মিনহাজুল ইসলাম, চট্টগ্রাম ব্যুরো

  ২১ জানুয়ারি, ২০২০

‘কেউ কথা রাখেনি, রেখেছেন আদালত’

কবি সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় লিখে গেছেন, ‘কেউ কথা রাখেনি, তেত্রিশ বছর কাটল, কেউ কথা রাখেনি।’ তবে ৩২ বছরে কথা রেখেছেন আদালত। গতকাল সোমবার চট্টগ্রামের লালদিঘী মাঠে শেখ হাসিনার সভায় গুলি করে ২৪ জনকে হতা মামলার রায়ের পর এ কথা বলেন ওই হামলায় আহত ও মামলার ২ নম্বর সাক্ষী ফরিদুল আলম খান।

তিনি প্রতিদিনের সংবাদকে বলেন, রায়ে আমি সন্তুষ্ট। এ রায়ের মাধ্যমে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। রায় যেন হাইকোর্টেও বহল থাকে এবং দ্রুত কার্যকর হয়Ñ সেই প্রত্যাশা করছি। অপরাধ যেই করুক, তাকে বিচারের আওতায় এনে সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব, আর সরকার সেই দায়িত্ব পালন করতে পেরেছে ৩২ বছর পর হলেও।

১৯৮৮ সালে লালদীঘি ময়দানে কথা স্মরণ করে ফরিদুল আলম খান বলেন, তৎকালীন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের দফতর সম্পাদক ছিলাম। তখন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি আলাউদ্দীন নাসিমের নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাটল ট্রেনে করে প্রায় ৫০০ নেতাকর্মী সমাবেশে এসেছিলাম। বর্তমান বাংলাদেশ ব্যাংকের মোড়ে আসা মাত্রই আমাদের লক্ষ্য করে পুলিশ গুলি চালাতে থাকে। আমার হাতের ওপর দিয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনার দিকে গুলি গিয়েছিল। পরে আমরা নেত্রীকে হেফাজতে নিয়ে গেলাম।

মামলার বাদী ভাষাসৈনিক মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট মো. শহীদুল হুদা ২০০৫ সালের ৭ মার্চ মৃত্যুবরণ করেন। তার ছেলে অ্যাডভোকেট মো. ইরশাদ হোসেন প্রতিদিনের সংবাদকে বলেন, আদালতের রায়ে সন্তুষ্ট। আমার বাবা মৃত্যুর আগ পর্যন্ত মামলার রায়ের জন্য অপেক্ষায় ছিলেন। কিন্তু তিনি দেখে যেতে পারেননি। তিনি মৃত্যুর এক মাস আগে পর্যন্ত মামলার সাক্ষী দিতে এসেছেন। এমনকি ক্যানসারের ক্যামো দেওয়ার পর চিকিৎসকের নিষেধ সত্ত্বেও তিনি আদালতে মামলার কাজে এসেছিলেন। এই মামলার দীর্ঘসূত্রতার কারণে আমাদের মনে দুঃখ ছিল। কিন্তু দুঃখের মধ্যেও রায়ে আমরা আনন্দিত।

তিনি বলেন, নির্বিচারে গুলি চালিয়ে ২৪ জনকে হত্যার পর নিজ নিজ ধর্ম অনুয়ায়ী অনেকে দাফন পর্যন্ত পায়নি। বিবেকের তাড়নায় আমার বাবা এই মামলার বাদী হয়েছিলেন। মামলায় দীর্ঘসূূত্রতার জন্য অনেকে দায়ী। না হলে দিন দুপুরে ২৪ জন মানুষকে হত্যার বিচার করতে ৩২ বছর লাগার প্রয়োজন পড়ে না।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close