বশেমুরবিপ্রবি প্রতিনিধি

  ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৯

বশেমুরবিপ্রবিতে আন্দোলন তুঙ্গে : আ.লীগের সংহতি

উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে টানা আন্দোলনের চতুর্থ দিনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেছে গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগ। গতকাল রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে কর্মসূচি পালনরত শিক্ষার্থীদের মধ্যে জেলা আওয়ামী লীগের নেতারা উপস্থিত হয়ে তাদের দাবির প্রতি এই সংহতি প্রকাশ করেন। এ সময় জেলা নেতারা শিক্ষার্থীদের কর্মসূচি প্রত্যাহার করার আহ্বান জানালে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন। এছাড়া ওই আন্দোলনের সমর্থনে কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়েও সংহতি সমাবেশ ও মানববন্ধন হয়েছে।

বশেমুরবিপ্রবি ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের দাবির প্রতি সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এমদাদুল হক চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মাহবুব আলী খান, গোবরা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান টুটুল চৌধুরী প্রমুখ। এদিকে, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেন, আমাদের এক দফা এক দাবি। উপাচার্য পদত্যাগ না করা পর্যন্ত বিক্ষোভ ও অনশন চলবে। অপরদিকে ফাইল নিয়ে পালানোর সময় শিক্ষার্থীদের হাতে আটক হয়েছেন এক বিশ্ববিদ্যালয় কর্মকর্তা। শিক্ষার্থীরা জানান, ওই কর্মকর্তা প্রশাসনিক ভবনের গেট তালাবদ্ধ থাকলেও দেয়াল বেয়ে ভবনে প্রবেশ করে ফাইল নিয়ে পালানোর চেষ্টা করে। আটক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, তার নাম ইঞ্জিনিয়ার নাঈম এবং তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সেকশন অফিসার হিসেবে কর্মরত। তিনি জানান, শনিবার তাদের উন্নয়ন কর্মকা- নিয়ে একটি মিটিং রয়েছে, যেখানে ২০১৮-১৯-এ তাদের কাজের হিসাব দিতে হবে। আর এ কারণেই তিনি দেয়াল বেয়ে ফাইল আনতে যান। ওই কর্মকর্তা দাবি করেছেন, তিনি শিক্ষার্থীদের অনুমতি নিয়ে প্রবেশ করেছেন। তবে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বিষয়টি অস্বীকার করেছে। আন্দোলনরত এক শিক্ষার্থী জানান, ‘প্রশাসন তো বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করেছে তাহলে তাদের মিটিংয়ের প্রসঙ্গ কীভাবে আসছে। নিশ্চয়ই কোনো বড় ধরনের দুর্নীতির তথ্য লোপাট করতে তিনি ফাইল চুরি করতে চেয়েছেন। তবে আটক কর্মকর্তা নিজের নাম নাঈম বললেও এবং নিজেকে সেকশন অফিসার হিসেবে দাবি করলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের ডায়েরিতে এই নাম এবং পদবির কাউকে পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রফেসর ড. নুরুদ্দীন আহমেদকে ফোন দেওয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

এদিকে বিকেলে উপাচার্যকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং ড. রাজিউর রহমানকে নতুন উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে বলে ফেসবুকে গুজব ছড়িয়ে পড়ে। তবে আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন তারা লিখিত আদেশ না পাওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. খোন্দকার নাসিরউদ্দিনের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ও অনশনের তৃতীয় দিন শনিবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয় ছুটি ঘোষণা করে প্রশাসন। একই সঙ্গে সকাল ১০টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। প্রশাসনের সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলন চালিয়ে গেলে বেলা ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটকের বাইরে সোবহান সড়কে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায় উপাচার্যপন্থি শিক্ষার্থী ও বহিরাগতরা। এতে সাংবাদিকসহ কমপক্ষে ২০ জন আহত হন। আহতদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর। পরে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে পদত্যাগ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ে সহকারী প্রক্টর হুমায়ুন কবির।

জাককানইবি প্রতিনিধি জানায়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বশেমুরবিপ্রবি) শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাককানইবি) মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। গতকাল রোববার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের জয় বাংলা চত্বরে মানববন্ধন করে শিক্ষার্থীরা। মানববন্ধনে শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন। মানববন্ধন শেষে বিক্ষোভ মিছিল বের করে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close