আন্তর্জাতিক ডেস্ক

  ২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৭

রোহিঙ্গাদের মুছে ফেলতে চায় ফেসবুকও!

মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের জাতিগত নিধনের তথ্য যেসব অ্যাকাউন্ট থেকে তুলে ধরা হচ্ছে সেই অ্যাকাউন্ট ও পোস্টগুলোকে সরিয়ে দিচ্ছে ফেসবুক। মার্কিন দৈনিক ডেইলি বিস্টকে এই বিষয় নিয়ে কাজ করা কর্মীরা বলেছেন, তাদের অ্যাকাউন্ট বাতিল করা হচ্ছে বা পোস্ট সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

এদিকে ব্রিটিশ সংবাদপত্র গার্ডিয়ান ফেসবুকের এক মুখপাত্রের বরাতে বলা হয়, দি আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মিকে (আরসা) ফেসবুকের বিপজ্জনক সংগঠনের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। গত ২৫ আগস্ট আরসা রাখাইনের পুলিশের চেকপোস্টে হামলা চালানোর জেরে নতুন করে ক্লিয়ারেন্স অপারেশন শুরু করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। সেই সহিংসতার জেরে চার লাখ রোহিঙ্গা নাফ নদী পেরিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। গত বুধবার ডেইলি বিস্টকে ফেসবুকের মুখপাত্র বলেন, ‘আমরা ফেসবুককে এমন একটা জায়গা হিসেবে গড়ে তুলতে চাই যেখানে মানুষ দায়িত্বশীলতার সঙ্গে শেয়ার করব। নিরাপদ ও সম্মানজনক অভিজ্ঞতা ও মত প্রকাশের অধিকারের ভারসাম্যের জন্য আমরা কঠোর পরিশ্রম করছি। মিয়ানমারের পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে আমরা আমাদের নীতিমালা অনুযায়ী পরিস্থিতি পর্যালোচনা করছি।’

রহিম নামের এক অধিকারকর্মী বলেন, ‘ফেসবুকে রোহিঙ্গাদের বিষয়ে ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট থেকে পোস্ট দেওয়া হলে সেটি সরিয়ে দেওয়া হয়। পোস্ট রিমুভ করে ফেসবুক থেকে বার্তায় বলা হয় পোস্টটি আমাদের নীতিমালাবহির্ভূত। এমন আরো অসংখ্য অভিযোগ আসছে।’ মোহাম্মদ আনোয়ার নামের কুয়ালালামপুরভিত্তিক সাংবাদিক মোহাম্মদ আনোয়ার বলেন, ‘আমি মনে করি ফেসবুক গণহত্যাকারী মিয়ানমার সরকারের সঙ্গে মিলে মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে লঙ্ঘনের চেষ্টা করছে। ফেসবুক তার অসংখ্য পোস্ট সরিয়ে ফেলছে, যার অনেকগুলো শুধু টেক্সট ছিল।’ রোহিঙ্গা ব্লগার ডটকমের জন্য কাজ করা আনোয়ার বলেন, রাখাইন বিষয়ে তার প্রতিবেদনগুলো সেখানে থাকা ৪৫ জন প্রতিনিধি ও সিটিজেন জার্নালিস্টের মাধ্যমে খবর সংগ্রহ করা হয়।

মোহাম্মদ রফিক নামের আয়ারল্যান্ডভিত্তিক রোহিঙ্গা অধিকারকর্মী বলেন, গত ২৮ আগস্ট রোহিঙ্গাদের নিপীড়নের ছবি ও ভিডিও পোস্ট করার পরে ফেসবুক তার অ্যাকাউন্ট সাময়িকভাবে বাতিল করে। তিনি বলেন, যদিও এখন নতুন ছবি ও ভিডিও পাচ্ছি কিন্তু অ্যাকাউন্ট বাতিল হওয়ার ভয়ে সেগুলো পোস্ট করছি না।

সৌদি আরবভিত্তিক রোহিঙ্গাকর্মী জাফর আরাকানি আরাকন টাইমস নামের একটি ইউটিউব চ্যানেল পরিচালনা করেন। তিনি বলেন, ‘সংঘর্ষ শুরু হওয়ার পরেই আমরা ইউটিউব চ্যানেলে সেগুলো প্রচার করেছি এবং ফেসবুকের মাধ্যমে সেগুলো বহু মানুষের কাছে পৌঁছে গেছে। তার চ্যানেলের ফেসবুক অ্যাকাউন্টও ২৭ আগস্ট বাতিল করা হয়।’ বাংলাদেশে বাস করা রোহিঙ্গা নেতা কো কো লিন বলেন, গত ১২ সেপ্টেম্বর ফেসবুক অ্যাকাউন্ট সাসপেন্ড করায় তারা রাখাইনের সহিংসতা তুলে ধরতে পারছেন না।

এদিকে, ফেসবুক আরসাকে বিপজ্জনক তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার কথা স্বীকার করলেও রোহিঙ্গাদের অন্য সংগঠনের বিষয়ে কিছু বলতে অস্বীকৃতি জানায়। জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর রোহিঙ্গা নিপীড়নকে জাতিগত নির্মূলের ‘পাঠ্যবই উদাহরণ’ হিসেবে অভিহিত করেন। সেই মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ফেসবুক পেজে প্রায় ২৬ লাখ অনুসরণকারী রয়েছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist