প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক
নারায়ণগঞ্জ-চট্টগ্রামে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত ৩
নারায়ণঞ্জ সদর উপজেলার আলীরটেক এলাকায় ও চট্টগ্রামের সীতাকু-ে র্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে তিনজন নিহত হয়েছেন, তাদের মধ্যে দুজন সন্দেহভাজন দুই নৌ ডাকাত ও একজনের বিরুদ্ধে ডজনখানেক মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছে র্যাব। তারা হলেন নারায়ণগঞ্জের সন্দেহভাজন নৌ ডাকাতের দল জিল্লুর বাহিনীর নেতা জিল্লুর এবং তার এক সহযোগী। আর সীতাকুন্ডে নিহত কালুর বিরুদ্ধে হত্যা, ধর্ষণ, ডাকাতিসহ বিভিন্ন অভিযোগে অন্তত ১২টি মামলা রয়েছে বলে র্যাবের ভাষ্য। গতকাল সোমবার ভোরে এ ঘটনা ঘটে।
নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, র্যাবের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে সন্দেহভাজন নৌ ডাকাতের দল জিল্লুর বাহিনীর নেতা জিল্লুর এবং তার এক সহযোগীর বিরুদ্ধে থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। গতকাল ভোরে আলীরটেক এলাকায় গোলাগুলির ওই ঘটনা ঘটে বলে র্যাব-১১-এর কোম্পানি কমান্ডার সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আলেপ উদ্দিনের ভাষ্য।
এএসপি আলেপ বলেন, আলীরটেক এলাকায় ধলেশ্বরী নদীতে জিল্লুর বাহিনী একটি জাহাজে ডাকাতির প্রস্তুতি নিচ্ছে খবর পেয়ে র্যাবের একটি দল অভিযান চালায়। র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে ডাকাতরা র্যাবকে লক্ষ্য করে গুলি করে। র্যাবও পাল্টা গুলি করে। একপর্যায়ে ‘নৌ ডাকাত সরদার’ জিল্লুরসহ দুই ডাকাত গুলিবিদ্ধ হন। বাকিরা পালিয়ে যান। পরে গুলিবিদ্ধদের উদ্ধার করে নারায়ণগঞ্জ সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন। গোলাগুলির ঘটনায় র্যাব-১১-এর ডিএডি ইন্সপেক্টর জহিরুল ইসলাম এবং সৈনিক জামাল আহত হয়েছেন বলে র্যাব কর্মকর্তা আলেপ জানান। ঘটনাস্থল থেকে গুলিসহ একটি বিদেশি পিস্তল ও বেশ কিছু দেশীয় অস্ত্র উদ্ধারের কথা জানিয়েছে র্যাব।
চট্টগ্রাম ব্যুরো জানায়, সীতাকু-ের জঙ্গল সলিমপুরে র্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত কালুর বিরুদ্ধে ডজনখানেক মামলা রয়েছে। র্যাব-৭ এর উপপরিচালক লেফটেন্যান্ট কমান্ডার আশেকুর রহমান বলেন, ‘তাদের একটি দল গভীর রাতে জঙ্গল সলিমপুরে টহলে গেলে সেখানে অবস্থান নিয়ে থাকা সন্ত্রাসীরা র্যাবকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। আত্মরক্ষার জন্য র্যাব সদস্যরাও পাল্টা গুলি চালান। দুই পক্ষের গোলাগুলির পর একজনকে সেখানে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। পরে আমরা খোঁজ নিয়ে জানতে পারি তার নাম কালু।’ ঘটনাস্থল থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, বিপুল পরিমাণ গুলি এবং ১৩টি দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানান লেফটেন্যান্ট কমান্ডার আশেকুর।
জঙ্গল সলিমপুরের কয়েকশ একর এলাকায় এক যুগ ধরে পাহাড় কেটে গড়ে তোলা হয়েছে ৪০ হাজার মানুষের অবৈধ বসতি। পুরো এলাকাকে ১১টি ‘সমাজে’ ভাগ করে ‘চট্টগ্রাম মহানগর ছিন্নমূল বস্তিবাসী সমন্বয় সংগ্রাম পরিষদ’ সেখানে গড়ে তুলেছে ‘দুর্ভেদ্য সা¤্রাজ্য’। ওই এলাকার ভেতরে রয়েছে ১২টি মসজিদ, চারটি মাদরাসা, তিনটি প্রাথমিক বিদ্যালয়, একটি উচ্চ বিদ্যালয়, তিনটি কেজি স্কুল, তিনটি এতিমখানা, ছয়টি কবরস্থান, পাঁচটি মন্দির, দুটি কেয়াং, একটি গির্জা, একটি শ্মশান এবং একটি কাঁচাবাজার।
সমিতিকে টাকা দিলে তবেই সেখানে বসবাসের অনুমতি মেলে। দুর্গম ওই এলাকায় প্রশাসনের খুব একটা প্রভাব না থাকায় গ্রেফতার এড়াতে সন্ত্রাসীরাও সেখানে গিয়ে আশ্রয় নেয় বলে স্থানীয়দের ভাষ্য। পাহাড়ে ওই অবৈধ বসতির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ২০০৪ সালে একাধিক পক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্ব দেখা দেয়। ২০১০ সালে স্থানীয় লাল বাদশা ও আলী আক্কাসের গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
২০১০ সালের ২৩ মে র্যাবের সঙ্গে কথিত ‘বন্ধুকযুদ্ধে’ নিহত হন আলী আক্কাস। পরে ছিন্নমূল বস্তিবাসী সংগ্রাম পরিষদের নেতৃত্বে আসেন বর্তমান সভাপতি গাজী সাদেকুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক কাজী মশিউর।
"