ্যস্থতাতেই ২০০১ সালে তৃণমূল এবং কংগ্রেস জোট বেঁধে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় লড়াই করতে নামে।

এদিকে সফরের দ্বিতীয় দিনে মঙ্গলবার বিকালে মমতা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে সৌজন্য বৈঠক করেছেন। প্রায় আধাঘণ্টা ধরে তাদের বৈঠক হয়। বৈঠকের পর মমতা জানিয়েছেন, তিনি প্রধানমন্ত্রীর কাছে আরো টিকা চেয়েছেন। তিনি বলেন, পশ্চিমবঙ্গ জনবহুল রাজ্য। তাই জনসংখ্যার কথা মাথায় রেখে পশ্চিমবঙ্গকে টিকা দেওয়া উচিত। জনসংখ্যার তুলনায় উপযুক্ত সংখ্যক টিকা রাজ্য পাচ্ছে না।

মমতা জানান, তিনি পশ্চিমবঙ্গের নামবদলের প্রসঙ্গ প্রধানমন্ত্রীর কাছে তুলেছিলেন। তার কথায়, অনেক দিন হলো বিষয়টি কেন্দ্রের কাছে পড়ে আছে। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তিনি ভেবে দেখবেন।

রাজ্য সরকার পশ্চিমবঙ্গের নামবদল করে বঙ্গ রাখার প্রস্তাব করেছে। বিজেপিবিরোধী জোট প্রসঙ্গে মমতা বলেন, জনতাই এর নেতৃত্ব দেবেন। ২০২৪ সাল এখনো দেরি আছে। এর আগে উত্তর প্রদেশ, পাঞ্জাবসহ কয়েকটি রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন আছে। সেখানে বিরোধীরা একটা কৌশল নিয়ে যাতে লড়ে সেই চেষ্টা হচ্ছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close