reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ১৬ জানুয়ারি, ২০২২

সংকটে বালু নদ সুরাহা জরুরি

নদীমাত্রিক দেশ। নদীর ওপরে নির্ভরশীল জনজীবন। আমি বাংলাদেশের সেই সময়ের কথা বলছি। এখন আর সেই নদী নেই। নেই সেই পরিবেশ। নদী ভরাট হতে হতে হারিয়েছে সে তার রূপবৈচিত্র্য। জনজীবনেও এসেছে পরিবর্তন। পেশা বদলেছে অনেকের। বন্যা হয়েছে নৈমিত্তিক সঙ্গী। নদীর দুর্দশার সঙ্গে বেড়েছে মানুষের কষ্ট। তারপরও এ দেশ এখনো নদীমাতৃক।

রাজধানী ঢাকাকে জড়িয়ে এখনো বেঁচে আছে পাঁচণ্ডপাঁচটি নদী। কিন্তু কোনাটিই ভালো নেই। ভালো নেই বালু নদ। দেখা দিয়েছে চরম নাব্যতা সংকট। আর এই নাব্যতা সংকটে ভুগছে দেশের প্রতিটি নদ ও নদী। ভুগতে হচ্ছে দেশের সাধারণ মানুষকে। বাধাগ্রস্ত হচ্ছে অর্থনীতি। বাধাপ্রাপ্ত অর্থনীতির নেতিবাচক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার শিকার হচ্ছে দেশ-জাতি ও রাষ্ট্র।

এই সংকট থেকে রেবিয়ে আসার জন্য সরকার এ যাবৎ কম করেনি। সেই প্রক্রিয়া অব্যাহত আছে। যদিও সেই প্রচেষ্টা বড় দাগে কোনো সাফল্য বয়ে আনতে পারেনি। যার একটি উদাহরণ বালু নদ। যদিও এরকম উদাহরণ অনেক টানা যেতে পারে। আমরা এখানে শুধু বালু নদের কথাই বলছি এবং বলব। দৈর্ঘ্যে এবং প্রস্থে এই নদ খুব একটা বড় নয়। তুলনামূলক বিচারে একে ছোট বলাই বাঞ্ছনীয়। একসময় এই নদের গভীরতা ছিল প্রায় ২০ ফুটেরও বেশি। এখন তা অর্ধেকে নেমে এসেছে। যা ভারী জলযান চলার জন্য অযোগ্য। আটকে যাচ্ছে বালুবাহী ছোট-বড় বহু বালুভর্তি বাল্ক হেড। বাল্ক হেড আটকে যাওয়ার কারণে সৃষ্টি হচ্ছে নৌ-জট। বিঘিœত হচ্ছে ব্যবসা-বাণিজ্য।

ড্রেজিংয়ের অভাবে কয়েক বছর ধরে বালু নদের বিভিন্ন এলাকায় নাব্যতা সংকট দেখা দেয়। ২০১৩-১৪ সালে বিআইডব্লিউটিএর রক্ষণাবেক্ষণ বিভাগ ড্রেজিং কার্যক্রম গ্রহন করে। এরপর আর কোনো কার্যক্রম চোখে পড়েনি। ফলে নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে পানির পরিমান আজ ১০ ফুট উচ্চতায় এসে দাঁড়িয়েছে। ১৪ থেকে ২২ মাঝের এই ৮ বছরে দায়িত্বহীনতার কারণে নদীর গভীরতা কমেছে ১০ ফুট। এভাবে আর আটটি বছর চললে বালু নদের গভীরতা শুন্যে এসে দাঁড়ানোর সম্ভাবনা খুবই প্রবল।

পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বালু নদের নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে বৃহৎ পরিকল্পনা প্রয়োজন। সরকারের একার পক্ষে যেমন নাব্যতা টিকিয়ে রাখা সম্ভব নয় একইভাবে সবার অংশগ্রহণ ছাড়া নদীকে বাঁচিয়ে রাখাও সম্ভব নয়। তবে নেতৃত্বটা দিতে হবে সরকারকেই। একইভাবে বলা যায়, দেশ স্বাধীন করা যতোটা সহজ- রক্ষা করা ততোটা সহজ নয়। প্রকৃত অর্থে বহুগুণে কঠিন। নদীর জন্মের কথা প্রকৃতিই ভালো বলতে পারে। ইতিহাস ঘেঁটে আমরাও জানতে পারি। শুধু; জানি না কী করে রক্ষা করতে হয়। এখানেই দুর্বলতা। এই দুর্বলতার মেয়াদ বৃদ্ধি পেলে বাংলাদেশকে মরুভূমি হতে বেশি কালক্ষেপণ করতে হবে না বলেই মনে করছেন রিবেশবাদীরা।

আপাতত বালুতেই ফিরে আসা যাক। আমরা মনে করি, রাজধানীর দেহকে জড়িয়ে যে কয়টি নদী বেঁচে থাকার মরণপণ চেষ্টা করছে- তাদেরকে বাঁচতে সাহায্য করাটা রাষ্ট্রের সুনাগরিক হিসেবে আমাদের দ্বায়িত্ব। আসুন সবচেয়ে ছোট দিয়েই শুরু করা যাক। বালু নদ আবার সুস্থ হয়ে উঠুক, ফিরে পাক অতীত ঐতিহ্য। আর সে প্রচেষ্টার দিকে আমরা এগিয়ে যাই।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close