reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২৭ জানুয়ারি, ২০২২

সুপার স্পিডে ইসি

নির্বাচন কমিশন (ইসি) নিয়ে বিতর্কের শেষ নেই। নানান সমস্যা নিয়ে এ অবস্থা। বিতর্ক কমিয়ে আনার ব্যাপারে তৎপরতা চলছে। ইসির পক্ষ থেকে তো বটেই। অনেকে অনেকভাবেই পরামর্শ দিয়েছেন এবং এখনো তা অব্যাহত আছে। অবস্থা পরিবর্তনে নানান কর্মকাণ্ড চলছে। সবই এখনো পরীক্ষাধীন বলা যেতে পারে। কবে নাগাদ এই বিতর্ক শেষ হবে, তাও বলা কঠিন। তবে আমরা বিতর্কের অবসান চাই। সম্ভবত অবস্থার পরিবর্তন আনতে প্রযুক্তির আধুনিকীকরণের দিকে মনোযোগ দিয়েছে ইলেকশন কমিশন। তারই অংশ হিসেবে সুপার স্পিড নেটওয়ার্কে যুক্ত হচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি।

সুপার স্পিড নেটওয়ার্কের মাধ্যমে যুক্ত হওয়ার মধ্য দিয়ে দুর্বল ও ধীরগতির মোবাইল ডেটা যুগের অবসান ঘটবে। একই সঙ্গে অনেক বাধাবিপত্তির অবসান হবে। নিরবচ্ছিন্নভাবে চলবে নির্বাচন-সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম। ৫১৯ উপজেলা ও থানা নির্বাচন অফিসে কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত হবে। এসব কিছুকে এগিয়ে নিতে সরকারি প্রতিষ্ঠান বিটিসিএলের সঙ্গে চুক্তি বা সমঝোতায় পৌঁছাতে কাজ করছে ইসি। আশা করা যায়, চুক্তি বাস্তবায়ন হবে এবং প্রযুক্তিগত দিক থেকে ইসি আরো স্বচ্ছতার দিকে কিছুটা এগিয়ে যাবে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, মোবাইল ডেটায় এত দিন কমিশনের সব কার্যক্রম চলে আসছে। কিন্তু নেটওয়ার্ক কার্যক্রমের দুর্বলতায় কাজে বিঘœ ঘটত প্রতিনিয়ত। নির্বাচন, নির্বাচনের ফল, তথ্য আদান-প্রদান ও ভোটারের কার্যক্রম তাৎক্ষণিক এবং জরুরিভিত্তিতে নিষ্পত্তি করার কাজে বিশেষ সহায়ক ভূমিকা রাখবে। পুরোনো দুর্বলতা দূরীভূত হবে। নিরবচ্ছিন্ন নেটওয়ার্ক না থাকায় বিব্রতকর অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার সুযোগ তৈরি হবে। তাদের মতে, নির্বাচন কমিশনকে ডিজিটাল যুগের সঙ্গে তাল মেলাতে সুপার স্পিডে যুক্ত হওয়া ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। এ ছাড়া সার্বিকভাবে কাজের গতি বাড়বে, যা নিঃসন্দেহে একটি ইতিবাচক দিক।

একইভাবে প্রতিটি কাজের দুটি দিক বর্তমান। একটি পজিটিভ অপরটি নেগেটিভ। অপটিক্যাল ফাইবারের যেমন সুবিধা আছে, অসুবিধাও কম নয়। অসুবিধার মধ্যে ফাইবারগুলো ধাতব তারের চেয়ে সহজেই ভেঙে যায়। অতিরিক্ত যতেœর প্রয়োজন পড়ে। অল্প অবহেলাতেই ভেঙে পড়তে পারে। এ ছাড়া অপটিক্যাল ফাইবারগুলো ইনস্টল করা খুবই ব্যয়বহুল। এটি কেবল মাটিতেই ব্যবহৃত হতে পারে। মোবাইল যোগাযোগের সঙ্গে কাজ করতে অক্ষম। তবে যেভাবেই ব্যাখ্যা করা হোক না কেন, সুবিধার পাল্লাই ভারি। এটি দ্রুত ইন্টারনেট সংযোগে সক্ষম। জটিল আবহাওয়ায় কোনো ধরনের অসুবিধার সম্মুখীন হয় না। অত্যন্ত নির্ভরযোগ্য। অপটিক্যাল ফাইবার একটি ডাইলেট্রিক তরঙ্গ গাইড গঠন করে, যা বৈদ্যুতিক চুম্বকীয় হস্তক্ষেপ থেকে মুক্ত থাকে।

প্রযুক্তির উন্নয়ন করলেই সব সমস্যার সমাধান হবে- এমনটি ভাবা ঠিক নয়। আণবিক শক্তির উদ্ভাবন বিষয়টি আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছে। এ ক্ষেত্রে প্রযুক্তির ব্যবহারই মুখ্য। আমরা নাগাসাকি-হিরোশিমার পরিণতি দেখেছি। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে দুই দুটি শহরকে ভস্মীভূত হতে দেখেছি। দেখেছি মুহূর্তের মাঝে অগণিত মানুষের মৃত্যু। মুখ্যত প্রযুক্তিই এই ধ্বংসযজ্ঞের হোতা নয়। এর পেছনে রয়েছে মানুষের সিদ্ধান্ত। দায়ী যদি করতে হয়, তাহলে প্রযুক্তি নয়, মানুষকেই করতে হবে। প্রযুক্তির উন্নয়ন ইসির কাজকে অনেক সুবিধা জোগাবে- এ কথা সত্য। কিন্তু প্রযুক্তির উন্নয়নই শেষ কথা নয়। মানুষের নৈতিকতাই শেষ কথা। আর সব কিছু নির্ভর করবে সেখানে সেবা দেওয়ার জন্য নিয়োজিত কর্মী বাহিনীর ওপর।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close