reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২২

নারী সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ

অপেক্ষায় থাকতে থাক থাকতে অবশেষে নেপালের দশরথ স্টেডিয়ামে মাইলফলক তৈরি করলেন বাংলাদেশের মেয়েরা। এটি দেশ ও জাতির জন্য মূল্যবান অর্জন। এ অর্জনের পেছনে রয়েছে অনেক শ্রম, অধ্যবসায় এবং দেশপ্রেম। অবশ্য দেশের জন্য যেকোনো লড়াইয়ে সর্বাগ্রে যা প্রয়োজন তা হলো দেশপ্রেম। আমাদের মেয়েরা সেই দেশপ্রেমকে পুঁজি করে দীর্ঘ সময় ধরে যুদ্ধ করে আজ সফলতা পেল। আসলে প্রেম না থাকলে আনুগত্য ঘনীভূত হয় না। বাক্যটি চিরায়ত সত্য। এ সত্যকে জীবিত রাখতে পারলে পরাজয় নিরাপদ দূরত্বে অবস্থান করে। বিজয় নিকটবর্তী হয়। বাংলাদেশের ফুটবলপ্রেমী মেয়েদের ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে, যা ইতিহাসের দীর্ঘতম পথ পরিক্রমণ করেও ছেলেরা দেখাতে পারেনি।

স্বাগতিক নেপালকে ৩-১ গোলে উড়িয়ে দিয়ে প্রথমবারের মতো সাফ নারী ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জিতে নিয়েছেন বাংলাদেশের মেয়েরা। এসব মেয়ে দেশ ও জাতির গর্ব এবং অহংকার। চোটে থাকা সত্ত্বেও শিরোপা লড়াইয়ের ম্যাচে স্বপ্নাকে খেলতে হয়েছে। দেশের প্রতি কতটা ভালোবাসা এবং আনুগত্য থাকলে এভাবে নিজেকে উৎসর্গ করা যায়! তার এই সিদ্ধান্তের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা। এই স্বপ্নার ওপরেই ভরসা রেখেছিলেন কোচ গোলাম রব্বানী। কিন্তু খেলার দশ মিনিটের মাথায় পুরোনো ইনজুরির কারণে দলের প্রধান স্ট্রাইকার স্বপ্নাকে মাঠ ছাড়তে হয়। পরিবর্তে আসেন অপর এক স্ট্রাইকার শামসুন্নাহার জুনিয়র। তিনি তার সতীর্থের সম্মান রক্ষা করেন। মাত্র চার মিনিটের মাথায় গোল করে চমকে দেন দশরথ স্টেডিয়ামের ১৫ হাজার দর্শককে। খেলা শেষ হয় ৩-১ গোলে। শামসুন্নাহার-কৃষ্ণার দল প্রমাণ করল নারী ফুটবলে তারাই শ্রেষ্ঠ।

শুধু ফুটবলেই নয়, ক্রিকেটেও বাংলাদেশের মেয়েদের অবদান কম নয়। ক্রিকেটে গত পরশুর রাতটাও ছিল বাংলাদেশের। বলা বাহুল্য, মধুর মুহূর্তগুলো উপহার দিয়েছেন নারী অ্যাথলেটরা। পরশু সন্ধ্যায় কাঠমান্ডুতে স্বাগতিক নেপালকে হারিয়ে সাফ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ জাতীয় নারী ফুটবল দল। গভীর রাতে ক্রিকেটেও সুখবর বয়ে এনেছে নিগার সুলতানার দল। টানা দুই জয়ে আইসিসি নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ বাছাই পর্বের সেমিফাইনালে উঠে গেছে বাংলাদেশ জাতীয় নারী ক্রিকেট দল। আবুধাবিতে গ্রুপ পর্বের দ্বিতীয় ম্যাচে স্কটল্যান্ডকে ৬ উইকেটে পরাজিত করেছে বাংলাদেশ দল। প্রথম ম্যাচে ১৪ রানে আয়ারল্যান্ডকে হারিয়েছিলেন বাংলাদেশের মেয়েরা। সেমিফাইনালে খেলবে চারটি দল। তার মাঝে বাংলাদেশ একটি। বাকিরা এখনো অনিশ্চিত।

এখানে একটি কথা না বললেই নয়, মেয়েদের এই সাফল্যে ছেলেদের অনুভূতিতে কি একটুও নাড়া দেয় না। সুযোগ-সুবিধার ক্ষেত্রে তারা কত গুণ পেয়ে থাকে তা আর নতুন করে বলে দেওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। আসলে আন্তরিকতা না থাকলে কোনো ভালো কিছুর জন্ম দেওয়া সম্ভব নয়। সম্ভবত বাংলাদেশি পুরুষ অ্যাথলেটদের চিন্তা ও চেতনায় সে আন্তরিকতার ঘাটতি রয়েছে। ঘাটতি রয়েছে তাদের পরিচালকদের। এখান থেকে বেরিয়ে আসার আগ পর্যন্ত তারা বাংলাদেশকে কোনো সফলতা উপহার দিতে কতটা সক্ষম তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ আছে। আমরা চাই, একজন ন্যাশনাল খেলোয়াড় হওয়ার আগে একজন দেশপ্রেমিক নাগরিক হওয়া দরকার। তারপর সততার সঙ্গে অধ্যবসায়। এ ক্ষেত্রে সততার কোনো বিকল্প নেই- এটাই সত্য এবং সর্বজনীন সত্য।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close