reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ০৩ জুলাই, ২০২২

ভাবনায় কোরবানি লক্ষ্য পশুর হাট

মুসলিমপ্রধান দেশেই আমাদের বসবাস। প্রধান ধর্মীয় উসব পবিত্র ঈদুল ফিতর আর ঈদুল আজহা। ঈদুল ফিতরের প্রধান আকর্ষণ সেমাই ও মিষ্টান্ন জাতীয় খাবার। অপর উৎসবের প্রধান আয়োজন পশু কোরবানি। দুটি উৎসবেরই মূল প্রতিপাদ্য হিংসা-বিদ্বেষকে পরিহার করে ভ্রাতৃত্বের বন্ধনকে সুদৃঢ় করা। শ্রেণিবৈষম্যের সংস্কৃতির বিপরীতে শ্রেণিহীন সমাজচেতনার এক অপূর্ব নিদর্শন। এক কাতারে সকালের নামাজ আদায় করা থেকে ঘুমাতে যাওয়ার পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত শ্রেণিবৈষম্যের সব বিভেদ দুহাতে সরিয়ে দিয়ে একে অপরের পাশে দাঁড়ানোর শিক্ষা কিছুটা হলেও এই দুই উৎসবের মাঝে খুঁজে পাওয়া যায়। আল্লাহর নির্দেশেই পশু কোরবানির মধ্য দিয়ে বিশ্বের সব মুসলমান ঈদুল আজহা উদযাপন করে থাকে। আর এই পশু সংগ্রহের অন্যতম প্রধান আকর্ষণ হয়ে ওঠে হাট বা বাজার। প্রতিবারের মতো এবারও জমে উঠতে চলেছে পশুর হাট- বিশেষ করে রাজধানীর পশুর হাট।

ঈদুল আজহার আর মাত্র বাকি ৭ দিন। এরই মধ্যে শেষ হয়েছে রাজধানীর স্থায়ী-অস্থায়ী ২২টি কোরবানির পশুর হাট। আসতে শুরু করেছে গরু, ছাগল, মহিষসহ কোরবানির পশু। তবে ক্রেতাপক্ষের উপস্থিতি এখনো কম। এবার ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন হাট ইজারা দেওয়ার পর থেকেই দেখভালে ব্যস্ত থেকেছে। ব্যবস্থাপনাকে এখনো ভালো বলেই মনে হচ্ছে। তবে একথাও সত্য- ‘শেষ ভালো যার-সব ভালো তার’। আমরা শেষ ভালো দেখার প্রত্যাশায় রইলাম।

ব্যবসায়ীদের দেওয়া তথ্য মতে, এ বছর পশুর দাম বেশি থাকবে। পশুখাদ্যের দাম বাড়তি থাকায় কোরবানির পশু পালনে প্রচুর খরচ হয়েছে। এ ছাড়া সিলেট, সুনামগঞ্জ ও উত্তরাঞ্চলের বন্যার প্রভাবও থাকছে পশুর হাটে। হাট এখনো জমে ওঠেনি। তবে দু’একদিনের মধ্যেই জমে উঠবে। তবে আগের মতো জমজমাটের আবহাওয়া বোধহয় আর কখনোই জমে উঠবে না। যুগটা ডিজিটালের। ক্রেতাপক্ষের অনেকেই অনলাইনে গরু দেখছেন, পছন্দ করছেন এবং কিনছেন। আবার খামারিরাও অনলাইনে খামার থেকে গরু ক্রেতাপক্ষের বাসায় পৌঁছে দিচ্ছেন। এছাড়া রয়েছে ইউটিউবের কল্যাণে বাসায় বসে অধিকাংশ হাটের সবকিছু পুক্সক্ষাণুপুঙ্খ জানার সুযোগ। ঘরে বসেই কার গরু, কত দাম সবকিছুই জানা যাচ্ছে খুব সহজেই। সিদ্ধান্ত নেওয়া যাচ্ছে কোন হাটে গিয়ে কার গরু কিনব। এদের আর হাটে গিয়ে গরু কিনতে হচ্ছে না। এরপর আছে চাহিদা ও জোগানের ব্যাপার।

বাংলাদেশ এখন গরু উৎপাদনে অনেকটা আত্মনির্ভর। ভারতের গরুর দিকে আর তাকিয়ে থাকতে হয় না। গরু উৎপাদনের ক্ষেত্রে আমরা এখন স্বনির্ভর। তাই বাজারে মূল্য বৃদ্ধির প্রতিযোগিতা আর সেভাবে পরিলক্ষিত হবে না বলেই বাজার বিশেষজ্ঞদের ধারণা। এখন পর্যন্ত বাজার মার্জিত স্বভাবেই রয়েছে। আগামী সপ্তাহের ফলাফলের ওপর জানা যাবে মার্জিত স্বভাব কতটা অমার্জিতের দিকে হেলে পড়েছে। তবে এবারে সম্ভাবনা কম। বেশিরভাগ ক্রেতাই আসবে মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে। ক্রয়ক্ষমতার বাইরে যাওয়ার ক্ষমতাও তাদের নেই। আর করোনা পরবর্তী সময়ে তাদের এই ক্রয়ক্ষমতা এখন অনেকটা পড়তির দিকে। পাশাপাশি চাহিদার চেয়ে বাজারে পশুর জোগান থাকবে বেশি। সুতরাং সার্বিক বিবেচনায় এবারের পশুর হাটের অস্থির হওয়ার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ, যা ক্রেতা-বিক্রেতা ও রাষ্ট্রের জন্য একটি শুভসংবাদ।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close