reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ০১ এপ্রিল, ২০২৩

অবৈধ প্লাস্টিক-পলিথিন কারখানা বন্ধ হোক

প্লাস্টিক বা পলিথিন পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর। কিন্তু এটি আমাদের দৈনন্দিন জীবনে গুরুত্বপূর্ণ একটি স্থান করে নিয়েছে। বাজার-সদাই থেকে শুরু করে বিভিন্ন প্রয়োজনে আমরা পলিথিন ব্যবহার করছি। এছাড়া গৃহস্থালি নানা কাজে প্লাস্টিক পণ্য হর-হামেশাই ব্যবহৃত হচ্ছে। পলিথিন বা প্লাস্টিক পোড়ালে বায়ুদূষণ হয়। আর কোথাও ফেলে দিলে কয়েকশ বছর পর্যন্ত থেকে যায়। এর মধ্যে বিষাক্ত সিসাসহ বিভিন্ন দূষিত উপাদান থাকে। যা মানবদেহের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। এ জন্য আমরা মারাত্মক রোগে আক্রান্ত হতে পারি।

আমরা সবাই জানি প্লাস্টিক ক্ষতিকর। কতটা ক্ষতিকর, কেন বা কীভাবে ক্ষতিকর, সেটি নিয়ে যেন কারো ভাবনা নেই। পেট্রোলিয়ামণ্ডজাতীয় পদার্থ থেকে এটি তৈরি হয়। প্লাস্টিক তার লাইফ সাইকেলে বিভিন্ন ধাপে মানুষ ও পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর। গ্রিন হাউস গ্যাসের একটি কারণ হলো প্লাস্টিক। প্লাস্টিক তৈরিতে প্রায় ৩৮ ধরনের কেমিক্যাল ব্যবহৃত হয়। এর মধ্যে ১২ থেকে ১৮টি অত্যন্ত ক্ষতিকর। পলিথিনও একবার ব্যবহার্য পণ্যের মধ্যে পড়ে। এটা কোনোভাবে রিসাইকেল হয় না। এটা বর্জ্য উৎপন্ন করে। এটা ভেঙে যায় ও কণায় পরিণত হয়। পরিবেশ থেকে কখনো বিলীন হয় না। একসময় আমাদের খাদ্যের সঙ্গে মিশে যায়। এখন সবকিছুর রংবেরঙের মিনি প্যাক তৈরি হচ্ছে। যত বেশি রং, তত বেশি কেমিক্যাল। প্লাস্টিক ও পলিথিন ক্ষতিকর জানা সত্ত্বেও সহজলভ্য হওয়ায় মানুষ তা ব্যবহার করছে। কারণ হাত বাড়ালেই মিলে যায় প্লাস্টিক-পলিথিন পণ্য। দেশের বিভিন্ন জায়গায় অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে প্লাস্টিক ও পলিথিন তৈরির কারখানা। প্রশাসনের অনুমতি বা পরিবেশ অধিদপ্তরের কোনো রকম ছাড়পত্র ছাড়াই এসব কারখানা দিনের পর দিন পলিথিন ও প্লাস্টিক পণ্য উৎপাদন করে যাচ্ছে। গত শনিবার প্রতিদিনের সংবাদে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বগুড়ার আদমদীঘিতে অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে প্লাস্টিক ও পলিথিন রিসাইক্লিং (পুনর্ব্যবহারের উপযোগী করে পণ্য তৈরি) কারখানা। উপজেলার সান্তাহার পৌর শহরের হবীর মোড় এলাকায় গড়ে ওঠা কারখানার যথাযথ ছাড়পত্র নেই বলে অভিযোগ আছে। তবে ফায়ার সার্ভিসের একটি ছাড়পত্র থাকলেও কারখানায় কোনো অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র রাখা হয়নি। এই কারখানায় শ্রমিক হিসেবে শিশুদের নিয়োগ করারও অভিযোগ আছে। রিসাইক্লিংয়ের জন্য রোদে শুকানো হয় কারখানার পলিথিন। সামান্য বাতাসেই উড়ে গিয়ে পড়ে ফসলি জমি ও সড়কে। ফলে নষ্ট হচ্ছে আশপাশের পরিবেশ। সরকারি বিধিনিষেধ না মেনেই গড়ে ওঠা কারখানাটিতে প্লাস্টিক ও পলিথিন বাজারজাত হওয়ায় সেখানকার পরিবেশ হুমকির মুখে পড়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। তাই জনস্বার্থে অবৈধ কারখানাটি বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা।

প্লাস্টিক ও পলিথিনের ব্যবহার নিষিদ্ধ থাকা কতটা জরুরি, সবার সেটা বুঝতে হবে। আইনে পলিথিনের ব্যবহার নিষিদ্ধ থাকার পরও পলিথিন ব্যবহার করা হচ্ছে। বাংলাদেশ বিশ্বের প্রথম দেশ, যে দেশে ২০০২ সালে আইনের মাধ্যমে পলিথিন নিষিদ্ধ করা হয়। কিন্তু ২০০৬ সালের পর এর আর তেমন কোনো কার্যকারিতা দেখা যায়নি। আমরা চাই, আইনের কার্যকারিতা বাড়ানো হোক। পরিবেশ রক্ষায় সবাইকে সচেতন ও সতর্ক হতে হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close