reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ১৭ জানুয়ারি, ২০২২

এখনো দ্বিতীয় ডোজের বাইরে আড়াই কোটি

করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে সরকারের ভূমিকা ইতিবাচক। তুলনামূলক বিচারে অন্যদের তুলনায় আমরা অনেকটা এগিয়ে। প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজের পাশাপাশি এখন চলছে বুস্টার ডোজ। এ পর্যন্ত দেশের ছয় লাখ লোককে বুস্টার ডোজ দেওয়া হয়েছে। যদিও এখনো প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণ করেনি দেশের প্রায় আড়াই কোটি মানুষ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নানান কারণে টিকা নেওয়ার ব্যাপারে মানুষের আগ্রহ আর আগের মতো নেই। প্রথমত, অজ্ঞতাই এর প্রধান কারণ। তারা জানেন না টিকা নেওয়ার সুফল। এ ক্ষেত্রে সরকারের দায়িত্ব রয়েছে। টিকা নেওয়ার ব্যাপারে সরকারের তেমন একটা প্রচার নেই বললেই চলে। যেমনটা আছে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার প্রশ্নে। এ ব্যাপারে সরকারের নজরদারি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

তবে বরাবরের মতো এবারও দায় নিতে নারাজ স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। তাদের দাবি, প্রতিটি এলাকায় পর্যাপ্ত প্রচার চালানো হয়েছে। টিকাকে জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। যদি তাদের উচ্চারিত শব্দাবলিকে সত্য বলে ধরে নেওয়া যায় তাহলেও প্রশ্ন থেকে যায়। আর সে প্রশ্নটি হলো, এত প্রচারের পরও কেন মোট জনসমষ্টির এক বিশাল অংশ এখনো টিকা নেয়নি বা টিকা কার্যক্রমের বাইরে থেকেছে। নিশ্চয়ই কোথাও না কোথাও ফাঁক থেকে গেছে। আমাদের সেই ফাঁক চিহ্নিত করে তা পূরণ করতে হবে। ঢালাওভাবে বললে চলবে না- ‘আমরা আমাদের কাজ করেছি’। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ভাষা অনেকটা সে রকম। এ রকম ভাষা ব্যবহার অনেকটা দায় এড়ানোর কথাই স্মরণ করিয়ে দেয়।

দেশে গত বছরের ২৭ জানুয়ারি করোনার টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়। টিকা নিতে এ পর্যন্ত দেশে নিবন্ধন করেছেন ৮ কোটি ১৭ লাখ ৮০ হাজার ১৪৯ জন। এত দিন মাস্ক না পরলে সরকারি কোনো সংস্থায় সেবা মিলত না। এখন সেবা নিতে টিকা গ্রহণকেও বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। তবে বাধ্যতামূলক করা হলেও তার বাস্তবায়ন নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। এখানেও সরকারের নজরদারি দরকার। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কোনো টিকাই সংক্রমণ থেকে শতভাগ সুরক্ষা দিতে পারে না। তবে এটি করোনার তীব্রতা কমিয়ে মৃত্যুঝুঁকি কমাতে সক্ষম। তাই সবার উচিত টিকা গ্রহণে এগিয়ে যাওয়া। এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়েরও দায়িত্ব রয়েছে। যারা প্রথম ডোজ নেওয়ার পর দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণ করেননি, স্থানীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কাছে তাদের সব ধরনের ডেটা আছে। অধিদপ্তর অবিরত যোগাযোগ করে তাদের সতর্ক করতে পারে। আহ্বান জানাতে পারে। মোদ্দাকথা, নিজের দেশের ও দশের স্বার্থে এ কার্যক্রমকে সফল করা জাতি হিসেবে আমাদের সবার দায়িত্ব।

এদিকে করোনা তার রূপ পরিবর্তন করে নতুন রূপে চোখ রাঙাতে শুরু করেছে। বিশ্বব্যাপী এর সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী। অনেক দেশকে এরই মধ্যে লকডাউনে যেতে হয়েছে। ওমিক্রন নামের এই ভাইরাস আগের চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এর সংক্রমণ ক্ষমতা এবং ব্যাপকতাও অনেক বেশি। পাশের দেশ ভারতে এর ব্যাপকতা পরিলক্ষিত হচ্ছে। বাংলাদেশও শঙ্কা তিরোহিত করতে পারেনি। এরই মধ্যে বাংলাদেশেও এর নমুনা পাওয়া গেছে। সংক্রমণও আবার বাড়তে শুরু করেছে। এমতাবস্থায় প্রতিরোধ আবার জরুরি হয়ে পড়েছে। আর এই প্রতিরোধে সরকার ও জনগণকে যূথবদ্ধভাবে এগিয়ে আসতে হবে। কেননা জীবনের চেয়ে মূল্যবান আর কিছু হতে পারে না। তাই আসুন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাসহ টিকাগ্রহণকে নিজেরাই বাধ্যতামূলক হিসেবে গ্রহণ করি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close