নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২৫ মে, ২০১৯

বিশ্লেষকদের অভিমত

বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক অপরিবর্তিত থাকবে

টানা দ্বিতীয়বারের মতো নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বেই ভারতে সরকার গঠন করতে যাচ্ছে ‘ভারতীয় জনতা পাটি’ (বিজেপি) নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট। পুনরায় ক্ষমতায় বসতে যাওয়া ওই সরকারের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক খুব পরিবর্তন হবে না বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। তিস্তা চুক্তি বিষয়ে আশার আলো দেখতে না পেলেও রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ইস্যুতে ভারত বাংলাদেশকে সাহায্য করবে বলে মনে করেন তারা। স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় থাকায় বাংলাদেশের কাছে প্রতিবেশী দেশ ভারতের নির্বাচন বরাবরই গুরুত্বপূর্ণ। গেল পাঁচ বছরে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সঙ্গে মোদি সরকারের সম্পর্ক ভালো ছিল। ভারত শাসনের ভার ফের নরেন্দ্র মোদির হাতেই উঠছে। টানা দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় বসতে যাওয়া বিজেপির সঙ্গে বাংলাদেশে-ভারত সম্পর্কে নতুন কোনো মাত্রা নিয়ে আসবে কি নাÑ এসব নিয়ে প্রশ্ন ছিল বিশ্লেষকদের কাছে।

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক অধ্যাপক আকমল হোসেন বলেন, ‘মোদির সরকারের সঙ্গে আমাদের এই সরকারের সম্পর্ক ধীরে ধীরে আরো দৃঢ় হয়েছে। যে সম্পর্ক এখন আছে, সেটা আরো কতদূর এগিয়ে যাবে, তার প্রশ্ন এবং উত্তর খোঁজা উচিত।’

সাবেক পররাষ্ট্র সচিব ওয়ালিউর রহমান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মধ্যে যে কেমেস্ট্রি আছে, এটিই আমাদের সবচেয়ে বড় শক্তি। এই শক্তির মাধ্যমেই ভারতের সঙ্গে আমাদের বন্ধুত্ব হয়েছে। দল ও সরকারে মোদির আরো মজবুত অবস্থানে দুই দেশের অমীমাংসিত বিষয়গুলোয় আদৌ কী ধরনের প্রভাব ফেলবে?’

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. তারেক শামসুর বলেন, তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তিটা সমাধান হোক। এই চুক্তিটা ঝুলে আছে। যেহেতু বিজেপি জোট নিরঙ্কুশ বিজয় পেয়েছে, তাই বাংলাদেশের প্রত্যাশা থাকবে তিস্তার পানিবণ্টন বা অন্য যেসব চুক্তি ঝুলে আছে, তা দ্রুত সম্পন্ন হবে।

আগামী পাঁচ বছরে বাংলাদেশ ভারত থেকে আরো বিদ্যুৎ আমদানি করতে পারে বলে মনে করেন এই বিশ্লেষক। পাশাপাশি নয়াদিল্লিতে রফতানি বাড়াতেও কাজ করতে হবে ঢাকাকে। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক অধ্যাপক আকমল হোসেন বলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কখনোই চাননি তিস্তা চুক্তি হোক। বিজেপির আসন সংখ্যা বাড়লেও সেটি সরাসরি মমতার ওপর কোনো প্রভাব ফেলবে বলে আমি মনে করি না। কারণ এটা তার রাজ্য সরকারের বিষয়।’

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ইস্যুতে মোদি সরকার বাংলাদেশকে সাহায্য করবে বলে মনে করেন সাবেক পররাষ্ট্র সচিব ওয়ালিউর রহমান। তিনি বলেন, কংগ্রেসের ইশতেহার কিন্তু রোহিঙ্গা নিয়ে বাংলাদেশের যে সমস্যা আছে, সেটা সমাধানে তারা সাহায্য করবে বলে উল্লেখ ছিল। এটার একটা ইমপেক্ট আছে, কারণ কংগ্রেস এখনো ভারতের সবচেয়ে বড় বিরোধী দল। এবার যেহেতু নরেন্দ্র মোদি আবারও প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন, তাই তাদের কাছে আমাদের চাহিদা হবে তারা যেন আমাদের এ সমস্যা সমাধানে সাহায্য করে। সেই সঙ্গে বাংলাদেশ সরকার ভারত ও চীনের সঙ্গে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ইস্যু নিয়ে বিচক্ষণতার পরিচয় দেবে বলেও মনে করেন তিনি। মোদি সরকারের হিন্দুত্ববাদ, বৈদেশিক নীতি বা বাংলাদেশের ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলবে না বলেও মনে করেন এই দুই বিশ্লেষক।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close