চট্টগ্রাম ব্যুরো

  ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

জব্বারের বলীখেলা আজ

লালদিঘী ময়দানে বসছে তিন দিনের মেলা

চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী জব্বারের বলীখেলা আজ বৃহস্পতিবার। বলীখেলা এক ধরনের কুস্তি। বলীখেলার ১১৫তম আসর উপলক্ষে তিন দিনের মেলা বসেছে চট্টগ্রামের ঐতিহাসিক লালদিঘী ময়দানে। মেলায় গৃহসামগ্রী, শীতল পাটি, হাতপাখা, বাহারি খাবারের দোকানের পসরা সাজিয়ে বসছেন দোকানিরা। কুস্তি দেখতে দূরদূরান্ত থেকে হাজার হাজার মানুষের ভিড় জমে মেলায়।

দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কুস্তিগীররা সমবেত হয় ২৫ এপ্রিল বা ১২ বৈশাখ। একের পর এক কুস্তির লড়াই চলে। কৌশলে কে কাকে পরাজিত করবে- এ নেশায় মেতে ওঠেন কুস্তিগীররা। করোনার কারণে ২০২০ ও ২০২১ সালে বলীখেলা হয়নি। নানা জটিলতায় ২০২২ সালে জমেনি মেলা ও খেলা। ২০২৩ সালের বলীখেলাকে কেন্দ্র করে উৎসাহ-উদ্দীপনার কমতি ছিল না। তবে অতিরিক্ত গরমের কারণে এবারের বলীখেলা ও মেলা নিয়ে সংশয় থাকলেও এরই মধ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনা বাড়তে শুরু করেছে। খেলা এক দিন হলেও মেলা চলবে তিন দিন। ২০২৪ সালের চ্যাম্পিয়ন কে হবেন, তা দেখার জন্য আরো কিছু সময় অপেক্ষা করতে হবে।

অনেক ইতিহাসবিদ মনে করেন, ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে বাঙালি যুব সম্প্রদায়কে ঐক্যবদ্ধ করার প্রচেষ্টা চলে নানাভাবে। তারই ধারাবাহিকতায় চট্টগ্রাম শহরের বদরপতি এলাকার ধনাঢ্য ব্যবসায়ী আবদুল জব্বার সওদাগরের মাথায় কুস্তি প্রতিযোগিতার বিষয়টি আসে। তিনি ১৯০৯ সালে প্রথম কুস্তি প্রতিযোগিতা শুরু করেন। সেই থেকে প্রতি বছর ব্যবসায়ী আবদুল জব্বার কুস্তি প্রতিযোগিতার আয়োজন করতেন। বিজয়ীদের পুরস্কৃত করতেন। জব্বারের মৃত্যুর পর তার নামেই ‘জব্বারের বলীখলা’র গোড়াপত্তন ঘটে।

বলীখেলার চমকপ্রদ আসর হচ্ছে কুস্তি প্রতিযোগিতা। এ প্রতিযোগিতাকে ঘিরে বিভিন্ন জেলার যুবকরা আগে-ভাগে প্রস্ততি গ্রহণ করেন। তবে সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো, কক্সবাজার জেলার রামুর অধিবাসী দিদার বলীকে কেউ হারাতে পারতেন না। দিদার বলীকে এক নামে চেনেন চট্টগ্রামের মানুষ। গত ২০০২ সালে সিদ্দিক বলীর সঙ্গে যুগ্ম চ্যাম্পিয়ন হন দিদার বলী। পরে ২০০৪ থেকে ২০০৬ এবং ২০০৮ থেকে ২০০৯ সালে খাগড়াছড়ি মর্ম সিংয়ের সঙ্গে যৌথভাবে চ্যাম্পিয়ন হন দিদার বলী। তবে ২০০৭ সালে মর্ম সিংকে হারিয়ে এককভাবে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেন দিদার।

২০১০ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত দিদার বলী অসদাচরণের জন্য বহিষ্কৃত ছিলেন। ২০১৩ সালে মাঠে ফিরে এসে টানা ২০১৫ সাল পর্যন্ত চ্যাম্পিয়নশিপ ধরে রাখেন। ১০৮তম আসর অর্থাৎ ২০১৭ সালে ১৩ বারের মতো চ্যাম্পিয়ন দিদার বলী সবাইকে তাক লাগিয়ে দেন। ফাইনাল রাউন্ডে দিদার একই জেলার উকিয়ার শামসু বলীকে ১৭ মিনিটে ধরাশয়ী করেন। বলীখেলা আসলে দর্শকরা মাঠে দিদার বলীকে খুঁজে নেন। তবে খেলা শেষে তিনি অবসরের ঘোষণা দেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close