reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২১

মেধার জয় হবে তো!

সরকারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অনেক সময় অনেক মতামতের জন্ম নেয়। বিতর্কের অবতারণা করে। আর আলোচনা-সমালোচনার তো কোনো শেষ নেই। এ যেন গল্যাডিয়েটর যুগে ইতি ও নেতির মল্লযুদ্ধ। একজনকে তো হারতেই হবে, এটাই নিয়ম। আদিম সাম্যবাদী যুগ থেকে চলে আসার বিবর্তনে যুদ্ধটা থেমে নেই। আর এই যুদ্ধের মধ্য দিয়ে এগিয়েছে সময়ের সীমাবদ্ধ সমাজ।

একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় অন্য সব খাতের সঙ্গে শিক্ষাকে সমান গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনায় নিয়েছে সরকার। যুগোপযোগী করাই লক্ষ্য। সুচিন্তিত একটি কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের মাধ্যমে শিক্ষাকে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিনির্ভর করতে বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এই বিশেষ উদ্যোগ বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন এনে দিতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে এর বিপরীত চিন্তাও যে নেই, তাও নয়। কিন্তু এবারের বিষয়টি এতটাই ইতিবাচক যে, বিরোধিতার সুযোগ খুবই কম। কেননা বিষয়টি সম্পূর্ণ ভিন্ন ট্র্যাকের। যেখানে সফলতা এলে ফলাফল যাবে শিক্ষার্থীদের পক্ষে।

মুখস্থ বিদ্যা নয়, শিক্ষাক্রম হবে বাস্তব অভিজ্ঞতানির্ভর। নতুন শিক্ষাক্রমের পথরেখা অনুসারে, প্রাক-প্রথমিক থেকে উচ্চমাধ্যমিক স্তরের শিক্ষাব্যবস্থায় বড় পরিবর্তনের কর্মটি আগামী বছর পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। চালুর জন্য প্রয়োজন হবে নতুন পাঠ্যবই। সবকিছু ঠিকঠাক চললে ২০২৩ সাল থেকে নতুন শিক্ষাক্রমের নবযাত্রার উদ্বোধন। আর ২০২৫ সালে প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের নতুন শিক্ষাক্রম পুরোপুরি শুরু হবে। আর এই কর্মসূচির মধ্য দিয়ে নতুন, আধুনিক ও বিজ্ঞানসম্মত শিক্ষার মহাসড়কে প্রবেশ করবে বাংলাদেশ। এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন অনেকেই। তার মধ্যে শিক্ষাবিদ অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ একজন। তিনি এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, মুখস্থ সর্বস্ব বোকাদের যুগ শেষ হয়েছে। মুখস্থ করে পড়া শেখার পদ্ধতি জ্ঞানের প্রতি ভীতি জাগানো ছাড়া আর কিছু নয়। তার মতে, জ্ঞানের মতো আনন্দময় বিষয় আর কিছু নেই। সামনে মেধাসম্পন্ন, আনন্দময় আর বুদ্ধিবৃত্তির যুগ। মুখস্থ নয়, যাদের চিন্তাশক্তি বেশি হবে তারাই দেবেন নেতৃত্ব। অপর একজন শিক্ষাবিদ ও অধ্যাপক সৈয়দ মন্জুরুল ইসলাম বলেছেন, দশম শ্রেণির আগে কোনো পাবলিক পরীক্ষা নেই, এটি ইতিবাচক। তবে...’

তবে একটা থেকেই যায়। নতুন এই পদ্ধতিতে শঙ্কাও কম নয়। পাঠদানে যারা জড়িত থাকবেন, তারা কতটা সৎ হতে পারবেন, সেখানেই শঙ্কা। বাজারে আমাদের সুনামের শেষ নেই। আমরা নানা বিষয়ে নানাভাবে পারদর্শী। বিশেষ করে, অনৈতিক কাজের ওপর আমাদের পারদর্শিতার প্রশ্নে আন্তর্জাতিকমানের সার্টিফিকেট আছে। বিশ্ববাজার দুর্নীতিতে আমরা কয়েকবার প্রথম হয়েছি। এখনো শীর্ষ পাঁচের মধ্যেই আমাদের অবস্থান। এই যখন অবস্থা তখন বাজার দুর্নীতির মধ্যেই ছেড়ে দিতে হবে আমাদের সন্তানদের। মানুষ করার দায়িত্বে থাকবেন শিক্ষকরা। যারা বাজার দুর্নীতির বৃত্তে শৃঙ্খলিত এক-একজন মানুষ। রেলের ইঞ্জিন নষ্ট হলে রেলগাড়ির যেমন চলার ক্ষমতা থাকে না, শিক্ষার ক্ষেত্রেও তাই। অনৈতিকতার পুকুরে সাঁতার কাটা শিক্ষককে দিয়ে আর যাই হোক শিক্ষাকার্যক্রম চালানো সম্ভব নয়। বিশেষ করে, তাও যদি হয় নতুন শিক্ষাক্রম। তাই শুরুর আগে যা কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষার আছে তা করে নেওয়াই ভালো। সবার আগে মনে রাখতে হবে- ‘উদ্যোগটি ইতিবাচক’।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close