প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ২২ মে, ২০১৯

ধারণার দ্বিগুণ বাড়বে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা

বাংলাদেশের বড় অংশ সাগরে ডুবে যাবে!

বিশ্বে কার্বন নির্গমন যেভাবে চলছে তা কমানো না গেলে এখন থেকে আর ৮০ বছরের মধ্যে বাংলাদেশের এক বড় অংশ সাগরের পানির নিচে চলে যেতে পারে। জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কিত এক নতুন রিপোর্টে এসব কথা বলা হয়েছে। এর ফলে ৮০ লাখ বর্গকিলোমিটার পরিমাণ ভূমি সাগরের পানিতে তলিয়ে যাবেÑ এর মধ্যে থাকবে বাংলাদেশের এক বড় অংশ। এর মধ্যে থাকবে মিসরের নীল নদ উপত্যকা। বিজ্ঞানীদের মতে বাংলাদেশের অনেক এলাকা তখন এমন হয়ে যাবে যে সেখানে লোকজনের বসবাস খুবই দুরূহ হয়ে পড়বে। বিপন্ন হবে লন্ডন, নিউইয়র্ক এবং সাংহাইয়ের মতো অনেক শহরের অস্তিত্ব। কোটি কোটি লোককে এর ফলে বাড়িঘর ছেড়ে অন্য জায়গায় চলে যেতে হবে।

‘প্রসিডিংস অব দি ন্যাশনাল একাডেমি অব সায়েন্সেস’ নামের জার্নালে এ জরিপের ফল প্রকাশিত হয়েছে। গবেষকরা বলছে নতুন জরিপে বলা হচ্ছে, ভবিষ্যতের পৃথিবী হতে এখনকার চেয়ে ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস উষ্ণতর, যদি কার্বন নির্গমন এখনকার হারেই চলতে থাকে। তাহলে ২১০০ সাল নাগাদ সমুদ্র স্তরের উচ্চতা বাড়বে ৬২ সেন্টিমিটার থেকে ২৩৮ সেন্টিমিটার পর্যন্ত।

এর আগে ২০১৩ সালের রিপোর্টে বলা হয়েছিল সমুদ্র স্তরের উচ্চতা ৫২ থেকে ৯৮ সেন্টিমিটার পর্যন্ত বাড়তে পারে। কিন্তু এখন বিজ্ঞানীরা বলছেন, গ্রিনল্যান্ড ও অ্যান্টার্কটিকায় বরফ গলার প্রক্রিয়ার অনেক দিকই তাতে অন্তর্ভুক্ত হয়নি।

অনেক বিশেষজ্ঞ এই অনুমানকে রক্ষণশীল হিসেবে দেখে আসছেন। বিজ্ঞানীরাও মনে করছেন, সাগরপৃষ্ঠের ওপর ব্যাপক তুষার স্রোতের প্রভাব নিয়ে পূর্বাভাষের জন্য যেসব মডেল ব্যবহার করা হয় সেগুলো বরফগলার বর্তমান অনিশ্চয়তাগুলো হিসাবে ধরে না।

গ্রিনল্যান্ড এবং পশ্চিম ও পূর্ব অ্যান্টার্কটিকায় কী ঘটছে তা নিয়ে স্পষ্ট ধারণা পাওয়ার চেষ্টা করছেন গবেষকরা।

গবেষণা দলের নেতা ব্রিস্টল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জোনাথন বামবার বলেন, ২১০০ সাল পর্যন্ত সাগরপৃষ্ঠের উচ্চতা ৭ থেকে ১৭৮ সেন্টিমিটারের মতো বাড়তে পারে বলে আগে ধারণা করা হতো। কিন্তু সাগরের উষ্ণতা বাড়ায় হিমবাহ ও বরফের স্তরের বাইরের চূড়া গলে যেতে থাকায় এটা ২ মিটার পর্যন্ত বাড়তে পারে।

নতুন গবেষণা বলছে, বৈশ্বিক তাপমাত্রা ২ সেলসিয়াস ডিগ্রি বাড়লে গ্রিনল্যান্ডের বরফের স্তর সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়ার ক্ষেত্রে বড় প্রভাব ফেলবে। তাপমাত্রা এর চেয়ে বেশি বাড়ে তাহলে অ্যান্টার্কটিকার বরফের স্তর আরো বেশি প্রভাব ফেলবে।

অধ্যাপক বামবার বলেন, এর ফলে পশ্চিম অ্যান্টার্কটিকা ও পূর্ব অ্যান্টার্কটিকায় বড় বদল আসবে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। বিশ্বের ১৭ লাখ বর্গকিলোমিটার ভূমি হারিয়ে যেতে পারে যা আকারে প্রায় লিবিয়ার সমান। বিশ্বের খাদ্য উৎপাদনকারী অনেক ভূমি হারিয়ে যেতে পারে। বামবার বলছেন, সামনের বছরগুলোয় তাপমাত্রা নিঃসরণ রোধে বড় ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হলে এই পরিস্থিতি এড়ানো সম্ভব।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close