সাতক্ষীরা প্রতিনিধি
সন্ধানী লাইফ ইনস্যুরেন্স
ঘুষ ছাড়া তোলা যাচ্ছে না প্রাপ্য ৮০ হাজার টাকা
২০০৭ সালে সন্ধানী লাইফ ইনস্যুরেন্সে সঞ্চয় নিরাপত্তা বিমা খোলেন সাতক্ষীরার তালা সদরের বারুইহাটি গ্রামের চিত্ত কর্মকার। নমিনী করেন তার স্ত্রী সন্ধ্যা রানী কর্মকারকে। মারা গেছেন দুজনই। রেখে গেছেন এক ছেলে ও এক মেয়ে। তাদের মৃত্যুর পর ঘুষের টাকা দিতে না পারায় বাবার রেখে যাওয়া বিমার টাকাও এখন তুলতে পারছেন না সন্তানরা। তবে এই বিমা কোম্পানির সাতক্ষীরা শাখার ম্যানেজার ঘুষ চাওয়ার অভিযোগের কথা অস্বীকার করেছেন। এসব কথা জানিয়ে বারুইহাটি গ্রামের চিত্ত কর্মকারের ছেলে সুমন কর্মকার বলেন, ২০০৬ সালের ২৮ ডিসেম্বর ৮০ হাজার টাকা বিমা অংকের একটি সঞ্চয়ী নিরাপত্তা বিমা খোলেন বাবা। ২০০৭ সাল থেকে তিনবার ৬ হাজার ৯৩৪ টাকা, সাতবার ৭ হাজার ৪৬৬ টাকা ও একবার ৭ হাজার ৭৬৫ টাকা ১১ কিস্তিতে মোট ৮০ হাজার ৫৩০ টাকা জমা রেখেছেন। টাকা জমা প্রদানের সব রিসিভসহ সব কাগজপত্র রয়েছে। ১১ মাস আগে স্ট্রোক করে হঠাৎ বাবা মারা যান। বাবা মারা যাওয়ার পর অসুস্থ হয়ে পড়েন মা। ৫ মাস পর তিনিও মারা গেছেন।
এরপর বিমার টাকা উত্তোলনের জন্য তালার শাহপুরস্থ শাখা অফিসে গেলে শুরু হয় তালবাহানা। বিমার কাগজপত্র ঠিক নেই। এটা নেই সেটা নেই বলে বহুবার গড়িমসি করার পর কাগজপত্রে যখন ত্রুটি নেই তখন বলছেন ভিন্ন কথা। তালা শাখার কর্মকর্তা খলিলুর রহমান জানালেন, বাবার ৮০ হাজার টাকার রেখে যাওয়া বিমা অংকের টাকা তুলতে ৪০ হাজার টাকা দিতে হবে ঘুষ।
অসহায় সুমন কর্মকার বলেন, এরপর সন্ধানী লাইফ ইনস্যুরেন্সের সাতক্ষীরা শাখার ম্যানেজার ফেরদৌসী আলমকে জানালেও তিনি একই কথা জানালেন। তিনি বলেছেন, ৮০ হাজার টাকা তুলতে গেলে আপনাকে ৪০ হাজার টাকা দিতে হবে। আপনি পাবেন ৪০ হাজার টাকা আপনার কিছুই করা লাগবে না। তবে কাউকে বলা যাবে না। আর বেশি বাড়াবাড়ি করলে এক টাকাও পাবেন না।
এদিকে সঞ্চয়ী বিমার টাকা উত্তোলনে ঘুষ চাওয়াসহ এসব অভিযোগের বিষয়ে সন্ধানী লাইফ ইনস্যুরেন্সের তালা শাখার ম্যানেজার খলিলুর রহমানের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন কল রিসিভ করেননি। অন্যদিকে অভিযোগের বিষয়ে সাতক্ষীরা শাখার ম্যানেজার ফেরদৌসী আলম বলেন, এই বইটা আমাদের সাতক্ষীরা শাখার নয়। এটা পার্শ¦বর্তী খুলনা জেলার চুকনগর শাখার বই। ছেলেটিকে বলেছিলাম, টাকা তুলতে গেলে কিছু টাকা খরচ হবে। তবে বিমার টাকা জমা গ্রহণকারী সাতক্ষীরা শাখার ক্যাশিয়ার সাইফুল ইসলাম জানান, অসুস্থ হয়ে মারা গেলে কেউ বিমার মৃত্যু দাবি পায় না। তবে জমাকৃত টাকা ফেরত পাবে।
"