মুসাদ্দিকুল ইসলাম তানভীর, বাকৃবি

  ০১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

এই সুন্দর স্বর্ণালি সন্ধ্যায়...

বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার আগে থেকেই জানতাম ক্যাম্পাস লাইফে পড়াশোনা বা অন্যান্য যত চাপই থাকুক না কেন, এখানে আছে ট্যুর, সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা, ক্লাস পার্টিসহ মজায় মজে থাকার অসংখ্য উপলক্ষ। এ রকম কিছু কিছু উৎসব ইতিমধ্যে পেয়েছি। তবে কালচারাল প্রোগ্রামগুলো যে খুব একটা উপভোগ করা হয়েছে, বলা যাবে না। ইচ্ছা থাকলে সুযোগ হয় না, সুযোগ হলে সময় হয় না। বরাবরই আমি আর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান যেন বিপরীত দুই মেরুতে থেকে গেছি সব সময়ই। তবে এবার তা হলো। নিজের ফ্যাকাল্টির অনুষ্ঠান, বন্ধুদের অনুষ্ঠান তথা আমাদের অনুষ্ঠান। শেষ মুহূর্তে ব্যাটে বলে মিলেও গেল। এবার আর মিস হলো না। সাক্ষী হলাম ক্যাম্পাস জীবনের অন্যতম স্মরণীয় এক সন্ধ্যার।

প্যাথলজি বিভাগের পোলট্রি প্যাথলজি কোর্সের আওতায় ক্যাম্পাসের বাইরে এক দিনের ভ্রমণ ছিল মাস তিনেক আগে। সেই ট্যুরের অংশ হিসেবে প্রবন্ধ উপস্থাপন, সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা আর নৈশভোজ। তবে আমাদের আগ্রহের কেন্দ্রে ছিল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানই, কারণ নিজেদের মতো করে পারফর্ম করার সুযোগ সচরাচর হয়ে ওঠে না সবার। তাই উদ্দীপনা কাজ করছিল সেটা ঘিরেই।

বিকেল চারটায় অনুষ্ঠান শুরুর কথা ছিল। তবে সবাই যেন নিজেকে সুন্দরভাবে সাজাতে একটু বেশি ব্যস্ত। কেউ পরেছে শাড়ি, কেউ পাঞ্জাবি, কেউ বা ফরমাল, সেমি ফরমাল। পাঁচটা নাগাদ মোটামুটি সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিউনিটি সেন্টারে চলে আসে। তখন শুরু হয় ভ্রমণ পর্যালোচনা ও প্রবন্ধ উপস্থাপন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ভেটেরিনারি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল আউয়াল, বাকৃবির উচ্চশিক্ষা ও গবেষণা কমিটির সমন্বয়ক অধ্যাপক ড. মো. আবু হাদী নূর আলী খান, প্যাথলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. মুনমুন পারভীন, অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক অধ্যাপক ড. প্রিয় মোহন দাস, পোলট্রি প্যাথলজি কোর্সের কো-অর্ডিনেটর অধ্যাপক ড. জাহান আরা বেগমসহ বিভাগের অন্য শিক্ষকরা। একে একে তারা বক্তব্য, পরামর্শ, দিকনির্দেশনা উপস্থাপন করেন।

এরপর সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা নাগাদ শুরু হয় কাঙ্ক্ষিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। অনেকগুলো ইভেন্ট ছিল এতে। শুরুটা হয় রুপাই আর সাদিয়ার একক অভিনয় দিয়ে। এরপর মেহেদী আসে নচিকেতার গান নিয়ে।

নেপালি বন্ধু রিতা ও মালয়েশিয়ান কাঞ্চনার সঙ্গে বাংলাদেশের হীরামনি তিন ভাষার তিন গানে একসঙ্গে নাচ পরিবেশন করে। গিটারের তালে দ্বৈতগান পরিবেশন করে ক্যাম্পাসের পরিচিত মুখ তীর্থজৎ আর পলক।

আমাদের অ্যাকাডেমিক লাইফের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে মিশে থাকা ভাইভা বোর্ডের প্রতীকী দৃশ্যকল্প উপস্থাপিত হয় একটি সম্মিলিত নাটকে। সাক্ষ্যজিত, বাপ্পি, সাদিয়া, লিখন, মৌরিন, অমিত ও শোয়েবের অংশগ্রহণে নাটকে ছিল আমাদের পরিচিত শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের চরিত্রগুলো ফুটিয়ে তোলার প্রয়াশ। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমদাদুল হক চৌধুরীর উপস্থিতি সাংস্কৃতিক সন্ধ্যায় বাড়তি মাত্রা যোগ করে।

অনুষ্ঠানের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ ছিল প্যাথলজি বিভাগের প্রবীণ শিক্ষক শ্রদ্ধেয় মকবুল হোসেন স্যারের গান পরিবেশনা। পাশাপাশি গান পরিবেশন করেন নবীন শিক্ষক ইসমাইল স্যারও।

এরপর ছেলেদের গ্রুপ ডান্সে পারফর্ম করে রাকিব, আপেল, সৌরভ, সাক্ষ্যজিতসহ বিদেশি বন্ধু জ্যাসপার সবাইকে মাতিয়ে তোলে। আয়োজনের শেষে আমাদের সিআর অন্তুর সঙ্গে কমেডি নাটকে অভিনয় করে অমিত, সাক্ষ্যজিত আর সৌরভ। সাংস্কৃতিক আয়োজনের পুরোটা জুড়ে উপস্থাপনা করে রাকিব রনি।

সবশেষে ছবি তোলা আর নৈশভোজ। সুন্দর মুহূর্তগুলো ফ্রেমবন্দি করতে বাদ যায়নি কেউ। প্রিয় বন্ধু, সহপাঠী, শিক্ষকদের সঙ্গেও তোলা ছবিগুলোই হয়ে থাকে স্মৃতি। রাতের খাবারের আয়োজনও ছিল চমৎকার। এজন্য প্যাথলজি বিভাগের প্রতি অবশ্যই কৃতজ্ঞতা জানাতে হবে।

অনুষ্ঠানটি আয়োজন করার জন্য সর্বাত্মক ভূমিকা পালন করা সিআর আসিফ সারওয়ার অন্তু বলেন, অনুষ্ঠানটি সুন্দরভাবে করার জন্য অনেক দিন ধরেই প্রস্তুতি চলছিল। দিনশেষে সবাই খুব উপভোগ করেছে- এটাই বড় প্রাপ্তি। পাশাপাশি ধন্যবাদ জানাই প্যাথলজি বিভাগের শিক্ষকদের ও আমার বন্ধুদের, আমাদের সব সময় সাপোর্ট দেওয়ার জন্য।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close