আন্তর্জাতিক ডেস্ক

  ২৯ ডিসেম্বর, ২০১৮

সৌদি মন্ত্রিসভায় ব্যাপক রদবদল

সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যাকান্ড ও এ নিয়ে আন্তর্জাতিক চাপের মুখে মন্ত্রিসভায় ব্যাপক রদবদলসহ প্রশাসন ও নিরাপত্তা বাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ পদে পরিবর্তন এনেছেন সৌদি বাদশা সালমান বিন আবদুলআজিজ আল সৌদ।

রাজকীয় ডিক্রির মাধ্যমে গত বৃহস্পতিবার এ রদবদলের ঘোষণা দেওয়া হয় বলে দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে জানিয়েছে বিবিসি, আরব নিউজ।

বাদশার ঘোষণায় সৌদি আরবের নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হয়েছেন ইব্রাহিম আল আসাফ। আগের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আদেল আল-জুবেইরকে তার প্রতিমন্ত্রী করা হয়েছে।

অক্টোবরে ইস্তাম্বুলের সৌদি কনস্যুলেটের ভেতর ওয়াশিংটন পোস্টের কলামনিস্ট জামাল খাশোগি হত্যাকান্ডের জেরেই আদেলের এ পদের অবনতি হলো বলে ধারণা বিশ্লেষকদের।

রাজপরিবারের বেশকিছু নীতির সমালোচক খাশোগি বিয়ের কাগজপত্র যোগাড়ে ২ অক্টোবর ওই কনস্যুলেটে গিয়েছিলেন।

রিয়াদ প্রথম দিকে খাশোগির ‘নিখোঁজ কান্ডের’ সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার কথা অস্বীকার করলেও পরে কনস্যুলেটের ভেতরই তিনি দুর্বৃত্তদের পরিকল্পিত হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছেন বলে স্বীকার করে নেয়। এর সঙ্গে সৌদি ক্রাউন প্রিন্স কিংবা রাজপরিবারের যোগসাজশের বিষয়টিও উড়িয়ে দেয় তারা। আদেল শুরু থেকেই খাশোগিকে নিয়ে পশ্চিমা গণমাধ্যমের ‘অতিরিক্ত বাড়াবাড়ির’ সমালোচনা করে আসছিলেন। গণমাধ্যমগুলো এ বিষয়ে ‘হিস্টিরিয়াগ্রস্তের মতো আচরণ করছে’ বলেও একবার অভিযোগ করেছিলেন তিনি। তার জায়গায় দায়িত্ব পাওয়া ইব্রাহিম আল আসাফ দীর্ঘদিন ধরে সৌদি আরবের অর্থমন্ত্রী ছিলেন। ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ গত বছর তাকেও রিটজ-কার্লটন হোটেলে গৃহবন্দি করে রেখেছিলেন বলে ব্রিটিশ দৈনিক ইন্ডিপেন্ডেন্ট জানিয়েছে। শিক্ষা ও গণমাধ্যমবিষয়ক দুই মন্ত্রণালয়েও বদল এনেছেন বাদশা সালমান। শিক্ষামন্ত্রী আহমেদ বিন মোহাম্মদ আল-ইসাকে সৌদি গণশিক্ষা পর্যালোচনা কমিশনের প্রধান ও রাজকীয় উপদেষ্টা পদে নিয়ে আসা হয়েছে।

উপদেষ্টা হয়েছেন গণমাধ্যমের দায়িত্বে থাকা মন্ত্রী আওয়াদ বিন সালেহ আল আওয়াদ।

হামাদ আল-শেখ হয়েছেন নতুন শিক্ষামন্ত্রী, গণমাধ্যমের দায়িত্ব গেছে তুর্কি আল-শাবানার হাতে। ইমরান আল-মুতাইরিকে দেওয়া হয়েছে সহকারী বাণিজ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব। গুরুত্বপূর্ণ ন্যাশনাল গার্ডের মন্ত্রী বানানো হয়েছে আবদুল্লাহ বিন বান্দারকে। মোহাম্মদ বিন সালেহ আল-গোফেইলিকে ন্যাশনাল গার্ডের উপদেষ্টার পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

সৌদ বিন আবদুল আজিজ হিলালের জায়গায় জননিরাপত্তা বিভাগের প্রধান করা হয়েছে খালেদ আল-হারবিকে। জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হয়েছেন মুসায়েদ আল আইবান।

তুর্কি আল আশেখকে জেনারেল এন্টারটেইনমেন্ট অথরিটির চেয়ারম্যান বানানো হয়েছে। তিনি আগে ছিলেন জেনারেল স্পোর্টস অথরিটির চেয়ারম্যান। এ পদে এসেছেন প্রিন্স আবদুল আজিজ বিন তুর্কি আল-ফয়সাল।

পর্যটন ও জাতীয় ঐতিহ্যবিষয়ক কমিশনের প্রেসিডেন্টের পদ থেকে প্রিন্স সুলতান বিন সালমানকে সরিয়ে বসানো হয়েছে আহমেদ আল-খতিবকে।

বাণিজ্য ও বিনিয়োগবিষয়কমন্ত্রী ড. মাজেদ আল-কাসাবিকে প্রদর্শনী ও সম্মেলনবিষয়ক কমিশনের অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

এর বাইরে লন্ডনে দেশটির রাষ্ট্রদূত প্রিন্স মোহাম্মদ বিন নাওয়াফ বিন আবদুল আজিজকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে বলেও আরব নিউজ জানিয়েছে। বেশ কয়েকটি অঞ্চলের গভর্নর ও ডেপুটি গভর্নর পদেও রদবদল হয়েছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close