জলাবদ্ধতার শেষ কোথায়
রাজধানীর জলাবদ্ধতার শেষ কোথায়! এ বিস্ময়ের জবাব সম্ভবত আর খুঁজে পাওয়া যাবে না। যাদের খোঁজার কথা ছিল, তারা কখনোই মনোযোগী হতে পারেননি। বরং বিপরীত চিন্তায় নিমগ্ন হয়ে পানি বেরিয়ে যাওয়ার পথকে করেছেন রুদ্ধ। টুকরো টুকরো করে ভাগা বসিয়ে রাজধানীর শিরা-উপশিরাকে করেছেন ধ্বংস। এখন যার অস্তিত্বই খুঁজে পাওয়া ভার। পরিবেশ বিশেষজ্ঞদের মতে, রাজধানীর এই শিরা-উপশিরাগুলোকে খুঁজে বের করে তা মেরামত করে আগের অবস্থায় নিতে পারলে জলাবদ্ধতার কোনো চিহ্ন খুঁজে পাওয়া যাবে না।
বিশেষজ্ঞরা যে অভিমত দিয়েছেন তার সত্যতা শতভাগ। যদি কেউ এই সত্যতার বিপরীতে দাঁড়াতে চান, তাহলে তাকে বলব, রাজধানীর ভেতর দিয়ে প্রবাহিত পাঁচ-পাঁচটি খাল অবৈধ দখলদারদের দখল থেকে অবমুক্ত করে বলুন...। ঢাকাবাসীর পক্ষ থেকে বলছি, বাকিটা আমরাই করব। জলাবদ্ধতার কোনো চিহ্নই আর এখানে থাকবে না। দেড় কোটি রাজধানীবাসীর বহু দিনের লালিত পরিচ্ছন্ন ঢাকাকে ফিরে পাওয়ার স্বপ্ন পূরণ হবে।
স্বপ্নের কথাটা যত সহজে বলা গেল, কাজটা বোধহয় অতটা সহজ নয়। দখলদারদের শক্তি অনেক। রাষ্ট্র পরিচালনায় যারা থাকেন তাদের সঙ্গে এদের সখ্যতার কোনো শেষ নেই। অনেক সময় এরাই সংসদ সদস্য অথবা মন্ত্রিপরিষদ সদস্য। এর বাইরে গডফাদাররা তো আছেনই। তাহলে উপায়?
প্রতিটি সমস্যারই একটি সমাধান থাকার কথা। পৃথিবীতে মানবসৃষ্ট এমন কোনো সমস্যার জন্ম হয়নি যার সমাধান দিতে পারেনি মানবকুল। অতএব এ সমস্যারও সমাধান আছে। সমাধানের জন্য প্রয়োজন একটি সিদ্ধান্তের। যে সিদ্ধান্তকে হতে হবে হিমালয় পাহাড়ের মতো স্থির। তবে এখানে মনে রাখা জরুরি যে, যিনি সিদ্ধান্ত নেবেন তাকে প্রথমেই ভাবতে হবে তিনি এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে পারবেন কি পারবেন না। যদি পারেন তাহলে তিনি এগিয়ে যেতে পারেন। অন্যথায় নয়। তবে আমাদের দেশে এ কাজ করার ক্ষমতা এবং যোগ্যতা যদি কারো থেকে থাকে সেই ক্ষমতার মালিক রাষ্ট্র। রাষ্ট্র যদি মনে করে তারা কাজটি করবে, তাহলে তাকে রোখার ক্ষমতা কারো যে নেই এ বিশ্বাস দেশের প্রায় প্রতিটি মানুষেরই আছে। পদ্মা সেতুর ক্ষেত্রে তার প্রমাণ পেয়েছি। আমরা মনে করি, এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ ছাড়া সমাধান কোনোভাবেই সম্ভব নয় এবং আমরা আরো মনে করি, প্রধানমন্ত্রী আমাদের প্রত্যাশা পূরণ করবেন।
"