শরিফুল গণি উসমানি, গবি

  ১৯ মার্চ, ২০২৪

অনন্যারা জেগে উঠুক আপন মহিমায়

ছোটবেলা থেকেই আঁকাআঁকি, রংতুলির সঙ্গে বন্ধুত্ব। সময় পেলেই রংতুলি নিয়ে বসে যেত সে। বিভিন্ন আর্ট কম্পিটিশনে বরাবরই ১ম/২য় হয়েছে। পড়াশোনার পাশাপাশি অঙ্কনেই বেশি সময় ব্যয় করে সঙ্গে সেলাই মেশিনের কাজটাও তার মায়ের থেকে রপ্ত করেছে। বলছি গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ রসায়ন ও অণুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী অনন্যার কথা।

যে অনন্যার কাছে কখনোই দোকানের সামগ্রী ভালো লাগত না। যে সব সময়ই চেষ্টা করত কিছু একটা করে নতুনত্ব আনার, যা তাকে সবার থেকে ভিন্নভাবে নিজেকে উপস্থাপন করতে সাহায্য করে।

করোনাকালীন সময়ে ফেসবুকে অন্যদের কাজ দেখেই অনুপ্রাণিত হয়ে শাড়ি, পাঞ্জাবিসহ বিভিন্ন পোশাকে হ্যান্ড পেইন্ট করা শুরু। তার ড্রইং শিক্ষক একটি বুটিক হাউসের ডিজাইনার হওয়ায় তার জন্য কাজটি আরো সহজ হয়ে যায়। তার থেকেই মূলত এই কাজ রপ্ত করে অনন্যা।

প্রথম দিকে বাড়ির সবার কাপড় নিয়ে কাজ করলেও কিছুদিন পরই তার শিক্ষকের অর্ডারের শাড়ি-পাঞ্জাবিগুলোতে কাজ কারার মাধ্যমে এক বছরের মধ্যেই দক্ষ হয়ে ওঠে। কাজ শুরুর পর পরিচিতদের মধ্যে বেশি অর্ডার করলেও ধীরে ধীরে বাইরেও জনপ্রিয়তা লাভ করে।

একান্ত আলাপচারিতায় অনন্যা বলেন, ২০২১ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত আমি অফলাইনে কাজ করলেও বন্ধু-বান্ধবী এবং পরিবারের উৎসাহে মূলত অনলাইন পেজ ‘অনন্যা’ চালু করা। পরিবারের সবার সহযোগিতা শুরু থেকেই ছিল, যার জন্য কোনো প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়নি। আমার মনে হয় আমার আরো কিছু শেখা দরকার। প্রথমে আমি একটি পাঞ্জাবি দিয়ে শুরু করেছিলাম এখন আমার পেজে শাড়ি, পাঞ্জাবি, বিভিন্ন ধরনের হাতে বানানো গহনা, চুড়ি আরো বিভিন্ন কালেকশন রয়েছে। একদমই নতুন হিসাবে আমার পেজ থেকে আমি ভালো সারা পাচ্ছি। পেজ থেকে যতগুলো অর্ডার এসেছে আলহামদুলিল্লাহ সবার রিভিউ ভালো। আমার পেজটা মূলত কাস্টমাইজড বেইজড।

অনন্যা আরো বলেন, গ্রাহকদের চাওয়া অনুযায়ী আমি ডিজাইন করে থাকি। এমন অনেকেই আছেন আমার পেজে যারা কাপড় এবং ডিজাইনের ব্যাপারটা সম্পূর্ণই আমার ওপর ছেড়ে দেন। আমার প্রতি তাদের এই বিশ্বাস ও ভরসার জায়গাটা আমি তৈরি করতে পেরেছি এবং এটাই আমাকে প্রতিনিয়ত অনুপ্রেরণা জোগায়। ভালো লাগে তখনই যখন দেখি কারোর স্পেশাল অকেশনে পরার পোশাকটি আমার হাতে বানানো। আমার ইচ্ছা আছে আমার একটা বুটিক হাউস থাকবে আড়ংয়ের মতো। এক জায়গায় আমার হাতে বানানো সবকিছু পাওয়া যাবে। হাতে বানানো সবকিছুর দাম অনেক বেশি হয়, যার কারণে ইচ্ছা থাকলেও সবার সাধ্য থাকে না। আমার ইচ্ছা আছে আমার ডিজাইন করা সবকিছু যাতে সবাই কমমূল্যে নিতে পারে সেই অনুযায়ী আমি কাজ করব। আমাদের দেশে এখন হ্যান্ড পেইন্ট শিল্পীদের অভাব নেই, তবে বেশির ভাগেরই কাজের ধারা একই রকম। এই কাজে আমি একটু ভিন্নতা আনার চেষ্টা করছি। যখন আমার মনে হবে যে আমি সবার থেকে ভিন্ন কিছু করতে পেরেছি, তখন আমি এই কাজটা নিয়ে আরো বড় পরিসরে যাত্রা শুরু করব। বাংলাদেশের আর্থসামাজিক ব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য হস্তশিল্পের ওপর জোর দেওয়া উচিত। সরকার অনন্যাদের পাশে দাঁড়ালে বেকারত্ব দূর হওয়ার পাশাপাশি দেশের অর্থনীতিতে রাখবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close