আতিকুর রহমান, ইবি

  ০৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

ওরা হাসি ফোটায়

শীতে কাঁপছে মানুষ। কাঁপছে দেশ। গরিব ও অসচ্ছল মানুষের জন্য শীত যেন অভিশাপ। গরমকালে তো যেখানে-সেখানে মাথা গুঁজে ঠাঁই নেওয়ার পরিস্থিতি থাকে। রাস্তার পাশে কিংবা ভাঙা ঘরে একটা ইটে মাথায় দিয়েও ঘুমানো যায়। কিন্তু শীতের সময় তো সেটা সম্ভব না। বিভিন্ন শহরের রাস্তার দুপাশে, রেলওয়ে স্টেশনে দেখা যায় শুধু ছালার চট গায়ে দিয়ে শুয়ে আছে হাজারো মানুষ। গত বছর কারওয়ান বাজারের চিত্র ডেইলি স্টারে প্রকাশিত হওয়ার পর মানুষের বিবেককে চরমভাবে নাড়া দিয়েছে।

নরসিংদী সদর উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল হলো আলোক বালী ইউনিয়ন। নরসিংদী শহরের সঙ্গে যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম নৌপথ। ইউনিয়নের আয়ের উৎস নদীর মাছ, কৃষিপণ্য আর বিদেশে থাকা লোকদের মাধ্যমে অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রা। আলোক বালী ইউনিয়নের প্রায় পাঁচ হাজারের অধিক মানুষ মধ্যপ্রাচ্যসহ নানা দেশে কর্মরত আছে। পরিবারের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য নিজের সবকিছু বিলীন করে দিচ্ছে।

পরিবারের পাশাপাশি এলাকার গরিব ও অসচ্ছল মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য ২০১৯ সালে ‘মানবসেবাই আমাদের লক্ষ্য’ স্লোগান সামনে রেখে গঠন করে আলোক বালী ইউনিয়ন মানবকল্যাণ পরিষদ। এলাকার অসচ্ছল মানুষকে আর্থিক সুবিধা দিতে এবং বিপদে পাশে দাঁড়াতে বদ্ধপরিকর সংগঠনটি।

অসচ্ছল রোগীর চিকিৎসার খরচ থেকে শুরু করে ঈদ উপহার, শীতবস্ত্র বিতরণসহ নানা সামাজিক ও মানবিক কার্যক্রমের মাধ্যমে দরিদ্র মানুষের হাসি ফুটিয়ে ইতিমধ্যে বেশ সুনাম কুড়িয়েছে।

সংগঠনের কাজ পরিকল্পিতভাবে করতে কেন্দ্রীয় কমিটির সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন দেশে অবস্থানরত প্রবাসীদের নিয়ে গঠন করা হয়েছে উপকমিটি। ইতিমধ্যে বাহরাইন, সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরব, মালয়েশিয়া, কুয়েতে অবস্থানরত প্রবাসীদের দেশভিত্তিক উপকমিটি গঠন করা হয়েছে।

আলোক বালী ইউনিয়ন মানবকল্যাণের সভাপতি কাউসার সরকার বলেন, মানুষের জন্য কাজ করার ইচ্ছে ছোট থেকেই লালন করে আসছি। আর্থিক অসচ্ছল মানুষের দুঃখে, কষ্টে সব সময়ই ব্যথিত হয়ে তাদের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করতাম। আলোক বালী ইউনিয়ন মানবকল্যাণ পরিষদ মূলত সুবিধাবঞ্চিত মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে কাজ করে যাচ্ছে।

সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসাইন বলেন, আলোক বালী ইউনিয়ন মানবকল্যাণ পরিষদ মূলত অলাভজনক স্বেচ্ছাসেবী একটা সংগঠন। শীত, ঈদুল ফিতর, ঈদুল আজহা, গরিব রোগীর চিকিৎসার সহায়তাসহ নানা সময়ে গরিব ও অসহায় মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর চেষ্টায় ব্যস্ত আমরা।

সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক আরিফুল ইসলাম হাবিব বলেন, কবি জসিমউদদীনের ‘সবার সুখে’ কবিতা পড়ার সময়ই গরিব মানুষের জন্য কাজ করার ইচ্ছে তৈরি হয়। এখন মানবকল্যাণ পরিষদে যুক্ত হয়ে বৃহৎ পরিসরে কাজ করা সুযোগ হয়েছে। বিভিন্ন সময়ে অসচ্ছল ও দরিদ্র মানুষের হাসি ফোটাতে সক্ষম হয়েছি। মানবকল্যাণ পরিষদ আর্থিক সচ্ছল মানুষকে অসচ্ছল মানুষদের সাহায্য-সহযোগিতায় উদ্বুদ্ধ করতে এবং গরিব মানুষের সব বিপদণ্ডআপদে পাশে থাকার শিক্ষা দেয়। আর গরিবের ব্যথায় সমব্যথী হওয়া মূলত মানবকল্যাণ পরিষদের শিক্ষা। মানবকল্যাণের প্রতিটি সদস্য ন্যায় ও নিষ্ঠার সঙ্গে তাদের দায়িত্ব পালনে বদ্ধপরিকর। সামাজিক ও মানবিক কাজে লাগাতার কার্যক্রম পরিচালনা করায় ইতিমধ্যে সব শ্রেণির মানুষের কাছে প্রশংসা কুড়িয়েছে সংগঠনটি। গরিব মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর কাজটা সুন্দরভাবেই করে যাচ্ছে সংগঠনটি। বর্তমানে আলোক বালী ইউনিয়ন মানবকল্যাণ পরিষদ গরিব ও অসহায় মানুষের কাছে এক আস্থা ও ভরসার জায়গায় পরিণত হয়েছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close