reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ১৯ অক্টোবর, ২০২০

হুর তালিকায় ‘ব্যানকোভিড’ গর্বিত দেশ ও জাতি

অনেকেই মনে করেন, আমাদের যেন গর্ব করার মতো কিছু নেই। কথাটা সত্য নয়। গর্ব করার মতো অনেক কিছুই আছে। কিন্তু আমরা সে মানসিকতা থেকে অনেক দূরে ছিটকে পড়েছি। সমাজে ভালো-মন্দ দুটোরই অবস্থান পাশাপাশি। চর্চার ক্ষেত্রে আমরা যেন মন্দকে নিয়ে চলতে একটু বেশি মনোযোগী। তাই ভালোর দিকটা সামনে আসে না বা আমরা আমাদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের কারণে সামনে আনা থেকে বিরত থাকি। দেশের মিডিয়াও যেন মন্দ দিকটি তুলে ধরার ক্ষেত্রে বেশি উৎসাহী। আমরা বলছি না যে, মন্দ দিককে বাদ দিতে হবে। তবে মন্দ দিকের পাশাপাশি সমান্তরালভাবে ভালো দিককেও তুলে ধরতে হবে। তা না হলে জাতির জন্য আগামী প্রজন্মকে পথ পরিদর্শনের ক্ষেত্রে একটি নেতিবাচক অনুশীলন সমাজকে প্রভাবিত করবে; যা জাতিকে কেবল পেছনের দিকে ঠেলে দিতে শক্তি জোগাবে।

করোনাকালের ভ্যাকসিন নিয়ে বিশ্বব্যাপী যে তোলপাড় হচ্ছে, তা এখনো থামেনি। পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। কিন্তু এখনো চূড়ান্ত সফলতা আসেনি। কবে আসবে তার সীমারেখা দিতে পারেনি কেউ। ঠিক এমন একটি সময়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তালিকায় উঠল বাংলাদেশ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কোভিড-১৯-এর ভ্যাকসিন ক্যান্ডিডেট তালিকায় বাংলাদেশের গ্লোব বায়োটেক লিমিটেডের আবিষ্কৃত তিনটি ভ্যাকসিনকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। গ্লোবের ভ্যাকসিনের ব্র্যান্ড নাম ‘ব্যানকোভিড’। গত শনিবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা তাদের ওয়েবসাইটে এ তথ্য প্রকাশ করে। এর মাধ্যমে করোনার ভ্যাকসিন তৈররি প্রস্তুতিতে সফলতার ক্ষেত্রে বিশ্বের ১৭০ দেশের মধ্যে বাংলাদেশ অন্তর্ভুক্ত হলো। এখানেই শেষ নয়। তালিকায় অনেক ওপরের দিকে রয়েছে বাংলাদেশের নাম। ২০ নম্বরে বাংলাদেশের অবস্থান। যেখানে অক্সফোর্ডের অবস্থান ২২ নম্বরে। আমেরিকার মর্ডানেরও ওপরে রয়েছে বাংলাদেশের অবস্থান।

বাংলাদেশে করোনাভাইরাস মোকাবিলায় গঠিত জাতীয় টেকনিক্যাল কমিটির পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘করোনার তিন ধরনের ভ্যাকসিন তৈরির জন্য তালিকাভুক্ত হওয়াটা আমাদের জন্য বড় সুখবর এবং দেশের জন্য গর্বের।’ সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট আইইডিসিআরের পক্ষ থেকেও একই শব্দাবলি উচ্চারিত হয়েছে। ইনস্টিটিউটের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘এটি বিরাট সাফল্য। দেশের জন্য খুবই খুশির খবর।’ প্রতিষ্ঠানদ্বয়ের মন্তব্যের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে আমরাও বলতে চাই, এ আবিষ্কার বিশ্ব মানচিত্রে আমাদের মর্যাদাকে আরো সুসংহত করেছে। এখন প্রয়োজন পৃষ্ঠপোষকতার। সঠিক পৃষ্ঠপোষকতা পেলে আমাদের আবিষ্কৃত ভ্যাকসিনই হতে পারে করোনা থেকে পরিত্রাণের প্রথম সফলতা।

বাংলাদেশে চীনা টিকার পরীক্ষা কিছুটা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। পরীক্ষার কোনো খরচ বাংলাদেশ বহন করবে না। ঠিক এমন একটা সময়ে দেশি প্রতিষ্ঠান গ্লোব বায়োটেকের উদ্ভাবিত টিকা মানুষের ওপর পরীক্ষার (ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল) সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। একে এগিয়ে নেওয়া এখন রাষ্ট্রের দায়িত্ব। আসন্ন শীত মৌসুমে করোনা সংক্রমণের মাত্রা বাড়তে পারে। আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। আমরা মনে করি, আমাদের গবেষণা কার্যক্রম যেন তার গতিকে বাড়িয়ে সফলতার চূড়ান্তে পৌঁছাতে পারে। তার জন্য সব ধরনের সহযোগিতাসহ প্রতিষ্ঠানটির পাশে আজ রাষ্ট্র এবং জাতিকে সম্মিলিতভাবে এগিয়ে আসতে হবে। যদি সম্মিলিতভাবে প্রতিষ্ঠানটিকে সহযোগিতা দেওয়া হয়, তাহলে দ্রুতই ভ্যাকসিন উৎপাদনের প্রথম দেশ হিসেবে ইতিহাসের পাতায় নাম লিখাতে আমরা সক্ষম হব। রোগ প্রতিরোধের ক্ষেত্রে বিশ্ব মানচিত্রে যা হতে পারে একটি মাইলফলক।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close