প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ২০ জুন, ২০২২

আসাম-মেঘালয়ে বন্যা

মৃত্যু ৪২, ত্রিপুরায় গৃহহীন ১০ হাজার

ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। আসাম ও মেঘালয়ের অবস্থা সবচেয়ে খারাপ। এই দুই রাজ্যে বন্যায় এখন পর্যন্ত ৪২ জন মারা গেছেন। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সংখ্যা প্রায় ৪০ লাখ। গতকাল রবিবার এনডিটিভির অনলাইন প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্র থেকে সব ধরনের সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

গত কয়েক দিনের টানা বর্ষণে আসাম-মেঘালয়ের নদণ্ডনদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। লোকালয়ে পানি ঢুকে জনজীবনকে বিপর্যস্ত করে তুলেছে। অনেকের ঘরে কোমর সমান পানি। উপায় না পেয়ে আশ্রয়কেন্দ্রের দিকে ছুটছেন বানভাসি মানুষ। পরিস্থিতি মোকাবিলায় সেনাবাহিনীর সহায়তা চাওয়া হয়েছে।

মৃতদের মধ্যে আসামের ২৪ এবং মেঘালয়ের ১৮ জন। রাজ্যের ৪ হাজারের বেশি গ্রাম প্লাবিত। দেড় লাখের বেশি মানুষকে ৫১৪টি আশ্রয় কেন্দ্রে নেওয়া হয়েছে। নষ্ট হয়ে গেছে আসামের অনেক সেতু ও সড়ক।

এদিকে ত্রিপুরায় গত শুক্রবার থেকে অব্যাহত অতিবর্ষণ। স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, এখনো কোনো মৃত্যুর খবর না পাওয়া গেলেও গৃহহীন হয়েছেন ১০ হাজার মানুষ।

দেশটির সরকারের সূত্র জানিয়েছে, গত ৬০ বছরের মধ্যে আগারতলায় তৃতীয় সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। লোকালয়ে পানি ঢুকে পড়ায় বিপাকে বহু মানুষ। আকস্মিক বন্যার কারণে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করেছে প্রশাসন।

এদিকে মেঘালয়ের মাওসিনরাম ও চেরাপুঞ্জিতেও ১৯৪০ সালের পর এবার সর্বোচ্চ বৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।

এদিকে, আসামের ৩৩ জেলার মধ্যে ৩২টিই এখন বন্যায় প্লাবিত। বন্যায় গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে অন্তত আটজনের মৃত্যু হয়েছে। আসামের সরকারি কর্মকর্তারা বলেন, বন্যায় রাজ্যের চার হাজারের বেশি গ্রাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আক্রান্ত প্রায় ৩১ লাখ মানুষ। তাদের মধ্যে দেড় লাখ মানুষ ৫১৪টি ত্রাণশিবিরে আশ্রয় নিয়েছে।

রাজ্যে ব্রহ্মপুত্র, সুবর্ণসিরি, মানসসহ পাঁচটি বড় নদণ্ডনদীর বিপৎসীমার ওপর দিয়ে বন্যার পানি প্রবাহিত হচ্ছে। আসামের পানিসম্পদমন্ত্রী পিজুশ হাজারিকা বলেন, ‘পরিস্থিতি খুবই খারাপ। লোকজনকে সাহায্য করার জন্য আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করছি। ভুক্তভোগী মানুষের কাছে পৌঁছানোর জন্য বন্যাকবলিত জেলাগুলোয় অস্থায়ী সেতু তৈরি করা হচ্ছে।’

বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে গত শনিবার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মার সঙ্গে ফোনে কথা বলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে রাজ্য সরকারকে সব ধরনের সহায়তার আশ্বাস দেন।

মেঘালয়ে বন্যায় কমপক্ষে পাঁচ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রাজ্যে বন্যা থেকে সৃষ্ট ভূমি ধসের কারণে দুটি প্রধান জাতীয় মহাসড়ক বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। রাজ্যে সবশেষ সপ্তাহে বন্যায় কমপক্ষে ১৮ জন মারা গেছেন। মারা যাওয়া ব্যক্তিদের পরিবারকে চার লাখ রুপি করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close